নির্বাচনে ব্যবহার অনিশ্চিত ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)। এখন এসব মেশিন সংরক্ষণের স্থায়ী জায়গা খুঁজে পাচ্ছে না নির্বাচন কমিশন (ইসি)। অস্থায়ীভাবে বিভিন্ন স্কুল-কলেজ ও আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসে রাখার পরও ইভিএমের জন্য স্থায়ী সংরক্ষণাগারের ব্যবস্থা করা হয়নি। তবে ইসি এখন স্থায়ীভাবে মেশিন সংরক্ষণের নতুন পরিকল্পনা করছে।
সম্প্রতি ইসির জানুয়ারি মাসের সমন্বয় সভায় ইভিএম সংরক্ষণের নতুন পরিকল্পনার বিষয়টি আলোচিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। সভায় ইভিএম সংরক্ষণের জন্য মাঠ কার্যালয়ে ওয়্যারহাউজ নির্মাণের পরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয়। ইসির পরিকল্পনা ও উন্নয়ন শাখার উপপ্রধান জানান, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের মতামত অনুযায়ী উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ের ভবনগুলো ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ করা সম্ভব নয়। এছাড়া যেসব উপজেলা ও জেলায় নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব ভবন নেই, সেসব স্থানে নিজস্ব ভবন নির্মাণের জন্য একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। অধিকাংশ আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা বিদ্যমান ভবনের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ সম্ভব বলে মত দেন।
এ বিষয়ে ইসির সিনিয়র সচিব বিদ্যমান অফিস ভবনের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণের সম্ভাব্যতা যাচাই করার জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীর মতামত গ্রহণের লক্ষ্যে একটি সভা আয়োজন করার নির্দেশনা দেন। এছাড়া পরিকল্পনা ও উন্নয়ন অধিশাখার অতিরিক্ত সচিব ডিপিপিতে ওয়্যারহাউজ নির্মাণ এবং আঞ্চলিক, জেলা ও উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়সমূহের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ সংক্রান্ত বিষয় অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানান।
এক-এগারো সরকারের সময় ড. এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন ইভিএমের ব্যবহার শুরু করে। সে সময় তারা বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে ১২ হাজার টাকা ব্যয়ে একেকটি মেশিন তৈরি করে নেয়। পরবর্তীতে কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন কমিশনও ইভিএম ব্যবহার করে। তবে ২০১৫ সালে রাজশাহী সিটি নির্বাচনে একটি মেশিন অচল হয়ে পড়ায় তা আর ব্যবহার করা সম্ভব হয়নি। রকিব কমিশন বুয়েটের তৈরি স্বল্পমূল্যের মেশিনগুলো পুড়িয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয় এবং উন্নত মানের ইভিএম তৈরির পরিকল্পনা করে।
২০১৭ সালে কেএম নূরুল হুদার কমিশন বুয়েটের তৈরি ইভিএমের চেয়ে প্রায় ২০ গুণ বেশি দামে মেশিন কেনার সিদ্ধান্ত নেয়। ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঠিক আগে বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি (বিএমটিএফ) থেকে উন্নতমানের ইভিএম তৈরি করে নেয় তারা। এতে প্রতি মেশিনের ব্যয় হয় দুই লাখ ৩৫ হাজার টাকার মতো। এ জন্য তিন হাজার ৮২৫ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়।
সেই প্রকল্প থেকে দেড় লাখ ইভিএম কেনে রকিব কমিশন। তবে প্রকল্পে সংরক্ষণ, রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতের ব্যবস্থা না থাকায় উন্নতমানের ইভিএমের মেয়াদ ১০ বছর হলেও পাঁচ বছর যেতে না যেতেই অকেজো হওয়া শুরু করে।
মন্তব্য করুন
ডেস্ক রিপোর্টঃ
রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় গ্রেপ্তার ইসকনের সাবেক নেতা ও সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন শুনানি পিছিয়ে আগামী ২ জানুয়ারি ধার্য করেছেন আদালত। শুনানির জন্য আসামি পক্ষের কোনো আইনজীবী উপস্থিত না থাকায় আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ মো. সাইফুল ইসলামের আদালত এই সিদ্ধান্ত দেন।
এর আগে মঙ্গলবার সকাল থেকে শুনানিকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম আদালতপাড়ায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের কড়া নিরাপত্তা দিতে দেখা গেছে।এ ছাড়া প্রবেশমুখগুলোতে জনসাধারণের প্রবেশ সীমিত করা হয়েছে। প্রয়োজন ছাড়া কাউকে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
এদিকে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার প্রতিবাদে আজও বিক্ষোভ হয়েছে চট্টগ্রামের আদালতপাড়ায়। মঙ্গলবার বেলা পৌনে ১১টায় একদল আইনজীবী আদালত প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় তারা আলিফ হত্যার বিচার চান। আইনজীবীরা আলিফ হত্যাকাণ্ড ও আদালত প্রাঙ্গণে হামলা ভাঙচুরের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় চিন্ময়কে আসামি করার দাবি জানান।
উল্লেখ্য, গত ২৬ নভেম্বর চিন্ময়ের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন আদালত। তাকে কারাগারে নেওয়ার সময় মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভরত হাজারখানেক অনুসারীর সঙ্গে সংঘর্ষ হয় পুলিশের। পরে ত্রিমুখী সংঘর্ষে কুপিয়ে হত্যা করা হয় সাইফুল ইসলাম আলিফ নামে এক আইনজীবীকে। সম্প্রতি যিনি সরকারি কৌঁসুলি হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিলেন।
আইনজীবী আলিফ খুন এবং আদালত প্রাঙ্গণে পুলিশের ওপর হামলা-গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগে পৃথক দুটি মামলা করেন তার বাবা ও ভাই। বাবার করা হত্যা মামলায় ৩১ জনকে আসামি করা হলেও ভাইয়ের করা মামলায় এজাহারনামীয় আসামি করা হয় ১১৬ জনকে। সেই মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণের আইনজীবী শুভাশিস শর্মাও ৩৩ নম্বর আসামি।
এ ছাড়া তার অনুসারী আরও ৫০ জনের অধিক আইনজীবীকে আসামি করা হয়েছে। মোট পাঁচটি মামলায় এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার ৩৯ জন। এর মধ্যে গতকাল সোমবার আইনজীবী সাইফুল হত্যায় ৯ জনকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছেন আদালত।
মন্তব্য করুন
বাংলাদেশের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান আজ শনিবার এক সেমিনারে জানিয়েছেন, ভারতীয় কোম্পানি আদানি গ্রুপ সবসময় বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধের হুমকি দেয়। তিনি এই মন্তব্যটি ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক জ্বালানি সেমিনারে করেছেন।
তিনি বলেন, "আমার প্রতিদিনের শুরু হয় জ্বালানির মূল্য পরিশোধের চাপ নিয়ে। বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রপ্তানিকারী ভারতীয় কোম্পানি আদানি গ্রুপ সবসময় আমাদের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করার হুমকি দেয়।"
এছাড়াও, ফাওজুল কবির খান জ্বালানি খাতে সরকারি ভর্তুকি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে বলেন, "৭২ টাকায় গ্যাস কিনে ৩০ টাকায় কতদিন দেওয়া যাবে? বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানোর জন্য সরকারের ওপর প্রচণ্ড চাপ রয়েছে। আমি জানি না, কতদিন দাম না বাড়িয়ে থাকতে পারব।"
তিনি আরও বলেন, গত ১৫ বছরে বিদ্যুৎ ও জ্বালানিখাতে লুটপাটকারীদের বিচারের জন্য একটি জ্বালানি ট্রাইব্যুনাল গঠন করা প্রয়োজন। এই দাবি তুলে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ড. শামসুল আলম বলেন, "বর্তমান সরকার কোনো পিছুটান ছাড়াই গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর আগে, এখানে অপচয় ও দুর্নীতি বন্ধের উদ্যোগ নিতে হবে।"
মন্তব্য করুন
ডেস্ক রিপোর্টঃ
যুবদল নেতা শামীম হত্যা মামলায় তৃণমূল বিএনপির চেয়ারপারসন শমসের মবিন চৌধুরীকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পল্টন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) তন্ময় কুমার বিশ্বাস।
শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আফনান সুমী তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর বনানী ডিওএইচএস’র বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ।
২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর বিএনপি কেন্দ্রীয় কর্মসূচি অনুযায়ী মহাসমাবেশ ডাকে। এই মহাসমাবেশ পণ্ড করার জন্য একই দিনে আওয়ামী লীগ পাল্টা সমাবেশ ডাকে। বিএনপি নেতাকর্মীদের হত্যা ও গুম করার উদ্দেশ্যে পুলিশের সহায়তায় বিএনপির ঢাকার মহাসমাবেশে হামলা চালানো হয়। এসময় যুবদল নেতা শামীম নিহত হন। এ ঘটনায় ২০২৪ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর রাজধানীর পল্টন থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়।
মন্তব্য করুন
লোডশেডিংয়ের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে কিছুটা সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
রোববার (১৪ মে) সচিবালয়ের নিজ কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সুখবর হচ্ছে মোখার যে ভয়াবহতা আশঙ্কা করা হয়েছিল সেটা কেটে গেছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও খুব বেশি একটা হয়নি।খুব দ্রুতই বিদ্যুৎ ও গ্যাসের পরিস্থিতি ঠিক হয়ে যাবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে ভাসমান টার্মিনালের একটি লাইন থেকে খুলে গিয়েছে, অন্যটি সংযুক্ত আছে। সংযুক্ত থাকা টার্মিনালের মাধ্যমে দুই একদিনের মধ্যেই গ্যাস সরবরাহ শুরু করা হবে। সংযোগহীন টার্মিনালের মেরামতের কাজ করতে ১২ থেকে ১৫ দিন সময় লাগবে। এতে ৪০০ এমএমসিএফ গ্যাসের ঘাটতি হতে পারে। ফলে কিছু কিছু জায়গায় লোডশেডিং হবে। তবে গতকালের (শনিবার) মতো বড় আকারে হবে না।
ওএফএ/এমএ
মন্তব্য করুন
ডেস্ক রিপোর্টঃ
রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে দ্রুতই রাজপথে কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ।
কোটাবিরোধী আন্দোলনের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ছাত্রলীগের নেতাদের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় মামলা দায়েরের সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেন, শেখ হাসিনার পদত্যাগ বিষয়ে রাষ্ট্রপতি জাতির সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। রাষ্ট্রপতি তার পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন, দ্রুত তাকে পদত্যাগ করতে হবে। দ্রুতই রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে রাজপথের কর্মসূচি ঘোষণা করবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। কোনোভাবেই আর রাষ্ট্রপতিকে পদে দেখতে চাই না।
এর আগে ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগে শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদেরকে আসামি করে শাহবাগ থানায় মামলা করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মাহিন সরকার। আসামি হিসেবে আছেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সেক্রেটারি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা সভাপতি ও সেক্রেটারিও। ৩৮৭ জনের নাম উল্লেখ করে ১ হাজার অজ্ঞাতনামার বিরুদ্ধে এ মামলা হয়েছে।
সম্প্রতি মানবজমিন পত্রিকায় সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের একটি সাক্ষাৎকার নেন। গত শনিবার (১৯ অক্টোবর) পত্রিকার রাজনৈতিক ম্যাগাজিন সংস্করণ ‘জনতার চোখ’- এ সাক্ষাতকারটি প্রকাশিত হয়।
‘উনি তো কিছুই বলে গেলেন না...’ শিরোনামে প্রকাশিত লেখায় মতিউর রহমান উল্লেখ করেন, তিন সপ্তাহ ধরে তিনি শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্রের বিষয়ে অনুসন্ধান চালিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীদের পদত্যাগপত্র থাকার কথা যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে সেখানেও তিনি খোঁজ নিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত বঙ্গভবনে প্রেসিডেন্ট সাহাবুদ্দিনের মুখোমুখি হন।
সেখানে আলাপচারিতার একপর্যায়ে তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে জানতে চান, আপনার কাছে কি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগপত্রটা আছে? জবাবে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আমি শুনেছি তিনি পদত্যাগ করেছেন। কিন্তু আমার কাছে কোনো দালিলিক প্রমাণ নেই। বহু চেষ্টা করেও আমি ব্যর্থ হয়েছি। তিনি হয়তো সময় পাননি’।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘৫ই আগস্ট সকাল সাড়ে দশটায় বঙ্গভবনে ফোন এলো প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন থেকে। বলা হলো, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গভবনে আসবেন মহামান্য প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য। এটা শুনেই প্রস্তুতি শুরু হলো বঙ্গভবনে। ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই ফোন এলো তিনি (শেখ হাসিনা) আসছেন না’।
মন্তব্য করুন
অস্থায়ী পাসের মাধ্যমে আগামীকাল সোমবার থেকে সাংবাদিকরা সচিবালয়ে প্রবেশ করতে পারবেন, জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।
রোববার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ের সামনে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ তথ্য দেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিটির প্রাথমিক রিপোর্ট জমা দেওয়ার আজকের শেষ দিন। তাই আজকে কাউকে সচিবালয়ে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, অতীতে ৩ হাজারেরও বেশি অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড বিতরণ করা হয়েছে, তবে সবাই সাংবাদিক নন। এ কারণে এসব কার্ডের যাচাই-বাছাই প্রয়োজন। সাংবাদিকদের আবেদন অনুযায়ী একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নতুন স্থায়ী পাস প্রদান করা হবে। ওই সময় পর্যন্ত কিছু সংখ্যক সাংবাদিককে অস্থায়ী পাস দেওয়া হবে।
তথ্য উপদেষ্টা আরও জানান, তারা সাংবাদিক সংগঠনগুলোর সঙ্গে বসে সচিবালয়ে এবং বাইরে যারা সংগঠন রয়েছে তাদের সঙ্গে আলোচনা করে একটি নির্দিষ্ট অস্থায়ী পাসের ব্যবস্থা করবেন। আগামীকাল (সোমবার) থেকে সাংবাদিকরা সচিবালয়ে প্রবেশ করতে পারবেন, তবে বর্তমানে থাকা সব পাস বাতিল হবে।
এর আগে, শুক্রবার সচিবালয়ে প্রবেশের জন্য বেসরকারি ব্যক্তিদের দেওয়া সমস্ত অস্থায়ী পাস বাতিল করে অন্তর্বর্তী সরকার। এছাড়া, সাংবাদিকদের জন্য দেওয়া অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড দিয়েও সচিবালয়ে প্রবেশাধিকার পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বাতিল করা হয়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রধান উপদেষ্টা মো. খোদা বখস চৌধুরীর স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অগ্নিকাণ্ডের কারণে সচিবালয়ের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ায় এই আদেশ জারি করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন
ডেস্ক রিপোর্টঃ
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, তরুণরা সংখ্যায় বেশি। দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে তারা আগ্রহী। নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে তার মতামত নেওয়ার জন্য আমি মনে করি ভোটার হওয়ার বয়স ১৭ বছর নির্ধারিত হওয়া উচিত।
শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর ফার্মগেট কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজ আয়োজিত দুই দিনব্যাপী জাতীয় সংলাপ-২০২৪ এর উদ্বোধনী ভাষণে তিনি এ কথা বলেন। ভিডিও বার্তার মাধ্যমে তিনি এই ভাষণ দেন।
সংস্কারের বিষয়ে আমাদের মধ্যে ঐকমত্য প্রয়োজন উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, এ জন্য সর্বশেষ পর্যায়ে জাতীয় ঐকমত্য গঠন কমিশন গঠন করা হয়েছে। যেমন ধরুন-কোন বয়সে একজন নাগরিক ভোটার হতে পারবে তার জন্য নানা দেশে নানা বয়স নির্ধারণ করা আছে। নির্বাচন সংস্কার কমিশন নিশ্চয়ই এরকম একটা বয়স সুপারিশ করবে। সে বয়স আমার পছন্দ হতেও পারে না-ও হতে পারে। ধরুন আমি তরুণদের তাড়াতাড়ি ভোটার করার পক্ষে। যে যত তরুণ, পরিবর্তনের প্রতি তার আগ্রহ তত বেশি—এই হলো আমার যুক্তি। তরুণরা তাকে শক্তি যোগায়। তথ্যপ্রযুক্তির সঙ্গে তার গভীর সখ্যতা তাকে এই শক্তি যোগায়। তরুণরা সংখ্যায়ও বেশি। দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে তারা আগ্রহী। নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে তার মতামত নেওয়ার জন্য আমি মনে করি ভোটার হওয়ার বয়স ১৭ বছর নির্ধারিত হওয়া উচিত।
তিনি বলেন, নির্বাচন সংস্কার কমিশন কি ধরনের সুপারিশ করবেন তা আমার জানা নেই। কিন্তু দেশের বেশিরভাগ মানুষ যদি কমিশনের সুপারিশ করা বয়স পছন্দ করে ঐক্যমতে পৌঁছার জন্য আমি তা মেনে নেব।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সংস্কারের যে মহান দায়িত্ব ঐতিহাসিক কারণে আমাদের কাছে এসে গেছে এই দায়িত্ব আমাদের প্রত্যেককে যার যার অবস্থান থেকে পালন করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রতিটি রাজনৈতিক দল, সামাজিক, অর্থনৈতিক, ব্যবসায়িক এবং ধর্মীয় জনগোষ্ঠীর প্রত্যেককে দৃঢ়তার সঙ্গে সংস্কারের এই মহাযজ্ঞে আনন্দের সঙ্গে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান কেবল বাংলাদেশকে মুক্ত করেনি, আমাদের স্বপ্নকেও তুমুল সাহসী করে তুলেছে। বাকহীন বাংলাদেশ জোরালো কণ্ঠে আবার কথা বলার শক্তি ফিরে পেয়েছে। এই দৃঢ় কণ্ঠ ঐক্য গঠনে সোচ্চার হয়েছে। ঐক্য আমাদের মূল শক্তি।
জুলাই অভ্যুত্থান আমাদেরকে ঐতিহাসিক মাত্রায় বলিয়ান করেছে উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, গত পাঁচ মাসে এই ঐক্য আরও শক্তিশালী হয়েছে। গণঅভ্যুত্থানের বিরুদ্ধ শক্তি আমাদের মধ্যে ভাঙন সৃষ্টি করার ক্রমাগত প্রয়াস চালাতে থাকায় আমাদের ঐক্য আরও মজবুত হচ্ছে। এই ঐক্যের জোরেই এখন আমরা অসাধ্য সাধন করতে পারি। এখনই আমাদের সর্বোচ্চ সুযোগ। এমন অর্থনীতি গড়ে তুলতে হবে যেটা সকল নাগরিকের জন্য সম্পদের ও সুযোগের বৈষম্যহীনতার নিশ্চয়তা প্রদান করবে।
তিনি বলেন, যত নিম্ন আয়ের পরিবারেই জন্মগ্রহণ করুক না কেন- প্রতিটি নাগরিকের, তিনি নারী হোক, আর পুরুষই হোক তিনি যেন বিনা বাধায় তো বটেই বরং রাষ্ট্রের আয়োজনে তার সৃজনশীলতা প্রকাশ করে যে কোনো পর্যায়ের উদ্যোক্তা হতে পারেন বা তিনি যে ধরনের কর্মজীবন চান তাই বেছে নিতে পারবেন। এমন রাজনৈতিক ও রাষ্ট্রীয় পরিবেশ থাকবে যেখানে সংখ্যালঘু-সংখ্যাগুরু এই পরিচিতি অবান্তর হয়ে পড়বে। সবার একটিই পরিচয়-আমি বাংলাদেশের নাগরিক এবং রাষ্ট্র আমাকে আমার সকল অধিকার প্রদান করতে বাধ্য।
ড.ইউনূস আরও বলেন, রাষ্ট্রের কাছে এবং অন্য নাগরিকের কাছে আমার আর কোনো পরিচয় দেবার প্রয়োজন হবে না। যেখানে ব্যক্তি বন্দনার কোনো সুযোগ থাকবে না। দেশের ভেতরে বা বাইরে প্রভু-ভৃত্যের কোনো সম্পর্কের সুযোগ থাকবে না। আমরা বাংলাদেশের নাগরিক হওয়ার সুবাদে হবো বিশ্ব নাগরিক। দেশের মঙ্গল সাধন করা যেমন হবে আমাদের নাগরিক দায়িত্ব, তেমনি বিশ্বের মঙ্গল সাধন করাও আমাদের কর্তব্য, এ দায়িত্বও আমরা সমানভাবে পালন করব। আমাদের তরুণ-তরুণীরা দ্রুত এই দুই দায়িত্ব সমানভাবে পালন করার জন্য প্রস্তুতি নেবে।
ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে দীর্ঘ লড়াইয়ের যোদ্ধাদের স্মরণ করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে দীর্ঘ লড়াইয়ের সকল যোদ্ধাদের। বিশেষ করে অভিবাদন জানাই জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ হওয়া ছাত্রজনতাকে। যারা আহত হয়েছেন, চোখের দৃষ্টি হারিয়েছেন, যাদের অঙ্গহানি হয়েছে তাদের প্রতি আমাদের ঋণ শোধ হওয়ার নয়। নতুন বাংলাদেশ গঠনে তাদের প্রেরণা ও অবদান জাতি কখনো ভুলতে পারবে না।’
তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশের রূপান্তর পর্বে প্রবেশ করার অধিকার অর্জন করেছি। এই রূপান্তর দ্রুত সফলভাবে কার্যকর করার জন্য আমাদেরকে সকল শক্তি নিয়োজিত করার জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকতে হবে। পেছনে ফেরার কোনো সুযোগ আমাদের নেই। আমাদের এই কাঙ্ক্ষিত রূপান্তরের লক্ষ্য হবে সকল ধরনের বৈষম্য অবসানের রাজনৈতিক আয়োজন নিশ্চিত করা, এদেশে গণতান্ত্রিক ও নাগরিক সমতা ভিত্তিক একটি রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা। ন্যায়ভিত্তিক সমাজ নির্মাণ ছাড়া জুলাইয়ের শহীদদের আত্মদান অর্থবহ হতে পারে না।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ফ্যাসিবাদ বাংলাদেশকে আদর্শভিত্তিক সকল রকমের লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত করে গভীর অন্ধকারের দিকে আমাদেরকে নিয়ে গিয়েছিল। আমরা আবার প্রিয় বাংলাদেশকে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও ন্যায়বিচারের পথে ফেরানোর লক্ষ্যে কাজ করছি বলে তিনি উল্লেখ করেন।
ড. ইউনূস বলেন, ঐক্য, সংস্কার ও নির্বাচন- এই তিন লক্ষ্যের কোনোটিকে ছাড়া কোনোটি সফল হতে পারবে না। ঐক্যবিহীন সংস্কার কিংবা সংস্কারবিহীন নির্বাচন বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে পারবে না। পাশাপাশি আমরা ভুলতে পারি না যে, আমাদের ছাত্র-জনতা অটুট সাহসে শিশুহত্যাকারী ও পৈশাচিক ঘাতকদের মোকাবিলা করেছে। মানবতার বিরুদ্ধে এমন নিষ্ঠুরতাকে অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
সংস্কার ও নির্বাচনের প্রস্তুতি একই সঙ্গে চলতে থাকবে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচনের প্রস্তুতির কাজ মূলত নির্বাচন কমিশনের। কিন্তু সংস্কারের কাজে সকল নাগরিককে অংশগ্রহণ করতে হবে। যারা ভোটার তারা তো অংশগ্রহণ করবেনই, তার সঙ্গে যারা ভবিষ্যতে ভোটার হবেন তারাও সর্বাত্মকভাবে সংস্কারের কাজে নিজেদেরকে নিয়োজিত করুন।
তিনি বলেন, সংস্কারের কাজটা নাগরিকদের জন্য সহজ করতে আমরা ১৫টি সংস্কার কমিশন গঠন করে দিয়েছি। তাদের প্রতিবেদন আমরা জানুয়ারি মাসে পেয়ে যাব। প্রত্যেক সংস্কার কমিশনের দায়িত্ব হলো প্রধান বিকল্পগুলো চিহ্নিত করে তার মধ্য থেকে একটি বিকল্পকে জাতির জন্য সুপারিশ করা। যার যার ক্ষেত্রে সংস্কারের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ কিভাবে রচিত হবে তা বিভিন্ন পক্ষের মতামত নিয়ে সুপারিশমালা তৈরি করে দেওয়া। এতে নাগরিকদের পক্ষে মতামত স্থির করা অনেকটা সহজ হবে। তবে কমিশনের প্রতিবেদনে সুপারিশ করলেই আমাকে-আপনাকে তা মেনে নিতে হবে এমন কোনো কথা নেই।
সংস্কারের কাজ দ্রুত শেষ করতে চাই উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, সব ক’টা কমিশন মিলে আমাদের সামনে বহু সুপারিশ তুলে ধরবে। আমরা এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছি যে যার যাই মতামত হোক না কেন আমরা দ্রুত একটা ঐক্যমতে পৌঁছে সংস্কারের কাজগুলো করে ফেলতে চাই। নির্বাচনের পথে যেন এগিয়ে যেতে পারি সেই ব্যবস্থা করতে চাই। আপনাদের আজকের সংলাপ সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য এমন একটি প্রক্রিয়া তুলে ধরে আমাদের এই দায়িত্বকে সহজ এবং গতিময় করে দেবে আশা করছি।
সংলাপের প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে সকলের প্রতি আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টা।
মন্তব্য করুন
পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে সবচেয়ে বেশি ভেঙে পড়েছে বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থা। ভোটের প্রতি আগ্রহ হারিয়েছে মানুষ। এই অবস্থায় আসন্ন নির্বাচনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে নিয়ে আসা। আর সেই চ্যালেঞ্জটাই নিতে চান প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন।
ভেঙে পড়া নির্বাচন ব্যবস্থার উত্তরণে দেশের সব মানুষের সহযোগিতা চেয়েছেন এই প্রধান নির্বাচন কমিশনার। ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে তার কমিশন।
সোমবার ঢাকার সাভারে ‘বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারযোগ্যদের তথ্য সংগ্রহ শুরুর মাধ্যমে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কর্মসূচি’ উদ্বোধনকালে সিইসি বলেন, ‘ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা জনগণের সহযোগিতা চাই। নির্বাচনী অনিয়ম রুখতে এবং সত্যিকারের নির্বাচন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে নির্বাচন কমিশন।’
সিইসি জানান, বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারযোগ্যদের তথ্য সংগ্রহের এই কর্মসূচি চলবে ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এরপর বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহ, ছবি তোলা এবং অন্যান্য কার্যক্রম সম্পন্ন হবে। সবকিছু শেষ করে জুনের মধ্যে হালনাগাদ কাজ সম্পন্ন করার পরিকল্পনা রয়েছে।
২০০৮ সালের ১ জানুয়ারি অথবা তার আগে যাদের জন্ম হয়েছে, অথচ ভোটার তালিকায় নাম নেই, তাদের অন্তর্ভুক্তির সুযোগ থাকছে। একইসঙ্গে মৃত ভোটারদের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া এবং ঠিকানা পরিবর্তনের সুবিধাও রাখা হয়েছে।
নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় জনগণের আস্থা ফেরানোর উপর জোর দিয়ে সিইসি বলেন, ‘যেদিন মানুষ তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভয়ভীতিহীন পরিবেশে ভোট দিতে পারবে, সেদিনই ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। সেই সংগ্রাম আজ থেকে শুরু হলো।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভোটের দিন অনিয়ম প্রতিরোধে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। ভোটকেন্দ্র দখল কিংবা ব্যালট বাক্স লুটের মতো অনিয়মের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা জরুরি।’
তরুণদের ভোটের প্রতি আগ্রহ ফেরানোর আহ্বান জানিয়ে সিইসি বলেন, ‘অনেক তরুণ জানিয়েছেন, তারা ভোট দিতে পারেনি। তাদের ভোটের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে চাই। এটাই আমাদের যাত্রার সূচনা।’
ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠায় বাঙালিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে সিইসি বলেন, ‘বাঙালি ঐক্যবদ্ধ হয়ে অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে জানে। আমরা জনগণের সাথে আছি এবং তাদের পাশে থেকে সুষ্ঠু ভোট নিশ্চিত করবো।’
সরকার প্রধানের দেওয়া সম্ভাব্য সময়সূচি অনুযায়ী এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ইসি সেই সময়কে মাথায় রেখে কাজ করছে বলে জানান সিইসি। তবে বিএনপির পক্ষ থেকে আগামী জুলাই-আগস্টের মধ্যে নির্বাচনের দাবি করা হয়েছে।
সিইসি বলেন, ‘এ যাত্রা লম্বা হতে পারে। তবে আমরা জনগণকে সাথে নিয়ে নির্ভুল ও সুষ্ঠু নির্বাচনী ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর।’
মন্তব্য করুন
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সব মামলা থেকে মুক্তি পেয়ে অল্প সময়ের মধ্যেই দেশে ফিরবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান। অনুষ্ঠানে বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা প্রতিহিংসামূলক মামলার প্রেক্ষাপটে লিখিত বই ‘রাজবন্দীর জবানবন্দী’-এর মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, "বেগম জিয়া আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যে সম্মান পেয়েছেন, তা ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। কাতারের আমিরের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি, যিনি বিনা সংকোচে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাঠিয়েছেন। একইভাবে ব্রিটিশ সরকারকেও ধন্যবাদ জানাচ্ছি। তারা কোথাও কোনো বাধা সৃষ্টি করেনি। বেগম জিয়া যেখানে যা চেয়েছেন, তা পেয়েছেন।"
নির্বাচন নিয়ে অশুভ প্রতিযোগিতার প্রসঙ্গ টেনে ফখরুল বলেন, "নতুন করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে সরকার অগণতান্ত্রিক পথে হাঁটছে। শেখ হাসিনা যদি ক্ষমতা থেকে চলে যান, তারপরও কেউ কাউকে বিশ্বাস করতে পারছি না। আমাদের ঐক্য ধরে রাখতে হবে। সংস্কারের কথা তারা বলে, অথচ বিএনপিই প্রথম সংস্কার শুরু করেছিল।"
দলীয় নেতাকর্মীদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, "৫ আগস্টের পরে ৭ আগস্ট বেগম জিয়া বলেছিলেন, ধৈর্য ধরতে হবে। কোনো প্রতিহিংসাপরায়ণ আচরণ করা যাবে না। নেতাকর্মীদের এই মনোভাব ধারণ করতে হবে।"
গণ-অভ্যুত্থানের প্রসঙ্গ তুলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, "দেশকে রক্ষা করতে এবং গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে ঐক্য ধরে রাখতে হবে। বিভক্তির রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। কারণ কিছু মানুষ ইচ্ছাকৃতভাবে দেশ ও জাতিকে বিভক্ত করার চেষ্টা করছে। নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমেই এই বিভক্তি দূর করা সম্ভব। তাই সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।"
মন্তব্য করুন
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম বলেছেন, বাংলাদেশ থেকে নৌকা মার্কা (আওয়ামী লীগ) নিশ্চিহ্ন করতে হবে। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে চলমান বিচার প্রক্রিয়ার সময় তাদের রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা উচিত। তিনি আরও অভিযোগ করেন, বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের কারণে জুলাই ঘোষণাপত্র এখনো প্রকাশ করা হয়নি।
শুক্রবার (২ মে) বিকেলে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটের সামনে আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
নাহিদ ইসলাম বলেন, "জুলাই অভ্যুত্থানের নয় মাস পরেও আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ ও তাদের নিবন্ধন বাতিলের দাবিতে আমাদের রাজপথে নামতে হচ্ছে—এটা আমাদের সম্মিলিত ব্যর্থতা। আমরা জাতির কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম যে, বিগত ফ্যাসিবাদী শাসনের বিচার করব এবং দেশকে সংস্কার করব।"
তিনি আরও বলেন, "বাংলাদেশের জনগণ এই প্রথমবারের মতো রাজপথে নামেনি, জীবন দেয়নি। এর আগেও বহুবার মানুষ সংগ্রাম করেছে, প্রাণ দিয়েছে। ১৯৭১ সালের পর ১৯৭২ সালে 'সোনার বাংলা'র স্বপ্ন মুজিববাদীদের হাতে বিনষ্ট হয়। দেশকে ভারতীয় শাসকগোষ্ঠীর হাতে তুলে দেওয়া হয়। মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষা ও স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্ন ধ্বংস করা হয়। মুজিববাদী সংবিধানে 'বাঙালি জাতীয়তাবাদ'-এর নামে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর ভাষা ও সংস্কৃতির অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়। গণতন্ত্রের নামে বাকশাল কায়েম করা হয়।"
তিনি বলেন, "বাংলাদেশে বারবার সামরিক হস্তক্ষেপ হয়েছে। নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানে জনগণ স্বৈরশাসনের পতন ঘটায়। কিন্তু ৩০ বছর পর আবারও সেই স্বৈরতন্ত্র ফিরে এসেছে। গত ১৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগ ফ্যাসিবাদী শাসন চালিয়েছে, গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে।"
জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "যখন ছাত্র-জনতা তাদের অধিকারের দাবিতে রাজপথে নেমেছিল, তখন আওয়ামী লীগ সরকার পুলিশ, সেনাবাহিনী ও বিজিবিকে দিয়ে গুলি চালিয়েছিল। আওয়ামী লীগ কোনো রাজনৈতিক দল নয়। তাদের নিবন্ধন বাতিল করে রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। কিন্তু বিগত নয় মাসেও এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।"
তিনি আরও অভিযোগ করেন, "যাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে, তারা জামিন পেয়ে যাচ্ছে। মামলা-বাণিজ্য চলছে। তৃণমূল পর্যায়ে আওয়ামী লীগ পুনরায় সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে।"
নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে তিনি বলেন, "নির্বাচন কমিশন কার স্বার্থে কাজ করবে? আমরা দেখেছি, কিছু সাংবাদিক প্রশ্ন তুলেছেন—শেখ হাসিনা কি গণহত্যাকারী? তাদের বলছি, আপনারা ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের দোসর।"
সমাবেশে তিনি আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান এবং সরকারের সমালোচনা করেন।
মন্তব্য করুন