

গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারত ফেরত না দিলে সেটি প্রত্যর্পণ চুক্তির লঙ্ঘন হবে, এমন মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) সচিবালয়ে সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ আইনসহ অন্যান্য সমসাময়িক বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এই মন্তব্য করেন।
শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে ফেরত আনার বিষয়ে অগ্রগতি কতদূর জানতে চাইলে তিনি বলেন, "আমরা প্রত্যর্পণের জন্য চিঠি পাঠিয়েছি। এরপর ভারত যদি শেখ হাসিনাকে ফেরত না নেয়, তবে সেটি বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের প্রত্যর্পণ চুক্তির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন হবে। এই ব্যাপারে আমরা কী পদক্ষেপ নেবো, তা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে নির্ধারিত হবে।"
তিনি আরও বলেন, "ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। আমরা যা কিছু করণীয়, তা করেছি এবং আরও কিছু পদক্ষেপ নিতে হলে আমরা তা প্রয়োজনে গ্রহণ করবো।"
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে পদত্যাগ করে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। এরপর তার বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে একাধিক মামলা দায়ের হয়। এদিকে, তাকে দেশে ফিরিয়ে বিচারের মুখোমুখি করার জন্য অন্তর্বর্তী সরকার উদ্যোগী হয়ে রয়েছে।
গত ২৩ ডিসেম্বর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, শেখ হাসিনাকে ফেরত আনার বিষয়ে ভারতকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল ওইদিনই কূটনৈতিক চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তবে, শেখ হাসিনাকে ফেরত দেওয়ার বিষয়ে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে গত ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআইকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের সাবেক হাইকমিশনার মহেশ সাচদেব বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের সরকার কর্তৃক প্রত্যর্পণ অনুরোধের বিরুদ্ধে আদালতে যেতে পারেন।
তিনি আরো বলেন, "যেমন ইউরোপীয় কয়েকটি দেশ ভারতের প্রত্যর্পণ অনুরোধ বিভিন্ন শর্তে প্রত্যাখ্যান করেছে, শেখ হাসিনাও একইভাবে বলতে পারেন যে, তিনি তার দেশের সরকারের ওপর আস্থা রাখেন না এবং তার বিরুদ্ধে অবিচারের আশঙ্কা রয়েছে।"
মন্তব্য করুন


ডেস্ক রিপোর্টঃ
ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এসময়ে নতুন ডেঙ্গুরোগী শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ১৩৯ জন। এতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৫৭ জন এবং শনাক্ত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫২ হাজার ৫৮ জনে।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক নিয়মিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া সাতজনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে চারজন, খুলনা বিভাগে দুজন এবং বরিশাল বিভাগে একজন রয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তদের মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ২৬২ জন ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন ১৩০ জন। এর বাইরে (সিটি করপোরেশন বাদে) ঢাকা বিভাগে ২১১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৪৯ জন, খুলনা বিভাগে ১০১ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৩১ জন, বরিশাল বিভাগে ৭৭ জন, রংপুরে ২৪ জন, রাজশাহী বিভাগে ৫১ জন ও সিলেট বিভাগে তিনজন বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
প্রতি বছর বর্ষাকালে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেয়। ২০২৩ সালের জুন মাস থেকে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করে। গেল বছর দেশে ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন। এর মধ্যে ঢাকায় এক লাখ ১০ হাজার ৮ জন এবং ঢাকার বাইরে চিকিৎসা নিয়েছেন দুই লাখ ১১ হাজার ১৭১ জন।
মন্তব্য করুন


নির্বাচন কমিশনের কাছে ২০২৪ সালের আয় ও ব্যয়ের হিসাব জমা দিয়েছে বিএনপি। এতে আয় হিসেবে দেখানো হয়েছে ১৫ কোটি ৬৫ লাখ ৯৪ হাজার ৮৪২ টাকা। এছাড়া ব্যয় দেখানো হয়েছে ৪ কোটি ৮০ লাখ ৪ হাজার ৮২৩ টাকা। বর্তমানে উদ্বৃত্ত আছে ১০ কোটি ৮৫ লাখ ৯০ হাজার ১৯ টাকা।
আজ রবিবার সকালে নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদের কাছে আয় ব্যয়ের হিসাব জমা দিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী। হিসাব জমা দেওয়া শেষে এ তথ্য জানান তিনি।
রিজভী জানায়, সদস্যদের মাসিক চাঁদা, বই-পুস্তক বিক্রয়, ব্যাংক সুদ, এককালীন অনুদান থেকে আয় হয়েছে। আর ব্যয় হয়েছে ব্যক্তিগত সহযোগিতা, দুর্যোগকালীন সহযোগিতা, কর্মসূচি বাস্তবায়ন, লিফলেট, পোস্টার ইত্যাদি ছাপানোয়।
এ সময় তিনি বলেন, আগে নির্বাচন কমিশন প্রাতিষ্ঠানিক স্বাধীনতা হয়েছিল, নির্বাহী বিভাগের অধীনে ছিল। ফ্যাসিবাদের অস্ত্র হয়ে উঠেছিল, দিনের ভোট রাতে করেছিল। একটি লুটের নির্বাচন করে কমিশন বৈধতা দিয়েছিল। এ ছাড়া মেরুদণ্ডহীন, চাকরিলোভী লোক দিয়ে ইসি গঠন হয়েছিল।
রিজভী বলেন, শেখ হাসিনার পদলেহী প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছিল নির্বাচন কমিশন। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের প্রতি প্রত্যাশা তারা দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখবে। অবাধ, সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করবে। নির্বাচন নিয়ে যেকোনো ষড়যন্ত্র প্রতিহত করবে ইসি। আস্থার প্রতিষ্ঠান হবে নির্বাচন কমিশন, বিএনপি এটি প্রত্যাশা করে।
মন্তব্য করুন


ডেস্ক রিপোর্ট:
বাংলাদেশের চলমান সংস্কার কার্যক্রমে সমর্থন জানিয়ে এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়তার উদ্দেশ্যে জাপানি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে তাদের অবস্থান অব্যাহত রাখবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি।
বুধবার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাৎকালে জাপানি রাষ্ট্রদূত এই কথা বলেন।
রাষ্ট্রদূত কিমিনোরি অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বের প্রশংসা করে বলেন, জাপান সরকার বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও মজবুত করতে শান্তি, স্থিতিশীলতা, অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং জনগণের মধ্যে সম্পর্ক— এই তিনটি স্তম্ভের ওপর ভিত্তি করে কাজ করবে। তিনি বলেন, “আমরা এই তিনটি স্তম্ভের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করব।”
তিনি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নির্বাচনি ব্যবস্থাসহ অন্যান্য সংস্কার কার্যক্রমে জাপানের ‘দৃঢ় সমর্থন’ পুনর্ব্যক্ত করেন।
অধ্যাপক ইউনূস উভয় দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নে অবদান রাখার জন্য জাপানের বিদায়ী রাষ্ট্রদূতের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি দুই দেশের সম্পর্কের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, “এই সম্পর্ক সবসময়ই শক্তিশালী ছিল।”
সরকার বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার কার্যক্রম পরিচালনা করছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশে আরও জাপানি বিনিয়োগের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “বাংলাদেশে জাপানি বিনিয়োগকারীদের উপস্থিতি আমাদের জন্য ইতিবাচক বার্তা দেয়।”
জাপানি রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, “জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশ থেকে কোনো জাপানি কোম্পানি চলে যায়নি। তারা এখানে থাকতে আগ্রহী।”
তিনি নিক্কেইয়ের বার্ষিক সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে আমন্ত্রণ জানান। সেখানে জাপানের প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য রাখবেন। রাষ্ট্রদূত বলেন, ওই সম্মেলনে অধ্যাপক ইউনূস জাপানের শীর্ষ কোম্পানির প্রধান নির্বাহীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারেন এবং তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানাতে পারবেন।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজনে প্রধান উপদেষ্টার পদক্ষেপের প্রশংসা করে জাপানি রাষ্ট্রদূত বলেন, টোকিও এই বৈঠককে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করে।
অধ্যাপক ইউনূস মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে জাতিসংঘের গ্যারান্টিযুক্ত একটি নিরাপদ এলাকা তৈরির আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন, যেখানে সংঘাত শেষ হওয়ার পর বাস্তুচ্যুত জনগণের পুনর্বাসন হতে পারে এবং তারা তাদের বাড়িতে ফিরতে পারবে।
সাক্ষাৎকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক ও সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন


বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) মিটারের নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি টাকা আদায় করলে জরিমানা বা কারাদণ্ডের নির্দেশনা দিয়েছিল। তবে পরবর্তীতে এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে বিআরটিএ এবং সিদ্ধান্তটি বাতিল করে সংস্থাটি।
রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ৪ স্ট্রোক থ্রি-হুইলার যান সম্পর্কিত বিআরটিএ কর্তৃক ইস্যুকৃত সাম্প্রতিক নির্দেশনাটি বাতিল করা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট সবাইকে অবহিত করা হয়েছে এবং অবরোধ প্রত্যাহার করে যান চলাচলে কোনো রকম প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করার জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়েছে।
এর আগে সকাল থেকেই রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় সিএনজি চালকদের অবরোধের কারণে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছিল। মিটারের ভাড়া ইস্যুতে সিএনজি চালকরা সড়ক অবরোধ করে যান চলাচলে বাধা দিচ্ছিলেন। রাজধানীর রামপুরা, মিরপুর ১৪ ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কসহ বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অবরোধের খবর পাওয়া যায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, অবরোধের কারণে রাজধানীজুড়ে প্রচণ্ড যানজট সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে অফিসগামী মানুষ, শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। অনেকেই গন্তব্যে পৌঁছাতে দেরি করছেন।
আন্দোলনকারীরা বলছেন, মিটারের ভাড়া বৃদ্ধি এবং মিটারে না চললে জরিমানার আইন বাতিল করতে হবে। বিআরটিএ এ সিদ্ধান্ত বাতিল না করা পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলতে থাকবে।
গত ১০ ফেব্রুয়ারি মিটারের নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি টাকা আদায় করলে চালকদের জরিমানা বা কারাদণ্ডের নির্দেশনা দেয় বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ)। নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়, সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮-এর ৩৫(৩) ধারা অনুযায়ী রুট পারমিটপ্রাপ্ত অটোরিকশাগুলো যেকোনও গন্তব্যে যাত্রী নিতে বাধ্য। চালকরা মিটারের চেয়ে বেশি ভাড়া দাবি বা আদায় করতে পারবেন না। যদি কেউ এই নিয়ম লঙ্ঘন করেন, তাহলে আইনের ৮১ ধারা অনুযায়ী সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, ছয় মাসের কারাদণ্ড বা উভয় দণ্ড দেওয়া হবে। এ ছাড়া চালকের লাইসেন্স থেকে এক পয়েন্ট কেটে নেওয়ার বিধান রয়েছে।
বিআরটিএ’র তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে রাজধানী ঢাকায় নিবন্ধিত অটোরিকশা রয়েছে ২০ হাজার ৮৯৪টি। ২০১৫ থেকে ২০২৪ সালের (১০ বছর) মধ্যে সবচেয়ে বেশি অটোরিকশা নিবন্ধন পেয়েছে ২০১৯ সালে। সে বছর নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে ৬ হাজার ৮৩৯টি অটোরিকশা। তার আগের বছর ২০১৮ সালে ৫ হাজার ৬৩৭টি অটোরিকশা নিবন্ধন দেওয়া হয়।
মন্তব্য করুন


অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আগামী সাধারণ নির্বাচনের জন্য দুটি সম্ভাব্য সময়সীমা রয়েছে—একটি ২০২৫ সালের ডিসেম্বর এবং অন্যটি ২০২৬ সালের মাঝামাঝি। তবে চূড়ান্ত তারিখ নির্ভর করবে জনগণের চাওয়া সংস্কারের মাত্রার ওপর।
শনিবার ঢাকার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ব্রিটিশ পার্লামেন্ট সদস্য রূপা হকের সঙ্গে আলোচনার সময় ড. ইউনূস এ মন্তব্য করেন। আলোচনায় নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ ও আগাম সংস্কারমূলক উদ্যোগ নিয়ে কথা হয়।
ড. ইউনূস বলেন, “বাংলাদেশের পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হবে। গত তিনটি নির্বাচনে দেশের মানুষ ভোট দিতে পারেনি। সেই সময় ভুয়া সংসদ, ভুয়া এমপি এবং ভুয়া স্পিকারের মাধ্যমে দেশ পরিচালিত হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “দেশের জনগণ তাদের কণ্ঠ ফিরে পেয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে তাদের কণ্ঠস্বর জোরপূর্বক দমন করা হয়েছিল। জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্যই এই অন্তর্বর্তী সরকার কাজ করছে।”
ব্রিটিশ এমপি রূপা হক বাংলাদেশে আসন্ন নির্বাচন, অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার প্রক্রিয়া এবং রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা সম্পর্কে জানতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “নতুন বাংলাদেশের ইতিবাচক পরিবর্তন দেখে আমি খুবই উৎসাহিত।”
রূপা হক আলোচনায় উল্লেখ করেন, কেন গত জুলাই মাসে জনগণের বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়েছিল এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে ঘটে যাওয়া নিপীড়নের ঘটনাগুলোও উঠে আসে। তিনি বলেন, “ক্ষমতাসীন সরকারের বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভই গণঅভ্যুত্থানের মূল কারণ।”
আলোচনার শেষে রূপা হক বলেন, “আমি আগামী সাধারণ নির্বাচন পর্যবেক্ষণে বাংলাদেশে আবারও আসতে আগ্রহী।” সাক্ষাৎকালে ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনের ডেপুটি হাইকমিশনার ও ডেভেলপমেন্ট ডিরেক্টর জেমস গোল্ডম্যান উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন


বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার সামান্য উন্নতি হলেই পরিবারের সদস্যরা তাকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন বলে জানিয়েছেন তারেক রহমানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন।
শনিবার (২৯ নভেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এ কথা জানান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের এই উপদেষ্টা।
মাহদী আমিন লিখেছেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া বর্তমানে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি থাকলেও তার চিকিৎসা পরিচালিত হচ্ছে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে। লন্ডন থেকে সার্বক্ষণিকভাবে চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন তারেক রহমান ও তার স্ত্রী এবং খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. জুবাইদা রহমান।’
তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডে গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে ডা. জুবাইদা রহমান দেশ-বিদেশের চিকিৎসকদের সঙ্গে সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করছেন। মায়ের চিকিৎসায় যেন কোনো বিলম্ব বা সীমাবদ্ধতা না থাকে সে জন্য সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে প্রতিটি পদক্ষেপ তদারকি করছেন তারেক রহমান।’
মাহদী আমিন বলেন, ‘হাসপাতালে নেত্রীর শারীরিক অবস্থার খবর নিতে প্রতিদিন বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী ভিড় করলেও ইনফেকশনের ঝুঁকির কারণে কাউকে সিসিইউতে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। দূর থেকেই মানুষ ভালোবাসা ও উদ্বেগ প্রকাশ করছেন।’
তিনি আরো লিখেছেন, ‘খালেদা জিয়ার কিছুটা শারীরিক উন্নতি হলে তাকে লন্ডনে নেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে লন্ডনের সেই হাসপাতাল ও চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে, যাদের তত্ত্বাবধানে চলতি বছরের শুরুতে চার মাস চিকিৎসা নিয়ে খালেদা জিয়া উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নতি লাভ করেছিলেন। পাশাপাশি একটি সর্বাধুনিক প্রযুক্তিসজ্জিত বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থার উদ্যোগও চলছে।’
তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘দেশবাসীর দোয়া ও ভালোবাসায় বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার দ্রুত উন্নতি হবে। আধুনিক চিকিৎসা শেষে তিনি আবারও দেশের মানুষকে অনুপ্রাণিত করবেন, নেতৃত্ব দেবেন এবং জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার ভূমিকা রাখবেন।’
মন্তব্য করুন


‘জুলাই গণহত্যা’ মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধান অভিযুক্ত করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করেছে প্রসিকিউশন টিম। এর মধ্যে দিয়ে জুলাই গণহত্যার বিচার শুরু হলো।
চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম রোববার দুপুর ১২টার পর ট্রাইবুনালে অভিযোগ দাখিল করেন। এ বিষয়ে শুনানি সরাসরি সম্প্রচার করা হয় বাংলাদেশ টেলিভিশনে।
শেখ হাসিনা ছাড়াও এ মামলার অপর দুই আসামি হলেন- তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুন।
জুলাই-আগস্টজুড়ে সারা দেশে যে গণহত্যা হয় তাতে শেখ হাসিনাকে প্রধান নির্দেশদাতার দায়ে গত ১২ মে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দাখিল করে তদন্ত সংস্থা।
আসাদুজ্জামান খান কামাল ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুনের বিরুদ্ধেও আনা হয় পাঁচটি অভিযোগ।
এর আগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম বলেন, আমরা বিচারপ্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। ডিসেম্বরের মধ্যে জুলাই আগস্টের হত্যাযজ্ঞের বিচার দৃশ্যমান হবে। এ সময়ে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখা যাবে। বিচার এমনভাবে করা হবে কেউ যেন মান নিয়ে প্রশ্ন তুলতে না পারে।
শেখ হাসিনাকে ‘গুম ও আয়নাঘরের নিউক্লিয়াস’ বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিচারের কাজ পুরোদমে এগোচ্ছে। তবে তদন্ত শেষ করতে যুক্তিসংগত সময় লাগবে।
সপ্তাহ দেড়েক আগে এক সংবাদ সম্মেলনে তাজুল ইসলাম জানায়, জুলাইয়ে সংগঠিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ‘উসকানিদাতা’ হিসেবে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এক নম্বর অভিযোগ আনা হয়েছে।
মন্তব্য করুন


নির্বাচনের আগে ভারি অস্ত্র উদ্ধারের অভিযান চলমান আছে। এ ব্যাপারে সরকারের কোনো ব্যর্থতা নেই বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে পূর্বাচলে ফায়ারসার্ভিসের ট্রেনিং গ্রাউন্ডে ভলান্টিয়ার সম্মাননা অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, জনগণকে সেবা দেয়ার জন্য এই আইন করা হয়েছে। এতে বাহিনীগুলোর কোনো আপত্তি থাকলে তা তারা জানাতে পারে। এ সময় বিডিআর বিদ্রোহের তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে প্রশ্ন করলে বিষয়টি এড়িয়ে যান তিনি।
তিনি আরও বলেন, দুর্যোগ মোকাবেলায় ৫৫ হাজার ভলান্টিয়ারকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। যেকোনো সময় ফায়ার সার্ভিসের পাশে তারা থাকবে। ভলান্টিয়ারদের আরও কিছু সুযোগ সুবিধা দেওয়া যায় কি না সেই বিষয়ে সরকার ভাবছে।
এ সময় কাজে বিশেষ অবদান রাখার জন্য ফায়ার সার্ভিসের ২২ জন সদস্যকে সম্মাননা দেওয়া হয়।
মন্তব্য করুন


একটি মহল খাগড়াছড়ি পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, একটি মহল শান্তিপূর্ণভাবে যাতে দুর্গাপূজা না হয়, সেই চেষ্টা চালাচ্ছে। এই মহলই খাগড়াছড়িতে এসব করছে। ভারত বা ফ্যাসিস্টদের ইন্ধনে এই ঘটনা ঘটছে। এই ঘটনা যাতে না ঘটে, সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
সোমবার রাজধানীর রমনায় ডিএমপির পাঁচটি থানার ভবন নির্মাণকাজের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দাবি, দেশে দুর্গাপূজা যেন উৎসবমুখর না হয়, সে জন্যই খাগড়াছড়িতে এমন ঘটনা ঘটানো হয়েছে।
তিনি বলেন, খাগড়াছড়িসহ পার্বত্য অঞ্চলে অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে আটকা পড়া পর্যটকদের বেশির ভাগকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। খাগড়াছড়ি পরিস্থিতি এখন সন্তোষজনক।
দেশে ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা শুরু হয়েছে। এই উৎসবের সময় কেউ যেন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না করে এবং পূজা যেন নির্বিঘ্নে আয়োজিত হয়, এ জন্য সবাইকে সহায়তা করার আহ্বান জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
মন্তব্য করুন


দেশের বিপদের সময় সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়ানো গুজব বা অপতথ্যে কান না দিতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন।
তিনি বলেন, দুর্ঘটনাস্থলে অশান্তি বিরাজ করছে এটা দুঃখজনক। এখানে লুকানোর বা গোপন করার কিছুই নেই। কার কাছে গোপন করবো। আমরা সবাই দেশের মানুষ।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলামের জানাজা শেষে মিডিয়া ব্রিফিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। কুর্মিটোলায় বীর উত্তম এ কে খন্দকার বিমান বাহিনী ঘাঁটিতে ওই ব্রিফিং হয়।
দেশবাসীর উদ্দেশে বিমান বাহিনী প্রধান বলেন, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের জন্য বিমান বাহিনী গুরুত্বপূর্ণ। দয়া করে গুজব ছড়িয়ে দেশের সার্বভৌমত্বের এই স্তম্ভকে দুর্বল করে দেবেন না।
হতাহতের বিষয়ে যখনই কোন তথ্য পাওয়া যাচ্ছে তা আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) মাধ্যমে প্রকাশ করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, বিমান রক্ষণাবেক্ষণে বিমান বাহিনী কোনো আপোষ করে না। বিমান সাধারণত সহজে পুরোনো হয় না। প্রতিটি বিমানের একটি লাইফ টাইম আছে। এক যুগ, দুই যুগ ব্যাপার না। বিষয় হলো রক্ষণাবেক্ষণ। আমাদের রক্ষণাবেক্ষণ সবসময় ভালো হয়। এগুলো আমরা ভালোভাবেই মেরামত করি। প্রযুক্তি হয়তো পুরোনো হতে পারে, কিন্তু এই বিমানগুলো পুরোনো নয়।
তিনি আরও বলেন, বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা তদন্ত করে বের করবে কি ঘটেছিল। কোনো ভুল ত্রুটি থাকলে সে অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা নেব।
বিমানটিকে একটি খালি জায়গায় নেয়ার জন্য পাইলট তৌকির ইসলাম সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছিলেন বলে উল্লেখ করেন বিমান বাহিনী প্রধান।
তিনি বলেন, তিনি (তৌকির) তার জীবন উৎসর্গ করেছেন।
তিনি আরও বলেন, গতকাল থেকেই দেশের এই বিপদের সময় আমাদের প্রধান উপদেষ্টা ও অন্যান্য উপদেষ্টারা, রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, চিকিৎসকবৃন্দ, ফায়ারসার্ভিস, স্বেচ্ছাসেবী, বিভিন্ন সেবাদানকারী সংস্থা, সাধারণ শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও সাধারণ জনগণ কাঁধে কাধ মিলিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছে।
মন্তব্য করুন