ডেস্ক রিপোর্টঃ
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ও অর্থপাচারের প্রমাণ পেয়েছে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই)। লন্ডনের প্রতিনিধির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে এফবিআই।
যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিসের সিনিয়র ট্রায়াল অ্যাটর্নি লিন্ডা স্যামুয়েলস স্পেশাল এজেন্ট লা প্রিভোটের সঙ্গে যোগাযোগ করে দেখতে পান, বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৩০০ মিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে।
গত ৯ সেপ্টেম্বর এফবিআই-এর একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মানি লন্ডারিং অ্যান্ড লিগ্যাল ইউনিটের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কমিশনের সদর দপ্তরে বৈঠক করেন। এই বৈঠকে বিপুল পরিমাণ দলিল বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
দুদক কর্মকর্তারা জানান, গত ১ অক্টোবর বাংলাদেশে ইইউ ডেলিগেশনের হেড অব কো-অপারেশন মাইকেল ক্রেজার নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল দুদকের তৎকালীন চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে পাচার হওয়া তহবিল প্রত্যাবাসন ও কমিশনের পরিচালন সক্ষমতা বাড়াতে কারিগরি সহায়তা নিয়ে আলোচনা করেন।
শেখ হাসিনা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে ৩০০ মিলিয়ন ডলার পাচারের অভিযোগও তদন্ত শুরু করেছে দুদক।
সংস্থার কর্মকর্তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে গ্লোবাল ডিফেন্স কর্পকে বলেন, শেখ হাসিনা ও জয়ের বিরুদ্ধে দায়ের করা অভিযোগ অধিকতর তদন্তের জন্য দুদকের মহাপরিচালক (বিশেষ তদন্ত) বরাবর পাঠানো হয়েছে।
গত ১৭ ডিসেম্বর দুদকের মহাপরিচালক আখতার হোসেন জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ৯টি অগ্রাধিকার উন্নয়ন প্রকল্পে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে শেখ হাসিনা, জয়, হাসিনার বোন শেখ রেহানা, ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিকসহ অন্যদের বিরুদ্ধে ওঠা ৭০০ কোটি ডলার আত্মসাতের অভিযোগের বিষয়ে পৃথকভাবে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুদক।
সূত্র জানায়, বেপজা ও বেজার আওতাধীন নয়টি প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, আশ্রয়ণসহ আরও কিছু প্রকল্প।
৭০০ কোটি ডলারের মধ্যে শুধু রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প থেকেই ৫০০ কোটি ডলার আত্মসাৎ করা হয়েছে। বাংলাদেশে দুর্নীতিবিরোধী তদন্তে ব্রিটিশ অর্থমন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকসহ তার পরিবারের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
টিউলিপ ২০১৩ সালে রাশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশে একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ও অস্ত্র সরবরাহের একটি চুক্তির মধ্যস্থতা করছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। সেখান থেকে বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছিল।
ব্রিটিশ শ্রমমন্ত্রীর খালা শেখ হাসিনা ২০ বছরেরও বেশি সময় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন এবং এখন দুর্নীতি দমন কমিশনের বিস্তৃত তদন্তের মুখোমুখি হচ্ছেন। টানা ১৫ বছর শাসনের পর শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে গণঅভ্যুত্থানের মুখে ৫ আগস্ট রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে ভারতে পালিয়ে যান হাসিনা।
দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্মকর্তাদের মতে, ২০১৪ সালে 'যুক্তরাষ্ট্র বনাম রিজভী আহমেদের মামলায়' শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের নাম প্রথম নজরে আসে। এফবিআইয়ের তদন্তে জয়ের গুরুতর আর্থিক অসদাচরণের বিষয়টি উঠে আসে।
বিশেষত সজীব ওয়াজেদ জয়ের নামে হংকং এবং কেম্যান দ্বীপপুঞ্জের বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে নিউ ইয়র্ক, ওয়াশিংটন ডিসি এবং লন্ডন ব্যাংকে অর্থ স্থানান্তরিত করার তথ্য সামনে এসেছে। এফবিআই তাদের লন্ডন প্রতিনিধির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে এবং গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ও অর্থ পাচারের প্রমাণ পেয়েছে।
একজন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও বিচার বিভাগের একজন বিশেষ এজেন্ট নিশ্চিত করেছেন, কেম্যান আইল্যান্ড ও হংকংয়ের শেল কোম্পানির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন ব্যাংকে বাংলাদেশ থেকে ৩০ কোটি ডলার জমা হয়েছে।
এ বিষয়ে দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, এ ঘটনা অনেকাংশেই সত্য। আমরা ভবিষ্যতে আরও সুনির্দিষ্ট তথ্য পেতে পারি। এ বিষয়ে আমরা পরে সরাসরি কথা বলব।
বাংলাদেশের অর্থনীতির অবস্থা নিয়ে সম্প্রতি প্রকাশিত শ্বেতপত্র অনুযায়ী, কর্তৃত্ববাদী আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে অবৈধ তহবিল প্রবাহের কারণে ২০০৯ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বার্ষিক ১৬ বিলিয়ন ডলার হারিয়েছে।
প্রতিবেদন: গ্লোবাল ডিফেন্স কর্প
মন্তব্য করুন
চট্টগ্রাম বন্দরকে দেশের অর্থনীতির হৃৎপিণ্ড আখ্যায়িত করে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘নেপাল-ভুটান, সেভেন সিস্টার্সেরও হৃৎপিণ্ড চট্টগ্রাম বন্দর।’
বুধবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শনকালে তিনি এ কথা বলেন। এর আগে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তিনি চট্টগ্রাম পৌঁছান। প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণের পর নিজ জন্মস্থান চট্টগ্রামে এটাই তার প্রথম সফর।
প্রধান উপদেষ্টা জানান, ‘চট্টগ্রাম বন্দর শুধু বাংলাদেশের জন্য না, আশেপাশের দেশের জন্যও। যে কারণে নেপালের কথা বললাম, ভুটানের কথা বললাম, সেভেন সিস্টার্সের কথাও বললাম। সবার জন্য মৃত্যুঞ্জয়।’
তিনি জানায়, ‘নেপালের জন্য হৃৎপণ্ডিই নেই। কাজেই আমাদের হৃৎপিণ্ড দিয়ে এটা জ্বালতে হবে। আমরা তাদের সংযুক্ত করতে চাই। এটা তাদেরও লাভ আমাদেরও লাভ। এই হৃৎপিণ্ডে যদি সংযুক্ত হয় সে লাভোবান হবে আমরাও লাভবান হবো। ভুটান যদি সংযুক্ত হয় তারা লাভবান হবে আমরাও হবো। সেভেন সিস্টার যদি যুক্ত হয় তারাও লাভবান হবে আমরাও হবো। এই হৃৎপিণ্ডকে বাদ দিয়ে চললে, যারা এটাকে বাদ দেবে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বহুদিন ধরে ইচ্ছে ছিল চট্টগ্রাম বন্দরে আসব এবং এর অগ্রগতির খোঁজ নেব, সবার সঙ্গে কথা বলব, এই অপেক্ষাতেই ছিলাম। চট্টগ্রাম বন্দর আমার কাছে অপরিচিত কোনো জায়গা নয়। ছাত্র অবস্থায়ই এখানে এসেছি, শুধু জাহাজ দেখার আগ্রহে। তখন জাহাজ থেকে মাল খালাসের দৃশ্য দেখেছিলাম, সেটা ছিল একদম ভিন্ন অভিজ্ঞতা।’
তিনি আরো বলেন, ‘কিন্তু বরাবরের মতোই দুঃখ একটাই, এই বন্দরের পরিবর্তন এত ধীরগতিতে কেন? দুনিয়ার সব কিছু পাল্টে যাচ্ছে, কিন্তু এখানে তেমন পরিবর্তন নেই। এটা আজকের প্রশ্ন না। যখন গাড়ি চলে না, ট্রাক আটকে যায়, মাল খালাস করা যায় না, তখন কতবার গুরুত্বপূর্ণ প্লেন মিস করেছি। এই বিষয়গুলো নিয়ে মাঝে মাঝে কথা বলেছি, লেখালেখিও করেছি।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এবার যখন সুযোগ পেলাম, প্রথম দিন থেকেই চেষ্টা করছি, কীভাবে এই ব্যবস্থার পরিবর্তন আনা যায়। এটাকে কি সত্যিকারের বন্দর হিসেবে গড়ে তোলা যায় না? আমরা সত্যিই মুগ্ধ হয়েছি। প্রেজেন্টেশনে যেভাবে ছবিগুলো দেখানো হলো, ভালো লেগেছে। দুনিয়ায় অন্যরা এখানে থেমে নেই, তারা অনেক দূর এগিয়ে গেছে। দেখার সময় মনে হচ্ছিল, স্ক্রিনের এক পাশে চট্টগ্রাম বন্দরের বর্তমান, অন্য পাশে বিশ্বের বর্তমান, তখনই বোঝা গেল আমরা কতটা পিছিয়ে আছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘সার্বিকভাবে এই বন্দরে বড় পরিবর্তনের প্রয়োজন আছে, কিন্তু কারো মনে হয় না এটার দরকার আছে। তবে ফোন ধরেন চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান সাহেব, তার কথা শুনে আশ্বস্ত হলাম, অন্তত একজন আছেন যিনি মন দিয়ে শোনেন। আমাদের কাজ হচ্ছে তাকে সহায়তা করা।’
তিনি বলেন, ‘আমি সাখাওয়াতকে বলেছি, আমি আর শুনতে চাই না, অমুক তারিখের মধ্যে সব দিয়ে দিতে হবে। যারা বন্দরের ব্যবস্থাপনায় অভিজ্ঞ, পৃথিবীর যেখানেই থাকুক, তাদের দিয়ে এই কাজ করাতে হবে। যেভাবেই হোক। মানুষ যদি রাজি না হয়, জোরাজুরি নয়, রাজি করিয়েই করতে হবে। কারণ, এই কাজের জন্য রাজি না হওয়ার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। সবাই চায়, বন্দরের উন্নয়ন হোক। আমি আশিককে পাঠিয়েছি, যাতে সে গিয়ে মানুষকে বোঝায়, আমরা কী করতে চাই, কেন করতে চাই। সেও চেষ্টা করছে।’
ড. ইউনূস বলেন, ‘আমার চিন্তার কারণ একটাই, বাংলাদেশের অর্থনীতি যদি সত্যিই বদলাতে হয়, তাহলে চট্টগ্রাম বন্দরই আমাদের একমাত্র ভরসা। এটাকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতি কোনো নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করতে পারবে না। এর পথ খুলে দিলে দেশের অর্থনীতির পথ খুলবে। আর না খুললে যতই আমরা লাফালাফি বা ঝাঁপাঝাঁপি করি, কিছুই হবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘কেন আমি এটি নিয়ে ভাবি। একজনকে বলছিলাম, চট্টগ্রাম বন্দর হচ্ছে বাংলাদেশের অর্থনীতির হৃদপিণ্ড। হৃদপিণ্ড দুর্বল হলে ডাক্তার, পদ্ধতি সব কিছু এনে লাভ নেই। কারণ ছোট্ট এই হৃদপিণ্ডটাই যদি রোগাক্রান্ত হয়, তাহলে পুরো শরীরই চলবে না।’
চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল-৫ পরিদর্শন ও মতবিনিময় সভা শেষে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে যাবেন প্রধান উপদেষ্টা। সেখান থেকে চট্টগ্রামের কালুরঘাট রেল কাম সড়ক সেতুর ভিত্তি প্রস্তর উন্মোচন করবেন। দুপুর দুইটায় তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ম সমাবর্তনে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে অংশ নেবেন।
সমাবর্তন শেষে বিকেলে জোবরা গ্রামে গ্রামীন ব্যাংক পরিদর্শন এবং হাটহাজারীর বাথুয়া গ্রামে নিজ পৈত্রিক নিবাসে যাবেন। সন্ধ্যায় তিনি বিমানযোগে ঢাকায় ফিরবেন।
মন্তব্য করুন
জুলাইয়ে শহিদদের ত্যাগ জাতিকে একটি ন্যায় ও সাম্যভিত্তিক, বৈষম্য ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখিয়েছে বলে মন্তব্য করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি বলেন, ‘জুলাই আমাদের নতুন করে আশার আলো- একটি ন্যায় ও সাম্যভিত্তিক, বৈষম্য ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখিয়েছে। হাজারো শহীদের আত্মত্যাগ আমাদের রাষ্ট্র সংস্কারের যে সুযোগ এনে দিয়েছে তা যেকোনো মূল্যে রক্ষা করতে হবে।’ সোমবার (৪ আগস্ট) জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসে এক বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘পতিত স্বৈরাচার ও তার স্বার্থলোভী গোষ্ঠী এখনও দেশকে ব্যর্থ করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। দলমত নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে এই ষড়যন্ত্রকে মোকাবিলা করতে হবে। আসুন সবাই মিলে আমরা এমন এক বাংলাদেশ গড়ে তুলি, যেখানে আর কোনো স্বৈরাচারের ঠাঁই হবে না।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অবিস্মরণীয় দিন আজ। এক বছর আগে এই দিনে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান পূর্ণতা পায়, দীর্ঘদিনের ফ্যাসিবাদী শাসন থেকে মুক্ত হয় প্রিয় স্বদেশ। বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণ, যাদের যূথবদ্ধ আন্দোলনের ফসল আমাদের এই ঐতিহাসিক অর্জন, তাদের সবাইকে আমি এই দিনে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই।
আরও পড়ুন: ফ্যাসিবাদের মূলোৎপাটন করে জুলাইয়ের চেতনার পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন করতে হবে: রাষ্ট্রপতি
তিনি বলেন, আজ আমি স্মরণ করছি সেই সব সাহসী তরুণ, শ্রমিক, দিনমজুর ও পেশাজীবীদের, যারা ফ্যাসিবাদী শক্তিকে মোকাবিলা করতে গিয়ে শাহাদত বরণ করেছেন। গণ-অভ্যুত্থানে শাহাদত বরণকারী সবার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে আহত সকল জুলাই যোদ্ধা, চিরতরে পঙ্গু হওয়া ও দৃষ্টিশক্তি হারানো সকল জুলাই যোদ্ধাকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন অধ্যাপক ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, টানা ১৬ বছরের স্বৈরাচারী অপশাসনের বিরুদ্ধে সম্মিলিত বিস্ফোরণ ছিল জুলাই গণ-অভ্যুত্থান। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মূল লক্ষ্য ছিল— একটি বৈষম্যহীন, দুর্নীতি ও স্বৈরাচারমুক্ত নতুন রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা। দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করে রাষ্ট্রকে জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেওয়া। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পরে এ সকল লক্ষ্য বাস্তবায়নে রাষ্ট্রযন্ত্রের সকল খাতে ব্যাপক সংস্কার কার্যক্রম গ্রহণ করেছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি বলেন, জুলাই গণহত্যার বিচারের কার্যক্রম দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। জুলাই শহিদদের স্মৃতি রক্ষা ও আহত জুলাই যোদ্ধাদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
ড. ইউনূস বলেন, আমাদের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রাকে ত্বরান্বিত করতে রাজনৈতিক ও নির্বাচন ব্যবস্থা এবং প্রয়োজনীয় সকল সংস্কারে রাজনৈতিক দল ও অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা চলমান।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, একটি টেকসই রাজনৈতিক সমাধানের পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের কাছে রাষ্ট্রের সকল ক্ষমতা ফিরিয়ে দিতে অন্তর্বর্তী সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ।
মন্তব্য করুন
সীমান্তে অবৈধ অনুপ্রবেশ ও চোরাচালান প্রতিরোধে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সাউন্ড গ্রেনেড-টিয়ারশেল কেনা ও ব্যবহারের অনুমতি পেয়েছে। সোমবার (২০ জানুয়ারি) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, "সীমান্তে সবসময় প্রাণঘাতী অস্ত্র দেওয়া ছিল। তবে বিজিবির কাছে সাউন্ড গ্রেনেড বা টিয়ারশেল ছিল না। অনেক সময় প্রশ্ন ওঠে— বিজিবি কেন টিয়ারশেল বা সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করেনি। মূলত এসব সরঞ্জাম তাদের কাছে ছিল না। এখন আমরা তাদের এগুলো কেনার অনুমতি দিয়েছি। শিগগিরই এগুলো কেনা হবে।"
সীমান্ত পরিস্থিতি অনুযায়ী কোন সময় কোন অস্ত্র ব্যবহার করা হবে, সে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, "বর্তমানে সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং কোনো বড় ধরনের সমস্যা নেই।"
ভারতের কাছে সাউন্ড গ্রেনেড থাকা এবং তাদের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "ভারতের কাছে সাউন্ড গ্রেনেড আছে। তারা এটি নিয়ে খারাপভাবে নেবে না।"
মন্তব্য করুন
গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে ৫৮তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের প্রথম ধাপের আখেরি মোনাজাত সকাল ৯টা ১১ মিনিটে শুরু হয়ে ৯টা ৩৬ মিনিটে শেষ হয়। মাওলানা জুবায়ের আহমেদের নেতৃত্বে এই মোনাজাতে মুসল্লিরা মহান আল্লাহর দরবারে অশ্রুভেজা চোখে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। এছাড়াও মোনাজাতে মুসলিম উম্মাহ ও দেশ-জাতির কল্যাণ কামনা করা হয়।
এই দিনে তুরাগ তীরে লাখো মুসল্লির সমাগম ঘটে। চোখ যতদূর যায়, শুধু মুসল্লিদেরই সারি দেখা গেছে। তারা পরম করুণাময় আল্লাহর দরবারে হাত তুলে প্রার্থনা করেন। আখেরি মোনাজাতের আগে সকাল ৬টা থেকে ঢাকার ৩০০ ফিট, ধওর ব্রিজ এবং ভোগড়া বাইপাস মোড় থেকে ইজতেমাগামী সব যানবাহনের চলাচল বন্ধ ছিল। মোনাজাত শেষে মুসল্লিরা ধীরে ধীরে ময়দান ত্যাগ করছেন। এরপরই এসব সড়ক আবারও যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে।
বিশ্ব ইজতেমার অন্যতম আকর্ষণ হলো যৌতুকবিহীন গণবিয়ে। শনিবার বাদ আসর ইজতেমা ময়দানের মূল বয়ানের মঞ্চে ৬৩ জোড়া দম্পতির বিয়ে সম্পন্ন হয়। ভারতের মাওলানা যোহাইরুল হাসান মোহরে ফাতেমা অনুসারে এই বিয়ের আয়োজন পরিচালনা করেন। ইজতেমা আয়োজক কমিটির সমন্বয়কারী হাবিবুল্লাহ রায়হান বলেন, "প্রতিবারের মতো এবারও ৬৩ জোড়া দম্পতির যৌতুকবিহীন গণবিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে।"
বৃহস্পতিবার বাদ মাগরিব ভারতের মাওলানা ইব্রাহিম দেওলার আম বয়ানের মাধ্যমে ৫৮তম বিশ্ব ইজতেমার সূচনা হয়। প্রথম পর্বের এই তিন দিনের ইজতেমায় লাখো মুসল্লি অংশ নেন। শুক্রবার অনুষ্ঠিত হয় দেশের বৃহত্তম জুমার জামাত, যেখানে মুসল্লিদের ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে দেশের রাজনীতিতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। সম্প্রতি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও সাধারণ জনগণের পক্ষ থেকে স্বৈরশাসন ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের অভিযোগ তুলে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার দাবি জোরালো হয়েছে। এই দাবিকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে বলে জানিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
শুক্রবার (৯ মে) সরকার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যেই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের ব্যাপারে আলোচনা করে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের নেতা ও সমর্থকদের সন্ত্রাসী কার্যকলাপের বিষয়ে জাতিসংঘের প্রতিবেদনও সরকার বিবেচনায় রাখছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং গণতান্ত্রিক ধারা বজায় রাখতে সকলকে ধৈর্য ধারণের আহ্বান জানিয়েছে সরকার।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, জনদাবীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ইতোমধ্যে প্রচলিত আইনের আওতায় সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে পরিচিত ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পাশাপাশি মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িত সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত আইনে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক রাষ্ট্রপতি ও হত্যা মামলার আসামি আবদুল হামিদের বিদেশ গমনের ঘটনায় জনমনে যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে, সে বিষয়েও সরকার অবগত রয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সবার বিরুদ্ধে উপযুক্ত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে সরকার।
মন্তব্য করুন
সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ টি এম শামসুল হুদা মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
শনিবার সকাল ৯টায় ৮৩ বছর বয়সে তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে স্ত্রী ও এক মেয়ে রেখে গেছেন তিনি।
শামসুল হুদার ভগ্নিপতি আশফাক কাদেরী তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘সকাল ৯টায় গুলশানের নিজ বাসা থেকে ইউনাইটেড হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তার মরদেহ মর্গে রয়েছে।’
এ টি এম শামসুল হুদা সিইসি হিসেবে ২০০৮ সালে জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা করেন। এর আগে তিনি ১৯৬৬ সালে পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসে যোগ দেন। পরে দেশ স্বাধীন হলে তিনি বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে যোগ দেন। ২০০০ সালে তিনি চাকরি থেকে অবসর নেন।
চাকরি জীবনে তিনি বাগেরহাটে মহকুমা প্রশাসক (সাব ডিভিশনাল অফিসার), পানি সম্পদ ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এর আগে তিনি বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
মন্তব্য করুন
ডেস্ক রিপোর্টঃ
বাংলাদেশের সব নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিতে অন্তর্বর্তী সরকারের নেওয়া অব্যাহত পদক্ষেপগুলোকে স্বাগত জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর এ কথা জানিয়েছে।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দেওয়ার ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকারের কথিত 'নিষ্ক্রিয়তা'র অভিযোগের ব্যাপারটি যুক্তরাষ্ট্র কিভাবে দেখছে, ভয়েস অফ আমেরিকা বাংলার করা এ প্রশ্নের জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে পাঠানো এক ইমেইলে এক মুখপাত্র এ কথা জানান।
মুখপাত্র জানান, আমরা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্যদের উপর সহিংসতা ও তাদের প্রতি অসহিষ্ণুতার যেকোন ঘটনার নিন্দা জানাই এবং বাংলাদেশের সব নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের নেওয়া অব্যাহত পদক্ষেপগুলোকে স্বাগত জানাই।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নিপীড়নের যে ঘটনাগুলো ঘটছে সে বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের ব্যাপারে জানতে চাইলে, পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্র ধর্ম বা বিশ্বাসের স্বাধীনতা এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ও সংগঠন ( করার স্বাধীনতা কে ) মৌলিক স্বাধীনতা হিসেবে সমর্থন করে। আমরা নিয়মিতভাবে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারসহ আমাদের সকল অংশীদারদের কাছে সেই সমর্থনের কথা জানাই।
বাংলাদেশে ইসকনকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে ঘোষণা করার দাবি ও চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন না পাওয়া প্রসঙ্গে আরেকটি প্রশ্নের উত্তরে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র জানান, বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী ও সংবিধানে ( নাগরিকদের ) যে অধিকারগুলোর নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে, তার আলোকে এ ইস্যুগুলো সমাধান করার দায়িত্ব বাংলাদেশ সরকারের। আমরা বাংলাদেশসহ সকল দেশকে মত প্রকাশের স্বাধীনতা, শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ও সংগঠন করার স্বাধীনতা এবং ধর্ম বা বিশ্বাসের স্বাধীনতা সমুন্নত রাখার জন্য আহ্বান জানাই।
ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে আঞ্চলিক নিরাপত্তা প্রোমোটে যুক্তরাষ্ট্র কী ধরণের পদক্ষেপ নেওয়ার পরিকল্পনা করছে বলে প্রশ্ন করা হলে পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র জানান, আমরা বাংলাদেশ ও ভারত উভয়ের সাথেই আমাদের সম্পর্ককে গভীরভাবে মূল্য দিই। তাদের একে অপরের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্কের ব্যাপারটি আমরা বাংলাদেশ ও ভারতের সরকারের উপরই ছেড়ে দিয়েছি।
মন্তব্য করুন
রাশিয়ার স্বাধীন সংবাদমাধ্যম কোমারসেন্ট জানিয়েছে, রাশিয়া-ইউক্রেন সীমান্তের ব্রায়ান্সকে রুশ সেনাদের একটি সুখোই এসইউ-৩৪, একটি এসইউ-৩৫ এবং দু’টি এমআই-৮ হেলিকপ্টার ভূপাতিত করেছে ইউক্রেন।
যদি এ প্রতিবেদনটি সঠিক হয় তাহলে এটি কিয়েভের জন্য বিশাল সামরিক সাফল্য হবে বলে রোববার (১৪ মে) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
শনিবার (১৩ মে) কোমারসেন্ট ওই প্রতিবেদনে আরও জানিয়েছে, হামলার প্রস্তুতি নেওয়া রুশ এ যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টারগুলো একইসঙ্গে ভূপাতিত করা হয়। যেখানে এ আকাশযানগুলো ভূপাতিত করা হয়েছে সেটি ইউক্রেনের সীমান্তের খুব কাছে অবস্থিত।
সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী… যুদ্ধবিমানগুলো ইউক্রেনের চেরনিহিভ অঞ্চলে ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ ও বোমা হামলা চালানোর জন্য যাচ্ছিল। অপরদিকে হেলিকপ্টারগুলোর এ হামলার সহায়ক হিসেবে পাশে পাশে যাচ্ছিল।’
কোমারসেন্ট এ প্রতিবেদনের পক্ষে কোনো প্রমাণ দেয়নি। তবে এ সংবাদমাধ্যমটিতে যে তথ্য দেওয়া হয়েছে, সামরিক ব্লগাররাও সেই একই কথা বলেছেন।
সামরিক আকাশযান বিধ্বস্ত হওয়ার ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেনি রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। এছাড়া ইউক্রেনও মুখ চেপে বসে আছে। দেশটি সাধারণত রাশিয়ার মূল ভূখণ্ডের ভেতর চালানো কোনো হামলা নিয়ে কিছু বলে না।
তবে ইউক্রেনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে এ নিয়ে ব্যাপক উদ্দীপনা এবং আলোচনা চলছে। অনেকে বলছেন একসঙ্গে চারটি এয়ারক্রাফট বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনা কোনো দুর্ঘটনা নয়।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির উপদেষ্টা মিখাইল পোদোলায়েক অবশ্য এ নিয়ে একটি টুইট করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘রাশিয়ার বিমানগুলো ইউক্রেনের চেরনিহিভে ক্ষেপণাস্ত্র-বোমা হামলা চালাতে চেয়েছিল। কিন্তু অজ্ঞাত ব্যক্তিদের মাধ্যমে এগুলো ধ্বংস হয়েছে। এটি তাৎক্ষণিক বিচার।’
রাশিয়ার সরকারি বার্তাসংস্থা টাস নিউজ শনিবার এক প্রতিবেদনে জানায়, ব্রায়ান্সকে একটি এসইউ-৩৪ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। কিন্তু এর বেশি আর কিছু জানায়নি টাস।
মন্তব্য করুন
ঢাকার উত্তরার দিয়াবাড়ির মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের স্থায়ী ক্যাম্পাসে বিমানবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় হতাহতদের প্রকৃত সংখ্যা নিরূপণ এবং আহত, নিহত ও নিখোঁজদের নাম-ঠিকানাসহ তালিকা তৈরিতে ছয় সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ।
দুর্ঘটনার তীব্রতায় তাৎক্ষণিকভাবে সঠিক তথ্য নিশ্চিত করা না গেলেও, বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে থাকা বহু মানুষ হতাহত হয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জিয়াউল আলমকে সভাপতি করে গঠিত এই কমিটিকে তিন কর্মদিবসের মধ্যে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন—উপাধ্যক্ষ (প্রশাসন) মো. মাসুদ আলম, প্রধান শিক্ষিকা খাদিজা আক্তার, কো-অর্ডিনেটর লুৎফুন্নেসা লোপা, অভিভাবক প্রতিনিধি মনিরুজ্জামান মোল্লা (শিক্ষার্থী: যাইমা জাহান, চতুর্থ শ্রেণি) এবং দ্বাদশ শ্রেণির দুই শিক্ষার্থী—মারুফ বিন জিয়াউর রহমান ও মো. ভাসনিম ভূঁইয়া প্রতিক। কমিটিকে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে সরাসরি ঘটনাস্থল পরিদর্শন, সংশ্লিষ্ট পরিবারদের সঙ্গে যোগাযোগ এবং নিশ্চিত তথ্য যাচাই করে তালিকা প্রস্তুত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, কমিটির প্রতিবেদনটি শুধু অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনার জন্য নয়, প্রয়োজনে সরকার, উদ্ধারকারী সংস্থা ও অন্যান্য সহায়তাকারী কর্তৃপক্ষের কাছেও হস্তান্তর করা হবে। ইতোমধ্যে অধ্যক্ষের স্বাক্ষরে কমিটি গঠনের প্রজ্ঞাপন ই-মেইলের মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠানো হয়েছে এবং সেই অনুযায়ী কাজও শুরু করেছে সদস্যরা।
এছাড়া, এই কমিটি ছাড়াও দুর্ঘটনার সার্বিক দিক, উদ্ধার ও চিকিৎসা সহায়তা, অবকাঠামোগত ক্ষতি এবং নিরাপত্তা ঘাটতির বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণের জন্য আলাদাভাবে প্রশাসনিক কর্মকর্তারা কাজ করছেন বলে জানা গেছে।
গত সোমবার দুপুরে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রাথমিক শাখায় বিমানবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। এতে বহু শিক্ষার্থী হতাহত হন।মর্মান্তিক এই ঘটনার পরদিন রাষ্ট্রীয়ভাবে শোক পালন করা হয়।
মন্তব্য করুন
মানিকগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার ঘটনায় দায়ের মামলার পলাতক আসামি সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের এপিএস আমিনুর রহমান সেলিমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ বুধবার (১৩ আগস্ট) রাতে দিঘি এলাকার নিজ বাসভবন থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এদিকে বৃহস্পতিবার সকালে তাকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি মানিকগঞ্জ সদর থানার ওসি এস এম আমান উল্লাহ নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তার হওয়া আমিনুর রহমান সেলিম সদর উপজেলার দিঘি ইউনিয়নের রমনপুর গ্রামের আলতাফ মাস্টারের ছেলে।
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ সদর থানার ওসি এস এম আমান উল্লাহ জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার রাতে দিঘি এলাকার নিজ বাসভবন থেকে আমিনুর রহমান সেলিমকে গ্রেপ্তার করা হয়। আইনি প্রক্রিয়া শেষ হলে আদালতে পাঠানো হবে।
মন্তব্য করুন