আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে জরুরিভিত্তিতে মানবিক সহায়তার প্রবেশাধিকার বাড়ানোর জন্য ইসরায়েলকে ৩০ দিনের সময় বেঁধে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
আর তা না হলে ইসরায়েলকে দেওয়া মার্কিন সরকারের কিছু সামরিক সহায়তায় কাটছাঁট করা হবে বলেও সতর্ক করে দিয়েছে ওয়াশিংটন। বিষয়টি জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ইসরায়েলি সরকারকে ইতোমধ্যেই একটি চিঠিও দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ইসরায়েলকে চিঠিটি পাঠানো হয় গত রোববার। এই চিঠিটি মার্কিন সরকারের পক্ষ থেকে তার মিত্র দেশটির কাছে এখন পর্যন্ত জ্ঞাত সবচেয়ে কঠোর লিখিত সতর্কতা।
এছাড়া উত্তর গাজায় ইসরায়েলের নতুন আক্রমণের মধ্যে মার্কিন চিঠি হাতে পেল ইসরায়েল। এই আক্রমণে বিপুল সংখ্যক বেসামরিক হতাহতের ঘটনা ঘটছে বলে জানা গেছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, গাজায় অবনতিশীল মানবিক পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের গভীর উদ্বেগ রয়েছে। এতে আরও বলা হয়েছে, ইসরায়েল গত মাসে গাজার উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের মধ্যে মানবিক সহয়িতার পরিবহনের প্রায় ৯০ শতাংশকেই বাধা দিয়েছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া এই চিঠিটি ইসরায়েল পর্যালোচনা করছে বলে একজন ইসরায়েলি কর্মকর্তা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ইসরায়েল “এই বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে নিচ্ছে” এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাথে “দেশটির উত্থাপিত উদ্বেগের সমাধান” করতে চায়।
ইসরায়েল এর আগে বলেছে, তারা গাজার উত্তরে হামাস যোদ্ধাদের লক্ষ্যবস্তু করে হামলা চালাচ্ছে এবং মানবিক সাহায্যের প্রবেশ বন্ধ করছে না।
এছাড়া গাজায় ক্রসিং পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ইসরায়েলি সামরিক সংস্থা কোগাট গত সোমবার বলেছে, বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির সাহায্য বহনকারী ৩০টি লরি ইরেজ ক্রসিং দিয়ে উত্তর গাজায় প্রবেশ করেছে।
এর আগে জাতিসংঘ বলেছিল, উত্তরে কোনও ধরনের খাদ্য সহায়তা বিতরণ করা হয়নি এবং সেখানে ৪ লাখ ফিলিস্তিনির বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা ও অন্যান্য সরঞ্জাম শেষ হয়ে গেছে।
টানা এক বছরেরও বেশি সময় ধরে গাজায় আগ্রাসন চালাচ্ছে ইসরায়েল। যুক্তরাষ্ট্র এখন পর্যন্ত ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় অস্ত্র সরবরাহকারী এবং ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী গত এক বছরে গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে আগ্রাসন অব্যাহত রাখতে মার্কিন সরবরাহকৃত বিমান, গাইডেড বোমা, ক্ষেপণাস্ত্র এবং শেলগুলোর ওপর অনেক বেশি নির্ভর করেছে।
এদিকে ইসরায়েল সরকারের কাছে পাঠানো যুক্তরাষ্ট্রের এই চিঠির বিষয়বস্তু মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টও নিশ্চিত করেছে। এই চিঠিতে সই করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন।
এতে বলা হয়েছে, “আমরা এখন গাজার অবনতিশীল মানবিক পরিস্থিতির বিষয়ে মার্কিন সরকারের গভীর উদ্বেগকে জানানোর জন্য লিখছি এবং এই পরিস্থিতি বদলের জন্য এই মাসেই আপনার সরকারের কাছ থেকে জরুরি এবং টেকসই পদক্ষেপ চাই।”
এতে আরও বলা হয়েছে, এলাকা খালি করার ইসরায়েলি আদেশ ১৭ লাখ লোককে সংকীর্ণ উপকূলীয় আল-মাওয়াসি এলাকায় বাধ্য করেছে, সেখানে তারা চরম ভিড়ের কারণে “মারাত্মক সংক্রামনের উচ্চ ঝুঁকিতে” রয়েছেন এবং মানবিক সংস্থাগুলো রিপোর্ট করেছে, তাদের বেঁচে থাকার মতো প্রয়োজন মেটানো যাচ্ছে না।
মন্তব্য করুন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
গাজায় যুদ্ধ ইস্যুতে গ্রেফতার আতঙ্কে ভুগছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এরই মধ্যে এই গ্রেফতারি পরোয়ানা ঠেকাতে ব্যাপক দৌঁড়ঝাপ শুরু করেছেন তিনি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছেন নেতানিয়াহু। আমেরিকাও বিষয়টি প্রতিরোধে নানা তৎপরতা শুরু করেছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) সংশ্লিষ্ট বিচারকদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার কথাও ভাবছে দেশটি।
এ পরিস্থিতিতে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষকেও টেনে আনল ইসরাইল। দুই ইসরাইলি এবং মার্কিন কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছ, ইসরাইলি সরকার বাইডেন প্রশাসনকে সতর্ক করেছে যে, যদি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ইসরাইলি নেতাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে, তাহলে তারা ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া শুরু করবে, যা তাদেরকে পতনের দিকে নিয়ে যাবে।
সম্প্রতি ইসরাইলি গণমাধ্যমের খবরে জানা যায়, আইসিসি ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, সামরিক বাহিনীর প্রধান হার্জি হালেভি এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
নেতানিয়াহু বলেছেন, যদি গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয় তবে এটি ‘ঐতিহাসিক পর্যায়ের একটি কেলেঙ্কারি’ হবে।
মার্কিন গণমাধ্যম অ্যাক্সিওস প্রতিবেদনে দাবি করেছে, ইসরাইলি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হলে, তারা ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের কর রাজস্ব স্থানান্তর বন্ধ করে দেবে। আর এমন পদক্ষেপ নেবে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষকে দেউলিয়া করে দেবে।
প্রসঙ্গত, ইসরাইল ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের পক্ষে ট্যাক্স সংগ্রহ করে এবং ১৯৯৪ সালে অসলো চুক্তির অধীনে তাদেরকে মাসিক ভিত্তিতে তা স্থানান্তর করে।
মন্তব্য করুন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
অবশেষে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে নরওয়ে, আয়ারল্যান্ড ও স্পেন। দেশগুলোর নেতারা জানিয়েছেন, আগামী সপ্তাহে আনুষ্ঠানিকভাবে এই স্বীকৃতি দেওয়া হবে। মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ফেরাতেই তাদের এই উদ্যোগ। তবে দেশ তিনটির এমন পদক্ষেপে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইসরায়েল।
নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী জোনাস গহর স্টোর বুধবার (২২ মে) বলেছেন, দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান ইসরায়েলের সর্বোত্তম স্বার্থ ছিল। আগামী ২৮ মের মধ্যে এই স্বীকৃতি আসতে পারে।
নরওয়ের ঘোষণার পরপরই আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী সাইমন হ্যারিস বলেন, তার দেশও ফিলিস্তিনকে একটি রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেবে।
হ্যারিস বলেন, আয়ারল্যান্ড, নরওয়ে ও স্পেন ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে। আমরা সবাই এখন এই সিদ্ধান্ত কার্যকরে জাতীয়ভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।
স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ বুধবার বলেছেন, দেশটির মন্ত্রী পরিষদও ২৮ মে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেবে।
কিছুদিন ধরেই ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য আয়ারল্যান্ড, স্পেন, স্লোভেনিয়া ও মাল্টা। সমন্বিতভাবে এই ঘোষণা দেওয়ার ইঙ্গিত দেয় তারা। দেশগুলোর মতে, মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তির জন্য দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান অপরিহার্য।
মন্তব্য করুন
যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট ভবন একটি ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ। শতাব্দীপ্রাচীন এই ভবন বহু ইতিহাসের সাক্ষী। কিন্তু সেই ভবনই আর কতদিন রক্ষা করা যাবে, তা নিয়ে এমনপিদের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে।
হাউস অব কমন্সে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি যে রিপোর্ট দিয়েছে তাতে বলা হয়েছে, ভবনের বিভিন্ন জায়গা থেকে পানি চুঁইয়ে পড়ছে। বিভিন্ন জায়গায় ফাটল দেখা গেছে। আগুন লাগলে তা নেভানোর মতো যথেষ্ট ব্যবস্থা নেই। ফলে বড় কোনও বিপর্যয় ঘটলে ভবনটি ভেঙে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
আর তাই অবিলম্বে এই ভবনের সংস্কার প্রয়োজন বলে রিপোর্টে বলা হয়েছে।
আইনপ্রণেতাদের বক্তব্য, ভবনটির এখন যা অবস্থা তা সংস্কার করতে বহু অর্থ ব্যয় হবে। কিন্তু আরও সময় ব্যয় করলে খরচ বহু গুণ বেড়ে যাবে। যা করদাতাদের টাকা থেকেই নিতে হবে। এছাড়া আরও অপেক্ষা করলে ভবনটি সংস্কারের অযোগ্যও হয়ে পড়তে পারে।
এখনও পর্যন্ত যা কাজ হয়েছে তা কার্যত ধর তক্তা মার পেরেক গোছের বলে জানিয়েছে পার্লামেন্টের কমিটি। তাতেই সপ্তাহে দুই মিলিয়ন পাউন্ড করে খরচ হয়েছে।
ওয়েস্টমিনস্টার রাজপ্রাসাদটিকেই যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এর আগেও এর সংস্কার নিয়ে বার বার আলোচনা হয়েছে। কিন্তু কখনোই সামগ্রিক সংস্কারের ব্যবস্থা হয়নি। আলোচনাও খুব ধীর গতিতে এগিয়েছে।
২০১৮ সালে এমপিরা ভোটাভুটির মাধ্যমে ঠিক করেছিলেন, ২০২০ সালে ভবনটি কিছুদিনের জন্য খালি করে দেওয়া হবে। সে সময় সংস্কারের কাজ করা যাবে। কিন্তু ২০২০ সালে সকলে পার্লামেন্ট ভবন ছেড়ে যেতে চাননি। ফলে সংস্কারও সম্ভব হয়নি।
যারা ভবনটি ছেড়ে যেতে চাননি, তারা বার বার বলেছেন, পার্লামেন্ট ঠিকমতো সংস্কার করতে হলে বহু বছর সময় লেগে যাবে। এতদিন ওই ভবন ছেড়ে অন্যত্র পার্লামেন্ট চালানো সম্ভব নয়।
২০১৬ সাল থেকে পার্লামেন্ট ভবনে অন্তত ৪৪টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। যার ফলে এখন ২৪ ঘণ্টা দমকলকর্মীরা ভবনটি পাহারা দেন। ১৮৩৪ সালে অগ্নিকাণ্ডেই নষ্ট হয়েছিল পুরোনো ওয়েস্টমিনস্টার প্রাসাদ। এরপর চার্লস ব্যারি নামক এক স্থপতি নতুন ভবনটি তৈরি করেন। নিও গথিক স্থাপত্যের সেই ভবনই এখন যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট।
মন্তব্য করুন
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
সিরিয়ায় জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) ৭৫টি ঘাঁটিতে বিমান হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। স্থানীয় সময় রোববার (৮ ডিসেম্বর) এসব হামলা চালানো হয়। মার্কিন সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, আইএসের শীর্ষ নেতা, সহযোগী এবং বিভিন্ন ক্যাম্প লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়েছে।
সামাজিক মাধ্যমে এক পোস্টে ইউএস সেন্ট্রাল কমান্ড জানিয়েছে, বি-৫২, এফ-১৫ এবং এ-১০ সহ একাধিক মার্কিন বিমান ৭৫টিরও বেশি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে।
সিরিয়ার স্বৈরশাসক বাশার আল-আসাদ দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর দেশটির বিভিন্ন স্থানে হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল এবং যুক্তরাষ্ট্র।
দেশটিতে বিদ্রোহী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর অভিযানের মুখে ব্যক্তিগত বিমানে করে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন বাশার আল-আসাদ। বিশ্লেষকরা বলছেন, এর মাধ্যমেই সিরিয়ায় আসাদ পরিবারের ৫৩ বছরের শাসনামলের অবসান হলো।
২০০০ সালের জুলাই মাসে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন বাশার আল-আসাদ। একই সময়ে তিনি বাথ পার্টির নেতা ও সামরিক বাহিনীর প্রধানের দায়িত্বও নেন। তবে তার শাসনের এক দশক পর অর্থাৎ ২০১১ সালে সিরিয়ার জনগণ গণতন্ত্রের দাবিতে আন্দোলনে মাঠে নামলে তিনি কঠোর দমননীতি গ্রহণ করেন।
২০০৩ সালের ইরাক যুদ্ধকে ঘিরে বাশার আল-আসাদের সঙ্গে পশ্চিমাদের সম্পর্কের অবনতি হয়। তিনি ইরাকে মার্কিন আগ্রাসনের বিরোধিতা করেছিলেন। সম্ভবত তার আশংকা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর পরবর্তী টার্গেট সিরিয়া হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্র সেসময় ইরাকে তাদের বিরোধীদের কাছে অস্ত্র চোরাচালানে সহায়তার জন্য দামেস্ককে দায়ী করছিল। ২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়। এরপর ২০০৫ সালে লেবাননের প্রধানমন্ত্রী রফিক হারিরি বৈরুতে বিস্ফোরণে নিহত হলে এ ঘটনার জন্য অনেকে সিরিয়া ও তার সহযোগীদেরই দায়ী করে।
এদিকে ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ ও তার পরিবার রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে পৌঁছেছেন বলে জানা গেছে। ক্রেমলিনের সূত্র উল্লেখ করে দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা তাস এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। খবরে বলা হয়েছে, মানবিক দিক বিবেচনা করে আসাদ ও তার পরিবারকে রাজনৈতিক আশ্রয় দিয়েছে রাশিয়া।
ক্রেমলিনের একটি সূত্র বলেছে, রাশিয়া সবসময় সিরিয়ার সংকটের একটি রাজনৈতিক সমাধানের পক্ষে ছিল। আমরা জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে আলোচনার পুনরারম্ভের জন্য জোর দিচ্ছি।
তাসের খবরে আরও বলা হয়েছে, রাশিয়ার কর্মকর্তারা সিরিয়ার সশস্ত্র বিরোধী গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। বিদ্রোহীরা সিরিয়ায় অবস্থিত রাশিয়ার সামরিক ঘাঁটি ও কূটনৈতিক মিশনের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিয়েছে।
এদিকে, সিরিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠকের আহ্বান করেছে রাশিয়া। জাতিসংঘে দেশটির প্রথম উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি দিমিত্রি পলিয়ানস্কি জানান, সোমবার এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, কূটনৈতিক সূত্রগুলো বৈঠকের সময় নিশ্চিত করেছে। পলিয়ানস্কি বলেন, আসাদ সরকারের পতনের গভীরতা এবং এর প্রভাব রাশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের জন্য কী হতে পারে, তা এখনই বলা কঠিন।
মন্তব্য করুন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নাগরিক ও কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ইরান। আজ বৃহস্পতিবার ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের বিপক্ষে গিয়ে ইসরায়েলকে সমর্থন করায় তাদের ওপর এই নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়।
ইরান জানিয়েছে সাত মার্কিন নাগরিক আছে তাদের নিষেধাজ্ঞার তালিকায়। এর মধ্যে আছেন জেনারেল ব্রায়ান পি ফেন্টন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ অভিযানের কমান্ডার হিসেবে রয়েছেন। আছেন ভাইস অ্যাডমিরাল ব্রাড কুপার, তিনি মার্কিন নৌবাহিনীর পঞ্চম বহরের সাবেক কমান্ডার।
ব্রিটিশ নাগরিক ও প্রতিষ্ঠানও আছে এই নিষেধাজ্ঞায়। ব্রিটিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী গ্র্যান্ট শ্যাপস আছেন ইরানের নিষেধাজ্ঞার তালিকায়। ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর কৌশলগত কমান্ডের কমান্ডার জেমস হকেনহল এবং লোহিত সাগরের রয়্যাল নেভির বহরের ওপরেও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ইরান।
এছাড়াও মার্কিন অস্ত্র নির্মাতা লকহিড মার্টিন, শেভরন এবং ব্রিটিশ এলবিট সিস্টেমস, পার্কার মেগিট ও রাফাল ইউকের ওপরও বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে ইরান।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় ওই ব্যক্তি ও কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের সম্পদ ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হবে। তারা কোনোভাবেই ইরানি ভূখণ্ডে প্রবেশ করতে পারবে না।
মন্তব্য করুন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ওমানের পর এবার সৌদি আরবেও ব্যাপক বৃষ্টিপাতে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। দেশটির বিভিন্ন স্থানে অতিমাত্রায় বৃষ্টির পানি জমে বন্যা দেখা দিয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন জনগণ। টানা কয়েকদিনের বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যার পানিতে অনেক জায়গায় সাধারণ মানুষের গাড়ি ডুবে গেছে এবং রাস্তাঘাট বন্ধ হয়ে গেছে।
সাধারণ মানুষকে সহায়তা করার জন্য জরুরি সেবার কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা তাৎক্ষণিকভাবে কাজ শুরু করে দিয়েছেন। এদিকে উপসাগরীয় দেশটির আবহাওয়া কর্তৃপক্ষের জনসাধারনের ভ্রমণের ওপর সতর্কতার জারি করেছে। দেশটিতে স্কুলও বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। স্কাই নিউজ এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত কিছু ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, সোমবার আল-উলা এবং আল-মদিনা প্রদেশে আকস্মিক বন্যা হানা দিয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা গেছে, পবিত্র নগরী মদিনার মসজিদে নববীর কাছে প্রবল বৃষ্টি হচ্ছে। সৌদির জাতীয় আবহাওয়া কেন্দ্র মদিনার জন্য সর্বোচ্চ লাল সতর্কতা জারি করেছে। তারা আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানিয়েছে, মদিনায় আরো বজ্রসহ বৃষ্টি এবং ঝড়োহাওয়া বয়ে যেতে পারে।
মদিনা অঞ্চলের সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকার অনুরোধ করেছে। বৃষ্টির সময় উপত্যকা এবং জলধারাগুলো থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানিয়েছে তারা। এছাড়া কৃষিপণ্য পরিবহনের রাস্তা দিয়ে চলাচলের সময় বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে।
সৌদির দক্ষিণ-পূর্বে প্রতিবেশী সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং ওমানে আকস্মিক বন্যার কয়েকদিন পরেই এই অঞ্চলে এমন বৃষ্টিপাত হচ্ছে। বছরের এই সময় বিরল বৃষ্টি জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ২০২২ সালের নভেম্বরে সৌদি আরব ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে উপকূলীয় বন্যার কবলে পড়েছিল।
মন্তব্য করুন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
দক্ষিণ লেবানন থেকে হিজবুল্লাহর গোলাবর্ষণে নর্দার্ন ইসরাইলের আপার গ্যালিলি অঞ্চলের মেতুলা শহরে নয়টি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ খবর দিয়েছে ইসরাইলের সেনাবাহিনী। তবে ওই হামলায় কারও হতাহতের খবর জানাননি তারা।
এদিকে লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ শুক্রবার জানিয়েছে, তারা ইসরাইলি সামরিক স্থাপনায় বেশ কয়েকটি হামলা চালিয়েছে।
প্রসঙ্গত, গাজায় ইসরাইলের অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকেই লেবানন-ইসরাইল সীমান্তে আন্তঃসীমান্ত হামলা নিত্যদিনের ঘটনায় পরিণত হয়েছে। হিজবুল্লাহ বলছে, ফিলিস্তিনি জনগণের সমর্থনে ইসরাইলের ওপর তারা হামলা করছে। কেবল গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত হওয়ার পরই তারা থামবে।
ইসরাইলের নির্মম হামলায় রোববার গাজার খান ইউনিসের পশ্চিমে আল-মাওয়াসি শরণার্থী শিবিরে ইসরাইলি বিমান হামলায় অন্তত ৭১ জন নিহত ও ২৮৯ জন আহত হয়েছেন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরাইলের যুদ্ধে এ পর্যন্ত অন্তত ৩৮ হাজার ৩৪৫ জন নিহত ও ৮৮ হাজার ২৯৫ জন আহত হয়েছেন।
মন্তব্য করুন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, হামাসের সামরিক এবং প্রশাসনিক কাঠামো নির্মূল না করা পর্যন্ত যুদ্ধ অব্যাহত রাখা হবে।
তিনি বলেছেন, যুদ্ধ বন্ধ করার ক্ষেত্রে ইসরাইলের যে শর্ত রয়েছে সেটি পরিবর্তিত হয়নি; হামাসের সামরিক ও প্রশাসনিক কাঠামো ধ্বংস করা, সব জিম্মিকে মুক্ত করা এবং নিশ্চিত করা যে, গাজা আবারও ইসরাইলের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে না।
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় চলমান যুদ্ধ বন্ধে শুক্রবার একটি প্রস্তাব উত্থাপন করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এ প্রস্তাবে বাইডেন বলেছেন, প্রথমে ছয় সপ্তাহের জন্য যুদ্ধবিরতি হবে, এরপর ইসরাইলি বাহিনী গাজার জনবহুল এলাকা থেকে সরে যাবে, গাজায় বিপুল ত্রাণ পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হবে, কয়েকশো ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেবে ইসরাইল, হামাস মুক্তি দেবে ইসরাইলি জিম্মিদের— যার মধ্যে থাকবে পুরুষ সেনারাও।
এরপর গাজার পুনর্গঠনের কাজ শুরু হবে। সবশেষে দুই পক্ষের মধ্যে সব ধরনের হামলা বন্ধ অর্থাৎ স্থায়ী যুদ্ধবিরতি হবে। বাইডেন এটিকে ইসরাইলের প্রস্তাব হিসেবেই অভিহিত করেছেন।
তবে মার্কিন প্রেসিডেন্টের এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন দখলদার ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
তিনি আরও বলেছেন, স্থায়ী যুদ্ধবিরতি হওয়ার আগ পর্যন্ত ইসরাইল তার শর্তে অটল থাকবে। এসব শর্ত পূরণ হওয়ার আগে ইসরাইল স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে রাজি হবে এমন ধারণা বাস্তব হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
এদিকে বাইডেন যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেওয়ার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় হামাস বলেছে, তারা এতে ‘ইতিবাচক’।
এছাড়া ইসরাইলের বিরোধী দলগুলোও এতে সমর্থন জানিয়েছেন। হামাসের হাতে যেসব জিম্মি রয়েছেন তাদের পরিবারের সদস্যরাও এই শর্ত কার্যকর করার জন্য দাবি জানাচ্ছেন।
মন্তব্য করুন
উত্তর আমেরিকার দেশ মেক্সিকোতে গোলাগুলিতে কমপক্ষে ১০ জন নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৯ জন। স্থানীয় সময় শনিবার (২০ মে) মেক্সিকোর উত্তরাঞ্চলে একটি কার রেসিং শোতে গোলাগুলিতে হতাহতের এই ঘটনা ঘটে।
রোববার (২১ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শনিবার মেক্সিকোর উত্তরাঞ্চলে বাজা ক্যালিফোর্নিয়ায় একটি কার-শোতে বন্দুক হামলায় কমপক্ষে ১০ জন নিহত এবং নয়জন আহত হয়েছেন বলে স্থানীয় পৌর সরকার জানিয়েছে।
রয়টার্স বলছে, এনসেনাডা শহরের সান ভিসেন্টে এলাকায় অল-টেরেন কার রেসিং শো চলাকালীন এই হামলার ঘটনা ঘটে। ৯১১ তে রিপোর্ট করা বিবরণ অনুসারে, দুপুর সোয়া দুইটার পর লম্বা বন্দুকধারী লোকেরা একটি ধূসর ভ্যান থেকে বেরিয়ে গ্যাস স্টেশনে কার রেসিং শোতে অংশগ্রহণকারীদের ওপর গুলি করতে শুরু করে।
মিউনিসিপ্যাল ও স্টেট পুলিশ, মেরিনস, ফায়ার ডিপার্টমেন্ট এবং মেক্সিকান রেড ক্রসসহ অন্যান্য সংস্থা ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে।
মেয়র আরমান্দো আয়ালা রোবেলস বলেছেন, প্রাদেশিক অ্যাটর্নি জেনারেল রিকার্ডো ইভান কার্পিও সানচেজ গোলাগুলির ঘটনার তদন্তের জন্য একটি বিশেষ দল গঠন করেছেন।
মন্তব্য করুন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
আফগানিস্তানের বাঘলান প্রদেশে আকস্মিক বন্যায় একদিনে দুইশরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা বার্তাসংস্থা এএফপিকে জানিয়েছে, শুক্রবার বাঘলানে অস্বাভাবিক ভারী বৃষ্টিপাত হয়। এতে সেখানে আকস্মিক বন্যার (ফ্ল্যাশ ফ্লাড) সৃষ্টি হয়। এ বন্যায় কয়েক হাজার বাড়িঘর ধ্বংস হয়েছে এবং ইতোমধ্যে ২০০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আরও হতাহতের শঙ্কা রয়েছে।
শুধুমাত্র বাগলানি জাদিদ বিভাগে ১ হাজার ৫০০ ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে এবং ১০০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে আফগানিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ।
তবে তালেবান সরকারের পক্ষ থেকে ৬২ জনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
আফগানিস্তানের আরও কয়েকটি প্রদেশে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে এভাবে আকস্মিক বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। দেশটির সরকার জানিয়েছে শনিবার উত্তরাঞ্চলের তাকহার প্রদেশে বন্যায় ২০ জন প্রাণ হারিয়েছেন।
শুক্রবারের বৃষ্টিতে বাদাকশান প্রদেশ, মধ্যাঞ্চলের ঘোর প্রদেশ এবং পশ্চিমাঞ্চলের হেরাতেও বিভিন্ন অবকাঠামো ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
আফগানিস্তানে গত শীত মৌসুমটি শুষ্ক ছিল। ফলে সেখানে যে পরিমাণ বৃষ্টি হচ্ছে এ বৃষ্টি মাটি শুষে নিতে পারছে না। দেশটি জলবায়ু পরিবর্তনের ব্যাপক হুমকিতে ছিল। যার ফলাফল এখন বাস্তবে দেখা যাচ্ছে।
বিজ্ঞানীদের মতে, এমন বড় প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য দেশটি প্রস্তুত নয়। গত চার দশক আফগানিস্তানে যুদ্ধ-বিগ্রহ লেগে ছিল। এ কারণে দেশটির অর্থনীতি অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেকটাই দুর্বল।
মন্তব্য করুন