খুলনা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) মিজানুর রহমানকে জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় আট বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) ঢাকার বিশেষ জজ মুহাম্মদ আবু তাহের এ রায় ঘোষণা করেন।
গত ২৩ জানুয়ারি দুদক ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে আদালত এ মামলার রায়ের দিন নির্ধারণ করেন। মামলায় মিজানুর রহমান জামিনে থাকলেও ২৩ জানুয়ারি আদালত তার জামিন বাতিল করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
নথি অনুযায়ী, ২০১৯ সালের ৬ আগস্ট জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে দুদকের সমন্বিত ঢাকা জেলা কার্যালয়-১ এ মামলা করেন সংস্থার পরিচালক মঞ্জুর মোর্শেদ। তদন্ত শেষে ২০২১ সালের ২৩ আগস্ট আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়।
অভিযোগপত্রে মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে ১ কোটি ৫৮ লাখ ৫৭ হাজার ৯৮১ টাকার জ্ঞাত-আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং ২০ লাখ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করার অভিযোগ আনা হয়।
মন্তব্য করুন
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের তদন্ত প্রতিবেদন ২৪ জুনের মধ্যে দাখিলের আদেশ দিয়েছেন। প্রসিকিউশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই আদেশ দেওয়া হয়েছে।
রোববার (২০ এপ্রিল) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের বিচারিক বেঞ্চ এই আদেশ জারি করেন।
এদিন জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারকৃত সাবেক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও অন্যান্য আসামিদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
আসামিদের মধ্যে রয়েছেন আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক, ফারুক খান, ডা. দীপু মনি, আব্দুর রাজ্জাক, শাজাহান খান, গোলাম দস্তগীর গাজী, আমির হোসেন আমু, কামরুল ইসলাম, রাশেদ খান মেনন ও হাসানুল হক ইনু। এছাড়াও সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী ও সালমান এফ রহমান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার ও জুনায়েদ আহমেদ পলক, সাবেক এমপি সোলাইমান সেলিম, আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, সাবেক স্বরাষ্ট্রসচিব জাহাংগীর আলম, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন এবং এনটিএমসির সাবেক মহাপরিচালক জিয়াউল আহসানও রয়েছেন।
এর আগে, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি এই ১৯ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়েছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে রোববার (২০ এপ্রিল) তাদের পুনরায় আদালতে উপস্থিত করা হয়।
মন্তব্য করুন
রাজধানীর শাহবাগ ও পল্টন মডেল থানার পৃথক দুই মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এবং বাংলাদেশ পিপলস পার্টির (বিপিপি) চেয়ারম্যান বাবুল সরদার চাখারীর রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
আজ বুধবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম. মিজবাহ উর রহমানের আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
এদিন তাদের আদালতে হাজির করা হয়। এরপর জুট ব্যবসায়ী মো. মনিরকে হত্যার অভিযোগে শাহবাগ থানার মামলায় আনিসুলকে গ্রেফতারসহ ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন।
অপরদিকে গণঅধিকার পরিষদের কর্মী বদরুল ইসলাম সায়মনকে হত্যাচেষ্টা মামলায় মোশাররফ হোসেন ও বাবুল সরদার চাখারীর ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন পুলিশের উপপরিদর্শক বিমান তরফদার। শুনানি শেষে আদালত আনিসুলের পাঁচদিন ও অপর দুজনের তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
হত্যা মামলার অভিযোগে জানা গেছে, জুলাই আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ৫ আগস্ট শাহবাগ থানার চাঁনখারপুল এলাকায় ছাত্র-জনতার সঙ্গে আন্দোলনে অংশ নেন ক্ষুদ্র জুট ব্যবসায়ী মো. মনির। দুপুরে আসামিদের ছোঁড়া গুলিতে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী গত ১৪ মার্চ শাহবাগ থানায় হত্যা মামলা করেন।
হত্যাচেষ্টা মামলার সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের গুম, খুন, নিপীড়ন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে সমাবেশ আয়োজন করা হয়। এতে দেশের সব রাজনৈতিক দলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে বিএনপি ও গণঅধিকার পরিষদসহ অন্যান্য সমমনা রাজনৈতিক দল এই মহাসমাবেশের ডাক দেয়। এতে ভুক্তভোগী বদরুল ইসলাম সায়মন অংশ নেন। শান্তিপূর্ণ সমাবেশে আসামিরা অতর্কিতভাবে হামলা করে। এ সময় আসামিদের ছোড়া এলোপাতাড়ি গুলিতে বাদী নিজে গুলিবিদ্ধ হন। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
এ ঘটনায় গত ২৯ এপ্রিল ভুক্তভোগী গণঅধিকার পরিষদের কর্মী বদরুল ইসলাম সায়মন বাদী হয়ে রাজধানীর পল্টন মডেল থানা হত্যাচেষ্টা মামলা করেন। এতে শেখ হাসিনাসহ ২৪৫ জনকে আসামি করা হয়।
মন্তব্য করুন
অর্থনীতিবিদ ও জনতা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবুল বারকাতকে এননটেক্স গ্রুপের নামে ২৯৭ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে করা মামলায় কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
শুক্রবার বিকেলে শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুয়েল রানার আদালত এই আদেশ দেন।
এদিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শাহজাহান মিরাজ আসামিকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তার জামিন চেয়ে শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষ এর বিরোধিতা করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তার জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শাহজাহান মিরাজ এ তথ্য নিশ্চিত করেন৷ তিনি বলেন, আসামির তিনদিনের রিমান্ড আবেদন ছিল। তবে এই কোর্টের রিমান্ড বিষয়ে শুনানি করার এখতিয়ার না থাকায় তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেওয়া হয়। পরবর্তীতে সিনিয়র আদালতে এই রিমান্ড বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) রাত সাড়ে ১১টার দিকে ধানমন্ডির ৩ নম্বর সড়ক এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
এর আগে এননটেক্স গ্রুপের নামে ২৯৭ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান এবং অধ্যাপক আবুল বারাকাতসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত ২০ ফেব্রুয়ারি মামলাটি দায়ের করেন দুদকের উপ-পরিচালক মো নাজমুল হোসাইন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে জনতা ব্যাংক থেকে ২৯৭ কোটি ৩৮ লাখ ৮৭ হাজার ২৯৬ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। আসামিদের বিরুদ্ধে ঋণের অর্থ সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তাদের যোগসাজশে জালিয়াতি ও মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। গভর্নর থাকাকালে আতিউর রহমান ও আবুল বারাকাত পরস্পর যোগসাজশে জালিয়াতির মাধ্যমে এননটেক্স গ্রুপের ২২টি প্রতিষ্ঠানকে ওই বিপুল পরিমাণ অর্থ ঋণ হিসেবে পাইয়ে দেন। পরবর্তী সময়ে আতিউর রহমান ও তার সহযোগীরা বিভিন্ন অনৈতিক কৌশল ব্যবহার করে সেই অর্থ আত্মসাৎ করেন।
মন্তব্য করুন
ডেস্ক রিপোর্ট:
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘বিদ্বেষমূলক বক্তব্য’ প্রচারের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন। 'বিদ্বেষমূলক' বক্তব্য সংক্রান্ত দেশি-বিদেশি আইনের ওপর শুনানি করে ট্রাইব্যুনাল এই আদেশ দেন। এ বিষয়ে প্রসিকিউশন টিমের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে।
এর আগে, বৃহস্পতিবার সকালে এই নিষেধাজ্ঞা চেয়ে ট্রাইব্যুনালে আবেদন করার কথা জানান প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আল নোমান। প্রসিকিউশনের মতে, 'তিনি (শেখ হাসিনা) যেসব বলছেন তা হেট স্পিচ। সেগুলো বন্ধের জন্যই এই আবেদন করা হয়েছে।'
শুনানির সময়, প্রসিকিউশন ট্রাইব্যুনালের সামনে 'বিদ্বেষমূলক বক্তব্য' সম্পর্কে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আইনসহ দেশি-বিদেশি আইন এবং সংজ্ঞা তুলে ধরেন। এর পাশাপাশি সম্প্রতি ফাঁস হওয়া শেখ হাসিনার কিছু ফোনালাপও ট্রাইব্যুনালকে অবহিত করা হয়। এরপর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেখ হাসিনার ‘বিদ্বেষমূলক বক্তব্য’ প্রচারে নিষেধাজ্ঞা দেন। আদালত, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব এবং বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) নির্দেশ দেন, যাতে এসব বক্তব্য সকল মাধ্যম থেকে সরিয়ে ফেলা হয়।
এছাড়া, প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম জানিয়েছেন, চলমান বা তদন্তাধীন কোনো মামলার আসামি বিদ্বেষমূলক কোনো বক্তব্য দিতে পারবেন না, যাতে মামলার তদন্ত ক্ষতিগ্রস্ত না হয় বা সাক্ষীরা ভীত না হন। সম্প্রতি বিভিন্ন মাধ্যমে শেখ হাসিনার বক্তব্য ও ফোনালাপ ফাঁস হয়েছে, যেখানে তিনি বলেছেন, ‘২৮৭টি মামলা হয়েছে, মানে ২৮৭ জনকে মার্ডার করার লাইসেন্স পেয়েছে। তোমাদের বাড়িঘর পোড়াচ্ছে, তাদের কি বাড়িঘর নেই?’ এসব বক্তব্য মূলত মামলার ভুক্তভোগী ও সাক্ষীদের হুমকি দিয়েছে।
তামিম আরও বলেন, ‘যেসব ভুক্তভোগী ও সাক্ষীরা আমাদের কাছে এসে জবানবন্দি দিয়েছেন, তাদের ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিতে হবে। শুধু তাই নয়, বিদ্বেষমূলক বক্তব্য সারা বিশ্বে ক্রিমিনাল অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়। যা বন্ধ করতে আমরা আবেদন করেছিলাম। ইতিমধ্যে যেসব বক্তব্য প্রচারিত হয়েছে, তা বন্ধ করতে ট্রাইব্যুনাল সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আদেশ দিয়েছেন।’
গত ১৭ অক্টোবর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির হতে নির্দেশ দেওয়া হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময়, জুলাই ও আগস্টে সংঘটিত গণহত্যার অভিযোগে বিচার কার্যক্রম শুরুর প্রথম দিনেই শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
মন্তব্য করুন
বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলায় কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেলেন ২৭ জন।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে তারা মুক্তি লাভ করেন বলে জানিয়েছেন কারা কর্তৃপক্ষ। এসময় কারা ফটকে তাদের আত্মীয় স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে সোমবার ৪০ আসামির জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দেন আদালত।
মুক্তি পাওদের মধ্যে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ১২ জন কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার পার্ট-১ থেকে পাঁচজন এবং কেন্দ্রীয় কারাগার পার্ট-২ থেকে ১০ জন।
কারা কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, আসামিপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গেল সোমবার কেরানীগঞ্জে অবস্থিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত বিশেষ আদালতের (প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ) বিচারক ইব্রাহীম মিয়া বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলায় ৪০ জনের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন। বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় জামিন পাওয়া ৪০ জনের মধ্যে বৃহস্পতিবার সকালে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার পার্ট-১ থেকে পাঁচজন, পার্ট -২ থেকে ১০ জন ও হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ১১ জন মুক্তি লাভ করেন। এছাড়া বুধবার এই ইউনিট থেকে আরও এক বিডিআর সদস্য জামিনে মুক্তি পান।
এর আগে হত্যা মামলায় খালাস পাওয়া ১৭৮ জন বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় জামিন পেয়েছিলেন। এ নিয়ে এ ঘটনায় মোট ২১৮ জন জামিন পেলেন। সাবেক বিডিআর সদস্য ও তার স্বজনরা জামিনে মুক্তি পেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।
কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগাের জেল সুপার মোহাম্মদ আল মামুন জানান, বন্দি ২৭ সাবেক বিডিআর সদস্যের জামিনের কাগজপত্র কারাগারে আসার পর কাগজ পত্র যাচাই বাছাই করে বৃহস্পতিবার সকালে তাদের জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়।
মন্তব্য করুন
ডেস্ক রিপোর্ট:
ঘড়ির কাঁটায় তখন সকাল ৯ টা। খাসকামরা থেকে বেরিয়ে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের এজলাসে পৌঁছান বিচারক।
বিচারকের ঠিক সামনেই ছিল আসামিদের কাঠগড়া। কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক, রাশেদ খান মেনন, শাজাহান খান, প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, জুনায়েদ আহমেদ পলক ও উপমন্ত্রী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব। তাদের সবার বাঁ হাতে ছিল হাতকড়া।
বুধবার সকালে আদালতকক্ষে বিচারের কার্যক্রম শুরু হলে এক পুলিশ কর্মকর্তা উচ্চস্বরে ডাকেন, ‘জনাব আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব’। তখন কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা জ্যাকব ডান হাত উঁচু করে সাড়া দেন।
এ সময় রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলিরা আদালতকে জানান, রাজধানীর রূপনগরে গত ২০ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শামীম হাওলাদার নামের এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এই হত্যা মামলার এক আসামি হিসেবে জ্যাকবকে রিমান্ডে নেওয়া জরুরি।
জ্যাকবের আইনজীবী রিমান্ডের বিরোধিতা করেন। এরপর জ্যাকব নিজেই আদালতে কথা বলেন।
তিনি বলেন, “মাননীয় আদালত, আমি ভোলার চরফ্যাশনের এমপি ছিলাম। আমি কখনো ঢাকায় রাজনীতি করিনি। জন্মের পর কখনো ঢাকার রূপনগরে যাইনি। অথচ আমার বিরুদ্ধে রূপনগর থানায় হত্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। এটি সম্পূর্ণ হয়রানিমূলক মামলা। আমি আদালতের কাছে ন্যায়বিচার চাই।”
উভয়পক্ষের বক্তব্য শোনার পর আদালত এই হত্যা মামলায় জ্যাকবকে তিন দিন রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দেন।
এরপর আনিসুল হকের রিমান্ড শুনানি শুরু হয়। রাষ্ট্রপক্ষ আদালতকে জানায়, রাজধানীর উত্তরার জসীমউদ্দীন সড়কে গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের দিন ফজলুল করিম নামের এক যুবককে গুলি করে হত্যা করা হয়। এই হত্যার অন্যতম আসামি আনিসুল। এ হত্যার রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি।
এ সময় আনিসুলের আইনজীবী রিমান্ডের বিরোধিতা করেন। তিনি আদালতকে বলেন, আনিসুল এই হত্যার ঘটনায় জড়িত নন।
আদালত উভয়পক্ষের বক্তব্য শোনার পর আনিসুলকে পাঁচ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন। তখন আনিসুল বিমর্ষ হয়ে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে ছিলেন।
আনিসুলের বিরুদ্ধে মোট ৫৫টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে ৭টি মামলায় এখন পর্যন্ত তার মোট ৪৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে।
জ্যাকব ও আনিসুলের রিমান্ড শুনানির সময় বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন কাঠগড়ার এক পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এক পর্যায়ে পুলিশ কর্মকর্তা ‘জনাব রাশেদ খান মেনন’, ‘জনাব শাজাহান খান’ ও ‘জনাব আনিসুল হক’ বলে ডাক দেন। তারা সাড়া দেন। তখন মোহাম্মদপুর থানার একটি হত্যা মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন আদালত।
সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নারী পুলিশ সদস্যরা সাবেক শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনিকে এজলাসে নিয়ে আসেন। মাথা থেকে হেলমেট খোলার পর দীপু মনির সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলেন কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা সালমান। তাদের মধ্যে ২-৩ মিনিট কথা হয়। এরপর পল্টন থানার একটি হত্যা মামলায় দীপু মনিকে গ্রেফতার দেখানো হয়। পরে দীপু মনির সঙ্গে কথা বলেন জুনায়েদ, মেনন ও আনিসুল।
এরপর মিরপুর থানার একটি হত্যা মামলায় কামাল আহমেদ মজুমদারকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
প্রায় ৪৫ মিনিট শুনানি শেষে বিচারক এজলাস ত্যাগ করেন।
শুনানির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আদালতে দেখা যায়, আনিসুল, মেনন, শাজাহানসহ অন্যরা প্রত্যেকে তাদের নিজ নিজ আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলছেন।
বিচারক এজলাস ত্যাগ করার পর প্রথমে মেননের মাথায় পুলিশের হেলমেট পরানো হয়। এরপর একে একে আনিসুল, শাজাহান, দীপু মনি ও জুনায়েদের মাথায় হেলমেট পরানো হয়। তারপর তাদের এজলাস কক্ষ থেকে নিয়ে যাওয়া হয় আদালতের হাজতখানায়।
বুধবার সকাল থেকে আদালত প্রাঙ্গণে পুলিশের পাশাপাশি সেনা সদস্যদের উপস্থিতি ছিল।
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে ঢাকাসহ সারা দেশে ২৫৩টি মামলা হয়েছে। সালমানের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে ৪৮টি। রাশেদ খান মেননের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে ২২টি। জুনাইদ আহমেদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে ৪৭টি। দীপু মনির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে ২০টি।
মন্তব্য করুন
পঞ্চদশ সংশোধনী মাধ্যমে সংবিধানের মৌলিক কাঠামোকে ধ্বংস করা হয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিলের প্রশ্নে রায় ঘোষণার সময় বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এই মন্তব্য করেন। রায় ঘোষণা এখনও চলমান রয়েছে।
এর আগে, বহুল আলোচিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলসহ বেশ কিছু বিষয় নিয়ে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী কেন অবৈধ হবে না, এ বিষয়ে রুল জারি করা হয়েছিল। আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টা ৫২ মিনিটে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরী রায় ঘোষণা শুরু করেন। রায়ের মূল অংশ পাঠ করেন বিচারপতি ফারাহ মাহবুব।
গত ৫ ডিসেম্বর হাইকোর্ট পঞ্চদশ সংশোধনী নিয়ে রুলের রায়ের জন্য আজকের দিন নির্ধারণ করেছিল। দীর্ঘ ২৩ কার্যদিবসের শুনানি শেষে হাইকোর্টের একই বেঞ্চ রায়ের জন্য এ দিন ধার্য করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদ উদ্দিন। রিটকারী সুজনের বদিউল আলমের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী ড. শরিফ ভূঁইয়া। বিএনপির পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট ফারজানা শারমিন পুতুল। জামায়াতের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির, ব্যারিস্টার এহসান সিদ্দিকী। ইনসানিয়াত বিপ্লবের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান, চার আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার জুনায়েদ আহমেদ চৌধুরী, ইন্টারভেনর হিসেবে শুনানি করেন ব্যারিস্টার হামিদুল মিসবাহ।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর বৈধতা নিয়ে রুলে বিএনপির পক্ষ থেকে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার পক্ষভুক্ত হন। এছাড়া ইনসানিয়াত বিপ্লব, গণফোরাম, চার আবেদনকারী রুলে ইন্টারভেনর হিসেবে পক্ষভুক্ত হন।
মন্তব্য করুন
রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে আসাদুল হক বাবু হত্যা মামলায় বেসরকারি টিভি চ্যানেল মাইটিভির চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন সাথীর পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
আজ সোমবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়া উদ্দিন আহমেদ শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
এদিন তাকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) খান মো. এরফান তার সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন।
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, মামলার এজাহারনামীয় ১ নং আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার আওয়ামী সরকারের মদদপুষ্ট, আজ্ঞাবহ হয়ে মাই টিভির দায়িত্বশীল চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক হয়ে মো. নাসির উদ্দিন সাথীর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ অংশগ্রহণে উসকানিমূলক বক্তব্য ও প্রচার কার্যক্রম চালিয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। তার এমন উসকানিমূলক কার্যক্রমে অনুপ্রাণিত হয়ে স্থানীয় আওয়ামী সন্ত্রাসী, রাজনৈতিক নেতা, কর্মী ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী নির্বিচারে গুলিবর্ষণে মামলার ডিসিস্ট আসাদুল হক বাবু মৃত্যুবরণ করে বলে তদন্তে প্রকাশ পায়। নাসির উদ্দিন সাথী মাই টিভির চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর পদে মহান সাংবাদিকতার পেশায় গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োজিত ও দায়িত্বে থেকে তার অনৈতিক প্রভাব ও প্রতিপত্তিতে দলীয় এবং ব্যক্তিগত হীনস্বার্থে তদানীন্তন আওয়ামী সরকারককে আজ্ঞাবহ হয়ে বিরোধী দল-মতকে প্রত্যাখ্যান করে উদ্দেশ্যমূলক হিংসাত্মক এহেন কার্যক্রম সংগঠিত করায় মামলার প্রকৃত ঘটনা, অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের পরিচয় শনাক্তকরণ ও রহস্য উদঘাটনের জন্য তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন। এ সময় আসামিপক্ষে রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে আবেদন করেন।
অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে রিমান্ডের এ আদেশ দেন। এর আগে রবিবার গুলশান থেকে নাসির উদ্দিন সাথীকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
মামলার সূত্রে জানা যায়, জুলাই আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ী থানাধীন পাকা রাস্তার ওপর আন্দোলনে অংশ নেন মো. আসাদুল হক বাবু।
দুপুর আড়াইটার দিকে আসামিদের ছোড়া গুলিতে গুলিবিদ্ধ হন আসাদুল। চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় গত বছরের ৩০ আগস্ট যাত্রাবাড়ী থানায় হত্যা মামলা করেন নিহতের বাবা জয়নাল আবেদীন। এ মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৫ জনকে আসামি করা হয়। মামলায় নাসির উদ্দিন ২২ নাম্বার এবং তার ছেলে তৌহিদ আফ্রিদি ১১ নম্বর এজাহারনামীয় আসামি।
মন্তব্য করুন
অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের (সাবেক এনআরবি গ্লোবাল) সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদারসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ পিছিয়ে আগামী ২৪ মে দিন ধার্য করেছেন আদালত।
বুধবার (১৭ মে) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের আদালতে মামলাটি সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ধার্য ছিল। এ দিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক মো. সালাহউদ্দিনকে জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। তবে এ দিন তার জেরা শেষ না হওয়ায় আগামী ২৪ মে পরবর্তী দিন ধার্য করেন আদালত।
দুদকের আইনজীবী মীর আহাম্মদ আলী সালাম বিষয়টি জানিয়েছেন।
পি কে হালদার ছাড়াও মামলার অন্য আসামিরা হলেন– পিকে হালদারের মা লীলাবতী হালদার, পূর্ণিমা রানী হালদার, উত্তম কুমার মিস্ত্রি, অমিতাভ অধিকারী, প্রীতিশ কুমার হালদার, রাজিব সোম, সুব্রত দাস, অনঙ্গ মোহন রায়, স্বপন কুমার মিস্ত্রি, অবন্তিকা বড়াল, শঙ্খ বেপারী, সুকুমার মৃধা ও অনিন্দিতা মৃধা। এদের মধ্যে অবন্তিকা, শঙ্খ, সুকুমার ও অনিন্দিতা কারাগারে আটক আছেন।
দুদকের অভিযোগপত্রে বলা হয়, পি কে হালদার নামে-বেনামে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ৬ হাজার ৭৯০ শতাংশ জমি কিনেছেন। এ সম্পদের বাজারমূল্য দেখানো হয়েছে ৩৯১ কোটি ৭৫ লাখ ৮১ হাজার ১২ টাকা। বর্তমানে এর বাজারমূল্য ৯৩৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে নিজের নামে জমি কিনেছেন ৪ হাজার ১৭৪ শতাংশ। এর দাম দলিলে দেখানো হয়েছে ৬৭ কোটি ৯৪ লাখ ২০ হাজার ৯৩০ টাকা। অথচ এ সম্পদের বর্তমান মূল্য ২২৮ কোটি টাকা। এছাড়া রাজধানীর ধানমন্ডিতে পি কে হালদারের নামে দুটি ফ্ল্যাট রয়েছে।
অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, পি কে হালদার তার নিকটাত্মীয় পূর্ণিমা রানী হালদারের নামে উত্তরায় একটি ভবন করেছেন। যার দাম ১২ কোটি টাকা। পূর্ণিমার ভাই উত্তম কুমার মিস্ত্রির নামে তেজগাঁও, তেজতুরী বাজার ও গ্রিন রোডে ১০৯ শতাংশ জমি কেনেন। যার বাজারমূল্য ২০০ কোটি টাকা। নিজের কাগুজে কোম্পানি ক্লিউইস্টোন ফুডসের নামে কক্সবাজারে ২ একর জমির ওপর নির্মাণ করেন ৮তলা হোটেল (র্যাডিসন নামে পরিচিত)। যার আর্থিক মূল্য এখন ২৪০ কোটি টাকা। এছাড়া পি কে হালদারের খালাতো ভাই অমিতাভ অধিকারী ও অনঙ্গ মোহন রায়ের নামে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে ৪০৪ শতাংশ জমি কিনেছেন তিনি, এর বর্তমান দাম ১৬৭ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) ও কানাডিয়ান ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের তথ্যের বরাত দিয়ে দুদক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, পি কে হালদার ২০১২ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে ভাই প্রীতিশ হালদারের কাছে ১ কোটি ১৭ লাখ ১১ হাজার ১৬৪ কানাডীয় ডলার পাচার করেন। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ৮০ কোটি টাকারও বেশি।
এসব অনিয়মের অভিযোগে ২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি পি কে হালদারের বিরুদ্ধে প্রায় ২৭৫ কোটি টাকা অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের অভিযোগে মামলা করেন দুদকের উপ-পরিচালক সালাউদ্দিন। এরপর তদন্ত করে দুদক পি কে হালদারসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়।
মন্তব্য করুন
ডেস্ক রিপোর্টঃ
রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় গ্রেপ্তার ইসকনের সাবেক নেতা ও সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন শুনানি পিছিয়ে আগামী ২ জানুয়ারি ধার্য করেছেন আদালত। শুনানির জন্য আসামি পক্ষের কোনো আইনজীবী উপস্থিত না থাকায় আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ মো. সাইফুল ইসলামের আদালত এই সিদ্ধান্ত দেন।
এর আগে মঙ্গলবার সকাল থেকে শুনানিকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম আদালতপাড়ায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের কড়া নিরাপত্তা দিতে দেখা গেছে।এ ছাড়া প্রবেশমুখগুলোতে জনসাধারণের প্রবেশ সীমিত করা হয়েছে। প্রয়োজন ছাড়া কাউকে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
এদিকে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার প্রতিবাদে আজও বিক্ষোভ হয়েছে চট্টগ্রামের আদালতপাড়ায়। মঙ্গলবার বেলা পৌনে ১১টায় একদল আইনজীবী আদালত প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় তারা আলিফ হত্যার বিচার চান। আইনজীবীরা আলিফ হত্যাকাণ্ড ও আদালত প্রাঙ্গণে হামলা ভাঙচুরের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় চিন্ময়কে আসামি করার দাবি জানান।
উল্লেখ্য, গত ২৬ নভেম্বর চিন্ময়ের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন আদালত। তাকে কারাগারে নেওয়ার সময় মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভরত হাজারখানেক অনুসারীর সঙ্গে সংঘর্ষ হয় পুলিশের। পরে ত্রিমুখী সংঘর্ষে কুপিয়ে হত্যা করা হয় সাইফুল ইসলাম আলিফ নামে এক আইনজীবীকে। সম্প্রতি যিনি সরকারি কৌঁসুলি হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিলেন।
আইনজীবী আলিফ খুন এবং আদালত প্রাঙ্গণে পুলিশের ওপর হামলা-গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগে পৃথক দুটি মামলা করেন তার বাবা ও ভাই। বাবার করা হত্যা মামলায় ৩১ জনকে আসামি করা হলেও ভাইয়ের করা মামলায় এজাহারনামীয় আসামি করা হয় ১১৬ জনকে। সেই মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণের আইনজীবী শুভাশিস শর্মাও ৩৩ নম্বর আসামি।
এ ছাড়া তার অনুসারী আরও ৫০ জনের অধিক আইনজীবীকে আসামি করা হয়েছে। মোট পাঁচটি মামলায় এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার ৩৯ জন। এর মধ্যে গতকাল সোমবার আইনজীবী সাইফুল হত্যায় ৯ জনকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছেন আদালত।
মন্তব্য করুন