ডেস্ক রিপোর্টঃ
পরীক্ষায় জিপিএ-৫ না পেলেও জালিয়াতির মাধ্যমে নিজের ছেলেকে জিপিএ-৫ পাইয়ে দেন চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সাবেক সচিব নারায়ণ চন্দ্র নাথ। অভিযোগের তদন্তে ফল জালিয়াতি প্রমাণ হওয়ার পর নায়ায়ণের ছেলে নক্ষত্র দেবনাথের ২০২৩ সালের এইচএসসি পরীক্ষার সেই ফল বাতিল করে দিয়েছে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড।
বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) সকালে অনুষ্ঠিত বোর্ডের শৃঙ্খলা কমিটির সভায় নক্ষত্র দেবনাথের ফল বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়। পরে বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেন চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড সচিব প্রফেসর আমিরুল মোস্তফা।
তিনি বলেন, বোর্ডের শৃঙ্খলা কমিটির সভায় নক্ষত্র দেবনাথের ফল বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়। এর আগে ফল জালিয়াতির বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটি নক্ষত্র দেবনাথের ফল বাতিলের সুপারিশ করে বলে তিনি জানান।
জানা যায়, চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সচিব এবং পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দায়িত্বে থাকাকালে ২০২৩ সালে অনুষ্ঠিত এইচএসসি পরীক্ষায় নিজের ছেলেকে জিপিএ-৫ পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে নায়ারণ চন্দ্র নাথের বিরুদ্ধে। পরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশে করা তদন্তে ফল জালিয়াতির বিষয়টি প্রমাণ হয়।
জালিয়াতির অভিযোগ প্রমাণ হওয়ার পর গত ৯ জুলাই নারায়ণ চন্দ্র নাথকে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক হিসেবে বদলি করা হয়। ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর মাউশির পরিচালক পদ থেকে তাকে ওএসডি করা হয়। এরপর তদন্ত কমিটির সুপারিশে গত ১৫ সেপ্টেম্বর নারায়ণ চন্দ্র নাথের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলাসহ ব্যবস্থা নিতে মাউশির মহাপরিচালক ও চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেয় মন্ত্রণালয়।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালে অনুষ্ঠিত এইচএসসি পরীক্ষায় চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে অংশ নেন নক্ষত্র দেবনাথ। ২০২৩ সালের ২৬ নভেম্বর ফল ঘোষণার পর তার জিপিএ-৫ পাওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠে। সে সময় তার বাবা নারায়ণ চন্দ্র নাথ বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ছিলেন। অভিযোগ ওঠে, প্রভাব খাটিয়ে জিপিএ-৫ পাইয়ে দেওয়া হয়েছে। এরপর গণমাধ্যমে ফল জালিয়াতির বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। পরবর্তী সময়ে ডা. মাহফুজুর রহমান মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্তের সিদ্ধান্ত নেয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
মন্তব্য করুন
স্টাফ রিপোর্টারঃ
অন্তর্বতীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার একান্ত সচিব (পিএস) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন কুমিল্লার কৃতি সন্তান মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক। তিনি কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মহালক্ষী পাড়া উত্তর মোল্লা বাড়ির অধিবাসী।
মোজাম্মেল হক প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের একান্ত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। বর্তমানে তিনি বেইজিংস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের মিনিস্টার ও ডেপুটি চিফ অব মিশন হিসেবে কাজ করছেন। তিনি বিসিএস পররাষ্ট্র ক্যাডারের ২৫তম ব্যাচের সদস্য এবং মহাপরিচালক পদ-মর্যাদায় দায়িত্ব পালন করছেন।
মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষে ফরেন সার্ভিসে যোগ দেন। পেশাগত জীবনে তিনি চীনে উপ-রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করেছেন এবং মেক্সিকো ও যুদ্ধকবলিত লিবিয়ায় অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং দায়িত্বে কাজ করেছেন।
এছাড়া, তিনি হেডকোয়ার্টারে নবগঠিত দক্ষিণ আমেরিকা অনুবিভাগের প্রথম মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং রাষ্ট্রচার, সার্ক-বিমসটেক এবং আফ্রিকা অনুবিভাগে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করেছেন।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একটি আদেশে মোহাম্মদ মোজাম্মেল হককে এই গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। মন্ত্রণালয়ের এপিডি উইংয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব নিলুফা ইয়াসমিনের স্বাক্ষরিত আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে যে, মোহাম্মদ মোজাম্মেল হকের চাকরি এখন থেকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করা হচ্ছে।
মন্তব্য করুন
ডেস্ক রিপোর্ট:
বঙ্গবন্ধুসহ পরিবারের সদস্যদের হত্যাকাণ্ডের ছয় বছর পর তার কন্যা শেখ হাসিনা দেশে ফিরলে জিয়াউর রহমান তাকে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের পৈতৃক বাড়িতে ঢুকতে দেননি।কিন্তু তাকে গাড়ি-বাড়ি দিতে চেয়েছিলেন। সেই প্রস্তাব তিনি প্রত্যাখ্যান করেছেন। আজ শুক্রবার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে গণভবনে দেশে ফেরার ঘটনাপ্রবাহের স্মৃতিচারণে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
১৯৮১ সালের ১৭ মে স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের স্মৃতিচারণ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ঝড়-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে সেদিন সাধারণ মানুষ সেখানে গিয়েছিল। মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে বক্তব্য রাখলাম, সব থেকে বড় কথা হলো, আমি যখন যাই, তখন কামাল, জামাল, রোজি, খুকি সবাই বিমানবন্দরে ছিল। আমি যখন ফিরে আসলাম, হাজার হাজার মানুষ, কিন্তু আমি পেলাম বনানীতে সারি সারি কবর।’
তিনি বলেন, ‘৩২ নম্বরে আমরা মিলাদ পড়তে চাইলাম, আমাকে ঢুকতে দেয়নি জিয়াউর রহমান। উল্টো বলেছিল বাড়ি দেবে, গাড়ি দেবে, সব দেবে। বলেছিলাম, তার কাছ থেকে কিছু নেব না। খুনির কাছ থেকে আমি কিছু নিতে পারি না।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি যখন দিল্লিতে ছিলাম, সেখানে গিয়ে জিয়াউর রহমান আমার সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিল। তার স্ত্রীও দেখা করতে চেয়েছিল, আমি দেখা করি নাই। লন্ডনে যখন, তখনও দেখা করতে চেয়েছিল, আমরা দেখা করিনি। আমি যখন আসলাম ৩২ নম্বরে ঢুকতে দেবে না, উল্টো বাড়ি-গাড়ি সাধবে, সেটা তো আমার কাছে গ্রহণযোগ্য না।’
দেশে ফিরে কোথায় উঠবেন, থাকবেন সেটা জানতেন না উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘শুধু আমার পরার কাপড়-চোপড়, দুটো স্যুটকেস ও পুতুলকে (মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল) নিয়ে আমি চলে এসেছি। তারপর এই যাত্রা শুরু। আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতাকর্মী ও দলকে গোছানোর চেষ্টা করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নেই, কিন্তু অন্তত এইটুকু বলতে পারি, তার বাংলাদেশ কিছুটা হলেও যে আকাঙ্ক্ষা নিয়ে স্বাধীন করেছিলেন এবং যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে দেশ স্বাধীন করেছিলেন, কিছুটা হলেও সেটা আমরা বাস্তবায়ন করতে পেরেছি।’
তার নির্বাসিত সময়, দেশে ফেরার পরের পরিস্থিতি এবং আওয়ামী লীগ সংগঠন গোছানোর বিষয়গুলোর উল্লেখ করে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘সেদিন ফিরে এসেছিলাম। এত বড় দল পরিচালনা করার অভিজ্ঞতা ছিল না, ছাত্রলীগ করার সময় নেতা হওয়ার চেষ্টা করি নাই। দলের প্রয়োজনে যে দায়িত্ব দিয়েছে, সেটাই পালন করেছি। কিন্তু যখন এ দায়িত্ব (আওয়ামী লীগ সভাপতি) পেলাম, এটা বড় দায়িত্ব।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সবচেয়ে শক্তিশালী বড় সংগঠন। জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য দল আওয়ামী লীগ। প্রতিবার চক্রান্ত হয়, সেটা মোকাবিলা করে আমরা বেরিয়ে আসি। আমাদের তা ধরে রাখতে হবে। বাংলাদেশের মানুষ রক্ত দিয়ে যে অধিকারগুলো আদায় করেছিল, সেটা আমরা সমুন্নত করতে পেরেছি। কিন্তু আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘কী পেলাম, না পেলাম, সেই চিন্তা করিনি। ভবিষ্যৎ কী, সেই চিন্তাও করি না। চিন্তা করি দেশের মানুষের ভবিষ্যৎটা আরও সুন্দরভাবে গড়ে তুলে দিয়ে যাব। সেটাই আমাদের লক্ষ্য।’
দলীয় নেতাদের তিনি বলেন, ‘এটাই মনে রাখবেন, একটা দল করি শুধু নেতা হওয়া না, মানুষের জন্য কতটুকু করতে পারলাম, কী দিতে পারলাম, কী দিয়ে গেলাম, এটাই রাজনৈতিক মানুষের জীবনের বড় কথা। এই কথাটা মাথায় রাখতে পারলে দেশের মানুষের জন্য অনেক কিছুই করা যেতে পারে।’
সংগঠনকে শক্তিশালী করার তাগিদ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আর যেন যুদ্ধাপরাধী, খুনিরা বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে, এই ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে, বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে হবে।’
১৯৭৫-পরবর্তী যুদ্ধাপরাধীরা মন্ত্রী-এমপি-উপদেষ্টা হয়েছিল উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ যারা করছেন তারাই অপরাধী হয়ে গেল। যারা বিরোধিতা করেছিল, গণহত্যা করেছিল, তারাই ক্ষমতায়। ওই অবস্থায় দেশে ফিরেছিলাম। আমার তো কিছুই ছিল না। একটা বিশ্বাস ছিল, দেশের জনগণ ও আওয়ামী লীগের অগণিত নেতাকর্মী। এরপর লড়াই-সংগ্রাম করে এইটুকু বলতে পারি, পঞ্চমবারের মতো আওয়ামী লীগ ক্ষমতা এসেছে।’
আজকের বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মানুষের যদি রাজনৈতিক চিন্তা-চেতনা না থাকে, দেশপ্রেম না থাকে, সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় না থাকে, তাহলে সেটা এগোতে পারে না। পঁচাত্তরে যারা ক্ষমতায় ছিল, তারা নিজেদের ক্ষমতা কুক্ষিগত করার চেষ্টা করেছিল, দেশের কোনো উন্নতি করতে পারেনি। আজকে আমরা বলতে পারি, দেশটা বদলে যাওয়া, বদলাতে পেরেছি। সামনে আরও বদলাতে হবে। কারণ আমার বাবার একটাই স্বপ্ন ছিল, দেশটাকে গড়ার। আমাদের পরিকল্পনা সেটাই আছে।’
আওয়ামী লীগের সংগ্রামের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা, কারফিউ, প্রতি রাতে মার্শাল ল, দেশের মানুষের কোনো আশা নেই, শুধু হতাশা। এই হতাশ জাতিকে টেনে তোলা যায় না। তাদের মাঝে আশার আলো জাগাতে হয়, ভবিষ্যৎ দেখাতে হয়, উন্নত জীবনের চিত্র তুলে ধরতে হয়। তবেই মানুষকে নিয়ে কাজ করা যায়। আমরা সেটাই করার চেষ্টা করছি।’
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের আগে বিদেশে যাওয়ার ঘটনা বর্ণনা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আশা করেছিলাম আমরা খুব তাড়াতাড়ি ফিরে আসব। কিন্তু সেই ফিরে আসা আর হয়নি।’
আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি জানতাম না যে, আমাকে এত বড় একটা দায়িত্ব দেওয়া হবে। আমি কখনো এটা ভাবতে পারিনি।’
মন্তব্য করুন
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভের সময় দেশের বিভিন্নস্থানে দোকান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় অন্তত ৪৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) সকালে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব সচিব শফিকুল আলম এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, সোমবার বিভিন্ন শহরে গাজাবিরোধী বিক্ষোভের সময় সংঘটিত হিংস্র ও অবৈধ ঘটনার ওপর বাংলাদেশ পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে। এই হামলা এবং ভাঙচুর কাজ জন নিরাপত্তা এবং আইনের শাসনের প্রতি অপমানজনক।
এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্তত ৪৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে এবং আনুষ্ঠানিকভাবে দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আরো তদন্ত চলছে এবং এই নিন্দনীয় কাজের জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত মামলা দায়ের করা চলছে।
তিনি আরো বলেন, যারা বিচারের আওতায় আসবে তাদের দৃঢ়প্রতিজ্ঞ প্রচেষ্টায়, পুলিশ গত রাতে অপরাধীদের লক্ষ্য করে অভিযান চালিয়েছিল।
এ ছাড়া আমাদের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা আরো ব্যক্তি জড়িত শনাক্ত করার জন্য বিক্ষোভের সময় তোলা ভিডিও ফুটেজ কঠোরভাবে পর্যালোচনা করছে। যতক্ষণ পর্যন্ত এই সহিংসতা ও ধ্বংসের জন্য দায়ী তাদের গ্রেপ্তার না করা হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত এই অভিযান অব্যাহত থাকবে। আমরা এমন কাউকে অনুরোধ করছি যে তথ্য নিয়ে তদন্ত করতে সাহায্য করতে পারে। আমরা নিশ্চিত করতে পারি যে, যারা আমাদের সমাজের শান্তি ও স্থায়িত্বকে দুর্বল করতে চায় তাদের জবাবদিহি করা হবে।
মন্তব্য করুন
ডেস্ক রিপোর্ট:
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মোহাম্মদ ফাওজুল কবির খান জানিয়েছেন, দেশে বর্তমানে বছরে ৬ হাজার কোটি টাকার এলএনজি (লিকুইফাইড ন্যাচারাল গ্যাস) আমদানি করা হয়। তিনি শনিবার (৩০ নভেম্বর) দুপুরে ইকনোমিক রিপোটার্স ফোরামের (ইআরএফ) আয়োজিত “নবায়নযোগ্য শক্তিতে দ্রুত রূপান্তর: দেশীয় আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা” শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, এলএনজি আমদানি আরও কতটা বাড়ানো যেতে পারে? আমাদের একটি বাধ্যবাধকতা রয়েছে যে, নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে যেতে হবে। এটি ছাড়া আমাদের সামনে কোনো বিকল্প নেই। আমরা বলি যে, ১০ শতাংশ বিদ্যুৎ নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে পাওয়া যাবে, কিন্তু বাস্তবে যদি এটি বাস্তবায়িত হয়, তাহলে আমাদের অর্জন ২০ শতাংশেরও বেশি হবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের এনার্জি সমস্যা মূলত প্রাইমারি এনার্জির সমস্যা। বিদ্যুৎ না থাকলে গ্রাহক বুঝতে পারে, কিন্তু একটি শিল্প কারখানা যখন গ্যাস পায় না, তখন তা চোখে পড়ে না। কিন্তু তার উৎপাদন কমে যাওয়া দেখা যায় না। বর্তমানে আমাদের দৈনিক ৪ হাজার এমএমসিএফডি গ্যাস প্রয়োজন। আমাদের দেশীয় উৎপাদন এবং আমদানি মিলিয়ে বর্তমানে ৩ হাজারের কাছাকাছি গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে। এক হাজার এমএমসিএফডি গ্যাসের ঘাটতি রয়েছে, যা ক্রমাগত বাড়ছে কারণ আমাদের উৎপাদন কমছে। আমরা নতুন কূপ খননের মাধ্যমে আরও গ্যাস পাওয়ার চেষ্টা করছি।
এছাড়া, উপদেষ্টা আরও বলেন, সরকারি ক্রয় প্রক্রিয়া উন্মুক্ত করা হবে। এখন থেকে উপদেষ্টা বা সচিবকে চেনার প্রয়োজন নেই। যদি কারো দক্ষতা, আর্থিক সামর্থ্য ও অভিজ্ঞতা থাকে, তাহলে তিনি অফিসে বসেই ব্যবসা করতে পারবেন। কারো পরিচিতি প্রয়োজন হবে না। অর্থনৈতিক শৃঙ্খলা মুক্ত করে জনগণের অধিকার জনগণকে ফেরত দেয়ার লক্ষ্য আমাদের।
আলোচনা সভায় ইকনোমিক রিপোটার্স ফোরামের সভাপতি মোহাম্মদ রেফায়েত উল্লাহ মৃধা, সাধারণ সম্পাদক আবুল কাসেম, সিপিডির রিচার্স ডিরেক্টর খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড পার্টিসিপেটরি রিচার্সের (সিইপিআর) চেয়ারপারসন গৌরঙ্গ নন্দীসহ আরও অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন
ডেস্ক রিপোর্টঃ
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই কানুকে গলায় জুতার মালা পরিয়ে হেনস্থার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, চৌদ্দগ্রামে বীর প্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাইকে মানহানির ঘটনায় আমরা তীব্র নিন্দা জানাই। পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনকে ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, আব্দুল হাই হত্যাসহ ৯টি মামলার আসামি। আমরা সবাইকে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।
ভুক্তভোগী আব্দুল হাই কানুর অভিযোগ, রোববার দুপুরে ওষুধ কিনতে বাড়ির কাছে বাজারে গিয়েছিলেন। এ সময় স্থানীয় জামায়াত কর্মী আবুল হাসেমের নেতৃত্বে ১০-১২ জন তাকে ধরে জুতার মালা পরিয়ে দেন। সেই সঙ্গে তাকে দ্রুত এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়।
আবদুল হাই কানুকে লাঞ্ছিত করার এই ঘটনার ভিডিও গতরাতে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। তবে স্থানীয় জামায়াত দাবি করছে, আবুল হাসেমসহ ঘটনায় জড়িতরা জামায়াতের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়।
এদিকে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই কানুকে হেনস্তাকারীদের অবশ্যই আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
সোমবার সকালে বিজিবির সদরদপ্তরে বিজিবি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, কিছু সংখ্যক দুষ্কৃতিকারী সব জায়গায় রয়ে গেছে। যে দুষ্কৃতিকারীরা তাকে হেনস্তা করেছে, তাদেরকে অবশ্যই আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।
মন্তব্য করুন
ডেস্ক রিপোর্টঃ
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, তরুণরা সংখ্যায় বেশি। দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে তারা আগ্রহী। নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে তার মতামত নেওয়ার জন্য আমি মনে করি ভোটার হওয়ার বয়স ১৭ বছর নির্ধারিত হওয়া উচিত।
শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর ফার্মগেট কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজ আয়োজিত দুই দিনব্যাপী জাতীয় সংলাপ-২০২৪ এর উদ্বোধনী ভাষণে তিনি এ কথা বলেন। ভিডিও বার্তার মাধ্যমে তিনি এই ভাষণ দেন।
সংস্কারের বিষয়ে আমাদের মধ্যে ঐকমত্য প্রয়োজন উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, এ জন্য সর্বশেষ পর্যায়ে জাতীয় ঐকমত্য গঠন কমিশন গঠন করা হয়েছে। যেমন ধরুন-কোন বয়সে একজন নাগরিক ভোটার হতে পারবে তার জন্য নানা দেশে নানা বয়স নির্ধারণ করা আছে। নির্বাচন সংস্কার কমিশন নিশ্চয়ই এরকম একটা বয়স সুপারিশ করবে। সে বয়স আমার পছন্দ হতেও পারে না-ও হতে পারে। ধরুন আমি তরুণদের তাড়াতাড়ি ভোটার করার পক্ষে। যে যত তরুণ, পরিবর্তনের প্রতি তার আগ্রহ তত বেশি—এই হলো আমার যুক্তি। তরুণরা তাকে শক্তি যোগায়। তথ্যপ্রযুক্তির সঙ্গে তার গভীর সখ্যতা তাকে এই শক্তি যোগায়। তরুণরা সংখ্যায়ও বেশি। দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে তারা আগ্রহী। নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে তার মতামত নেওয়ার জন্য আমি মনে করি ভোটার হওয়ার বয়স ১৭ বছর নির্ধারিত হওয়া উচিত।
তিনি বলেন, নির্বাচন সংস্কার কমিশন কি ধরনের সুপারিশ করবেন তা আমার জানা নেই। কিন্তু দেশের বেশিরভাগ মানুষ যদি কমিশনের সুপারিশ করা বয়স পছন্দ করে ঐক্যমতে পৌঁছার জন্য আমি তা মেনে নেব।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সংস্কারের যে মহান দায়িত্ব ঐতিহাসিক কারণে আমাদের কাছে এসে গেছে এই দায়িত্ব আমাদের প্রত্যেককে যার যার অবস্থান থেকে পালন করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রতিটি রাজনৈতিক দল, সামাজিক, অর্থনৈতিক, ব্যবসায়িক এবং ধর্মীয় জনগোষ্ঠীর প্রত্যেককে দৃঢ়তার সঙ্গে সংস্কারের এই মহাযজ্ঞে আনন্দের সঙ্গে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান কেবল বাংলাদেশকে মুক্ত করেনি, আমাদের স্বপ্নকেও তুমুল সাহসী করে তুলেছে। বাকহীন বাংলাদেশ জোরালো কণ্ঠে আবার কথা বলার শক্তি ফিরে পেয়েছে। এই দৃঢ় কণ্ঠ ঐক্য গঠনে সোচ্চার হয়েছে। ঐক্য আমাদের মূল শক্তি।
জুলাই অভ্যুত্থান আমাদেরকে ঐতিহাসিক মাত্রায় বলিয়ান করেছে উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, গত পাঁচ মাসে এই ঐক্য আরও শক্তিশালী হয়েছে। গণঅভ্যুত্থানের বিরুদ্ধ শক্তি আমাদের মধ্যে ভাঙন সৃষ্টি করার ক্রমাগত প্রয়াস চালাতে থাকায় আমাদের ঐক্য আরও মজবুত হচ্ছে। এই ঐক্যের জোরেই এখন আমরা অসাধ্য সাধন করতে পারি। এখনই আমাদের সর্বোচ্চ সুযোগ। এমন অর্থনীতি গড়ে তুলতে হবে যেটা সকল নাগরিকের জন্য সম্পদের ও সুযোগের বৈষম্যহীনতার নিশ্চয়তা প্রদান করবে।
তিনি বলেন, যত নিম্ন আয়ের পরিবারেই জন্মগ্রহণ করুক না কেন- প্রতিটি নাগরিকের, তিনি নারী হোক, আর পুরুষই হোক তিনি যেন বিনা বাধায় তো বটেই বরং রাষ্ট্রের আয়োজনে তার সৃজনশীলতা প্রকাশ করে যে কোনো পর্যায়ের উদ্যোক্তা হতে পারেন বা তিনি যে ধরনের কর্মজীবন চান তাই বেছে নিতে পারবেন। এমন রাজনৈতিক ও রাষ্ট্রীয় পরিবেশ থাকবে যেখানে সংখ্যালঘু-সংখ্যাগুরু এই পরিচিতি অবান্তর হয়ে পড়বে। সবার একটিই পরিচয়-আমি বাংলাদেশের নাগরিক এবং রাষ্ট্র আমাকে আমার সকল অধিকার প্রদান করতে বাধ্য।
ড.ইউনূস আরও বলেন, রাষ্ট্রের কাছে এবং অন্য নাগরিকের কাছে আমার আর কোনো পরিচয় দেবার প্রয়োজন হবে না। যেখানে ব্যক্তি বন্দনার কোনো সুযোগ থাকবে না। দেশের ভেতরে বা বাইরে প্রভু-ভৃত্যের কোনো সম্পর্কের সুযোগ থাকবে না। আমরা বাংলাদেশের নাগরিক হওয়ার সুবাদে হবো বিশ্ব নাগরিক। দেশের মঙ্গল সাধন করা যেমন হবে আমাদের নাগরিক দায়িত্ব, তেমনি বিশ্বের মঙ্গল সাধন করাও আমাদের কর্তব্য, এ দায়িত্বও আমরা সমানভাবে পালন করব। আমাদের তরুণ-তরুণীরা দ্রুত এই দুই দায়িত্ব সমানভাবে পালন করার জন্য প্রস্তুতি নেবে।
ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে দীর্ঘ লড়াইয়ের যোদ্ধাদের স্মরণ করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে দীর্ঘ লড়াইয়ের সকল যোদ্ধাদের। বিশেষ করে অভিবাদন জানাই জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ হওয়া ছাত্রজনতাকে। যারা আহত হয়েছেন, চোখের দৃষ্টি হারিয়েছেন, যাদের অঙ্গহানি হয়েছে তাদের প্রতি আমাদের ঋণ শোধ হওয়ার নয়। নতুন বাংলাদেশ গঠনে তাদের প্রেরণা ও অবদান জাতি কখনো ভুলতে পারবে না।’
তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশের রূপান্তর পর্বে প্রবেশ করার অধিকার অর্জন করেছি। এই রূপান্তর দ্রুত সফলভাবে কার্যকর করার জন্য আমাদেরকে সকল শক্তি নিয়োজিত করার জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকতে হবে। পেছনে ফেরার কোনো সুযোগ আমাদের নেই। আমাদের এই কাঙ্ক্ষিত রূপান্তরের লক্ষ্য হবে সকল ধরনের বৈষম্য অবসানের রাজনৈতিক আয়োজন নিশ্চিত করা, এদেশে গণতান্ত্রিক ও নাগরিক সমতা ভিত্তিক একটি রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা। ন্যায়ভিত্তিক সমাজ নির্মাণ ছাড়া জুলাইয়ের শহীদদের আত্মদান অর্থবহ হতে পারে না।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ফ্যাসিবাদ বাংলাদেশকে আদর্শভিত্তিক সকল রকমের লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত করে গভীর অন্ধকারের দিকে আমাদেরকে নিয়ে গিয়েছিল। আমরা আবার প্রিয় বাংলাদেশকে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও ন্যায়বিচারের পথে ফেরানোর লক্ষ্যে কাজ করছি বলে তিনি উল্লেখ করেন।
ড. ইউনূস বলেন, ঐক্য, সংস্কার ও নির্বাচন- এই তিন লক্ষ্যের কোনোটিকে ছাড়া কোনোটি সফল হতে পারবে না। ঐক্যবিহীন সংস্কার কিংবা সংস্কারবিহীন নির্বাচন বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে পারবে না। পাশাপাশি আমরা ভুলতে পারি না যে, আমাদের ছাত্র-জনতা অটুট সাহসে শিশুহত্যাকারী ও পৈশাচিক ঘাতকদের মোকাবিলা করেছে। মানবতার বিরুদ্ধে এমন নিষ্ঠুরতাকে অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
সংস্কার ও নির্বাচনের প্রস্তুতি একই সঙ্গে চলতে থাকবে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচনের প্রস্তুতির কাজ মূলত নির্বাচন কমিশনের। কিন্তু সংস্কারের কাজে সকল নাগরিককে অংশগ্রহণ করতে হবে। যারা ভোটার তারা তো অংশগ্রহণ করবেনই, তার সঙ্গে যারা ভবিষ্যতে ভোটার হবেন তারাও সর্বাত্মকভাবে সংস্কারের কাজে নিজেদেরকে নিয়োজিত করুন।
তিনি বলেন, সংস্কারের কাজটা নাগরিকদের জন্য সহজ করতে আমরা ১৫টি সংস্কার কমিশন গঠন করে দিয়েছি। তাদের প্রতিবেদন আমরা জানুয়ারি মাসে পেয়ে যাব। প্রত্যেক সংস্কার কমিশনের দায়িত্ব হলো প্রধান বিকল্পগুলো চিহ্নিত করে তার মধ্য থেকে একটি বিকল্পকে জাতির জন্য সুপারিশ করা। যার যার ক্ষেত্রে সংস্কারের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ কিভাবে রচিত হবে তা বিভিন্ন পক্ষের মতামত নিয়ে সুপারিশমালা তৈরি করে দেওয়া। এতে নাগরিকদের পক্ষে মতামত স্থির করা অনেকটা সহজ হবে। তবে কমিশনের প্রতিবেদনে সুপারিশ করলেই আমাকে-আপনাকে তা মেনে নিতে হবে এমন কোনো কথা নেই।
সংস্কারের কাজ দ্রুত শেষ করতে চাই উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, সব ক’টা কমিশন মিলে আমাদের সামনে বহু সুপারিশ তুলে ধরবে। আমরা এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছি যে যার যাই মতামত হোক না কেন আমরা দ্রুত একটা ঐক্যমতে পৌঁছে সংস্কারের কাজগুলো করে ফেলতে চাই। নির্বাচনের পথে যেন এগিয়ে যেতে পারি সেই ব্যবস্থা করতে চাই। আপনাদের আজকের সংলাপ সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য এমন একটি প্রক্রিয়া তুলে ধরে আমাদের এই দায়িত্বকে সহজ এবং গতিময় করে দেবে আশা করছি।
সংলাপের প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে সকলের প্রতি আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টা।
মন্তব্য করুন
নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, "হয়তো আমরা আর বেশি দিন নেই। এরপর নির্বাচন হবে। চোরদের আর নির্বাচিত করবেন না। দয়া করে চোরদের ভোট দেবেন না।"
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সকালে ভোলার মনপুরা উপজেলার বিচ্ছিন্ন ঢালচরে নতুন লঞ্চঘাট উদ্বোধনের সময় তিনি এসব কথা বলেন।
এ উপলক্ষে আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. সাখাওয়াত আরও বলেন, "আপনারা সব দেখেছেন, সব জানেন। একজন ভালো মানুষকে নির্বাচিত করুন। যারা নিঃস্বার্থভাবে আপনাদের জন্য কাজ করে, তাদের ভোট দিন। বিগত সরকারের সময়ে বড় বড় প্রকল্প দেওয়া হলেও প্রত্যন্ত অঞ্চলে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। শুধু শহরের উন্নয়ন নয়, গ্রামের উন্নয়ন হলেই দেশ উন্নত হয়। বর্তমান সরকার বৈষম্যবিরোধী এবং গ্রামীণ সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে তা সমাধানে কাজ করছে। নদীপথের যোগাযোগ আরও সহজ করতে নতুন নতুন লঞ্চঘাট স্থাপন করা হবে।"
তিনি আরও বলেন, "ভোলা জেলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ মনপুরা চারপাশে নদীবেষ্টিত। এখান থেকে ঢাকায় যাওয়ার একমাত্র মাধ্যম লঞ্চ। নৌ-যোগাযোগ আরও সহজ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এছাড়া মনপুরার সঙ্গে জেলা শহরের সড়ক যোগাযোগ স্থাপনের জন্য পর্যায়ক্রমে ফেরি চালুর ব্যবস্থাও করা হবে।"
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক জ্বালানি সচিব মো. নাজিম উদ্দিন চৌধুরী, নৌ-পরিবহন উপদেষ্টার একান্ত সচিব মো. জাহিদুল ইসলাম, বিআইডব্লিউটিএ'র চেয়ারম্যান আরিফ আহমেদ মোস্তফা এবং বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নির্বাহী মো. নিজাম উদ্দিন সুজন চৌধুরী।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সভাপতি ও উপজেলা বিএনপি সভাপতি আলহাজ্ব সামস উদ্দিন বাচ্চু চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মাহবুবুল আলম শাহীন, উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর মাওলানা আমিমুল ইহসান জসিম, প্রেসক্লাব সভাপতি মো. অহিদুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক সীমান্ত হেলালসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
মন্তব্য করুন
আর্জেন্টিনা থেকে ৫২ হাজার ৫০০ টন গম নিয়ে এমভি ইন্ডিগো ওমেগা জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের (প্যাকেজ-০৩) মাধ্যমে আর্জেন্টিনা থেকে আমদানি করা ৫২ হাজার ৫০০ টন গম নিয়ে এমভি ইন্ডিগো ওমেগা জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে।
গমের নমুনা পরীক্ষা শেষে খালাসের কার্যক্রম আজই শুরু হবে। এ জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে খাদ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
এর আগে, গত ৫ ফেব্রুয়ারি আর্জেন্টিনা থেকে আমদানি করা ৫০ হাজার ২০০ মেট্রিক টন গম বাংলাদেশে এসেছিল।
মন্তব্য করুন
ফিলিস্তিনের গাজাবাসীর প্রতি সংহতি জানিয়ে ‘মার্চ ফর গাজা’ শীর্ষক এক বিশাল সমাবেশের আয়োজন করা হয় ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। শনিবার (১২ এপ্রিল) বেলা ৩টায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সকাল থেকেই ফিলিস্তিনের পতাকা ও প্রতিবাদী প্ল্যাকার্ড হাতে হাজারো মানুষ উদ্যানে জড়ো হতে শুরু করেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই উপচে পড়ে ভিড়ে পরিণত হয় ঐতিহাসিক এই মাঠ।
সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছোট-বড় মিছিল এসে একত্রিত হতে থাকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। কেউ আসছেন শাহবাগ থেকে, কেউ দোয়েল চত্বর থেকে, আবার কেউ নীলক্ষেতের দিক থেকে। উদ্যানের প্রতিটি গেটে স্বেচ্ছাসেবকরা জনস্রোতকে সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনার চেষ্টা করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি ও এর আশেপাশের এলাকায় ফুটপাতের দোকানগুলোতে দেশীয় পতাকার পাশাপাশি ফিলিস্তিনের পতাকা সাজিয়ে রাখা হয়। দল-মত, বয়স ও পেশার মানুষ এই সমাবেশে অংশ নিয়ে ফিলিস্তিনিদের পাশাপাশি মানবতার জয়গান করেন।
একজন অংশগ্রহণকারী বলেন, “ফিলিস্তিনে নিরীহ মুসলমানদের ওপর ইসরাইল যে নৃশংসতা চালাচ্ছে, তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমরা তাদের পাশে দাঁড়াতে এখানে এসেছি।”
আয়োজকদের দাবি, গাজায় ইসরাইলের নির্মম হামলা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে জনমত গঠন ও মানবিক সহমর্মিতা বাড়াতেই এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। বেলা ৩টা থেকে মাগরিব পর্যন্ত সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
মন্তব্য করুন
সাবেক ৪ সংসদ সদস্যের পরিবারসহ দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আদালত। বুধবার ঢাকার মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন এই নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।
তারা হলেন- শাহীন চাকলাদার ও তার পরিবার, শওকত হাচানুর রহমান ও তার স্ত্রী এবং আবুল কালাম আজাদ ও তার স্ত্রী। এছাড়া মঙ্গলবার মোস্তাফিজ ও তার স্ত্রীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেয় আদালত।
দুদকের পরিদর্শক আমির হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, দুর্নীতি দমন কমিশনের ভিন্ন ভিন্ন আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।
শাহীন চাকলাদারের পরিবার
যশোর-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাহীন চাকলাদার, তার স্ত্রী ফারহানা জাহান মালা, দুই মেয়ে সামিয়া জাহান অন্তরা ও মাঈসা জাহান অহনা এবং ছেলে জাবীর চাকলাদারের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। দুদকের উপপরিচালক মো. শফি উল্লাহ তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন।
আবেদনে বলা হয়েছে, শাহিন চাকলাদারের বিরুদ্ধে টেন্ডারবাজি, সন্ত্রাসী কার্যকলাপ, ক্ষমতার অপব্যবহার, নানা অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করে নিজ নামে ও পরিবারের সদস্যদের নামে শত শত কোটি টাকা জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগের অনুসন্ধান চলমান রয়েছে। অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা দেশ ছেড়ে বিদেশে পলায়ন করতে পারেন বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়। অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তাদের বিদেশ গমন রহিত করা একান্ত প্রয়োজন।
দুদকের পক্ষে প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে শুনানি করেন।
হাচানুর ও তার স্ত্রী
বরগুনা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমান, তার স্ত্রী রওনক রহমানের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। দুদকের উপপরিচালক মো. সাইদুজ্জামান নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার আবেদন করেন।
হাচানুর রহমানের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞার আবেদনে বলা হয়েছে, বরগুনা-২ আসনের সংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমান রিমনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, জমি দখল, ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাৎপূর্বক নিজ নামে ও পরিবারের সদস্যদের নামে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগের অনুসন্ধান চলমান রয়েছে।
গোপন ও বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, শওকত হাচানুর রহমান রিমন ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে দেশের বিভিন্ন স্থানে (বরিশালের আগুরপুর রোড, রুপাতলী, জাগুয়া, দক্ষিণ আলেকান্দায়; বরগুনার কাঠালতলী, মাদারতলী, রায়হানপুর, গহরপুর, চরলাঠিমারা; ঢাকার নলটোনা, নতুন শহর এলাকা ছাড়াও অন্যান্য এলাকায়) এবং দেশের বাইরে-যুক্তরাষ্ট্র, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সিঙ্গাপুর, কানাডাসহ অন্যান্য দেশে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ রয়েছে। অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি শওকত হাচানুর রহমান রিমন ও তার স্ত্রী রওনক রহমান দেশ ছেড়ে পালিয়ে গিয়ে তাদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ হস্তান্তর করার চেষ্টা করছেন বলে অনুসন্ধানকালে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়। তারা বিদেশে পালিয়ে গেলে অনুসন্ধান কাজ ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই তাদের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা একান্ত প্রয়োজন।
দুদকের বিশেষ পিপি রেজাউল করিম নিষেধাজ্ঞার আবেদন শুনানি করেন।
আবুল কালাম আজাদ ও তার স্ত্রী
গাইবান্ধা-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ ও তার স্ত্রী রুহুল আরা রহিমের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। দুদকের উপপরিচালক মো. সাইদুজ্জামান তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন।
আবেদনে বলা হয়, গাইবান্ধা-৪ আসনের সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করে নিজ নামে ও পরিবারের সদস্যদের নামে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানাধীন রয়েছে। আবুল কালাম আজাদ গোবিন্দগঞ্জে আনুমানিক ১০০ কোটি টাকার জমি, ৬ তলা বাড়িসহ ৬টি ফ্ল্যাট, বগুড়া শহরের জলেশ্বরী তলায় ২টি বাড়ি, ঢাকার মোহাম্মদপুরে ১টি বাড়ি, গাজীপুরে গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিসহ ২০টির মতো বাস ও ট্রাক ক্রয় করেছেন বলে গোপন সূত্রে জানা যায়।
আবুল কালাম আজাদ এবং তার স্ত্রী মোছা. রুহুল আরা রহিম অবৈধভাবে অর্জিত সম্পত্তি হস্তান্তর করে বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা বিদেশে পালিয়ে গেলে অনুসন্ধান কাজ ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
দুদকের পক্ষে বিশেষ পিপি রেজাউল করিম রেজা তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে শুনানি করেন।
মোস্তাফিজ ও তার স্ত্রী
চট্টগ্রাম-১৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী ও তার স্ত্রী শাহীন আক্তার চৌধুরীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। গতকাল মঙ্গলবার এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।
দুদকের আবেদনে বলা হয়, অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, নানা অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করে নিজ নামে ও পরিবারের সদস্যদের নামে শত শত কোটি টাকা জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগটির অনুসন্ধান চলমান রয়েছে। অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা দেশ ছেড়ে বিদেশে পলায়ন করতে পারেন বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।
মন্তব্য করুন