আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আনুষ্ঠানিকভাবে রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইসির রোডম্যাপ অনুযায়ী চলতি বছরের ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে তফসিল এবং ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে এ রোডম্যাপ ঘোষণ করেন ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ, ভোটার তালিকা চূড়ান্ত, রাজনৈতিক দল নিবন্ধন ও দেশীয় পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন চূড়ান্ত করাসহ ২৪টি গুরুত্বপূর্ণ কার্যাবলি প্রাধান্য দিয়ে রোডম্যাপ ঘোষণা করে ইসি। নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত রোডম্যাপ অনুযায়ী সংসদ নির্বাচন হবে ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে এবং তফসিল ঘোষণা হবে ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে।
ইসি রোডম্যাপে জানায়, তফসিল ঘোষণার দুই মাস আগে হেলিকপ্টার সহায়তার প্রয়োজন হবে এমন ভোটকেন্দ্র বাছাই করে সম্ভাব্য ভোটকেন্দ্র, কক্ষ সংখ্যা, কাছের হেলিপোর্ট, যাত্রা শুরু ও শেষ এবং প্রাসঙ্গিক অন্যান্য তথ্য জানানোর জন্য জেলা নির্বাচন অফিসার, রাঙ্গামাটি, বান্দরবান এবং খাগড়াছড়িকে নির্দেশনা দেওয়া হবে।
এছাড়া তফসিল ঘোষণার ১০ দিন আগে কাছের টেইক অব ও ল্যান্ডিং স্টেশন নির্দিষ্ট করে সম্ভাব্য ভোটকেন্দ্র ও কক্ষ সংখ্যার ভিত্তিতে যাতায়াতের জন্য ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নির্ধারণ করে হেলিকপ্টার সহায়তা সংক্রান্ত প্রস্তাবনা প্রস্তুত করতে হবে।
মন্তব্য করুন
ডেস্ক রিপোর্ট:
ড. মুহাম্মদ ইউনূস, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, বলেছেন যে তিনি রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার বা কোনো রাজনৈতিক দল গঠনের ইচ্ছা পোষণ করেন না। তিনি যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ফিনান্সিয়াল টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, তার সরকার এখনো নির্বাচনের রূপরেখা চূড়ান্ত করেনি। সাক্ষাৎকারটি বুধবার (৩০ অক্টোবর) প্রকাশিত হয়েছে।
তিনি বলেন, "আমাদের কাজ হলো সবকিছু স্বাভাবিক করা এবং প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করা। নির্বাচনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হলে আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবো।"
ড. ইউনূস আওয়ামী লীগের প্রতি কঠোর মনোভাব প্রকাশ করে বলেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগে ফ্যাসিবাদের সব বৈশিষ্ট্য দেখা গেছে। তিনি দাবি করেন, বাংলাদেশে তাদের কোনো স্থান নেই।
ফিনান্সিয়াল টাইমস জানায়, শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. ইউনূসের এই বক্তব্য থেকে বোঝা যায়, তার নেতৃত্বাধীন সরকার শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের প্রতি কঠোর অবস্থান নিয়েছে। এছাড়া, তিনি উল্লেখ করেন, সরকার শেখ হাসিনাকে ভারতের কাছ থেকে ফেরত চাইবে না, যাতে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা না বাড়ে।
ড. ইউনূস আরও বলেন, "আওয়ামী লীগ দেশের জনগণের অধিকার কেড়ে নিয়েছে এবং প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করেছে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় কোনো ফ্যাসিবাদী দলের অবস্থান থাকার প্রয়োজন নেই।"
দেশের বিরোধী রাজনৈতিক দল ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো দীর্ঘদিন ধরেই শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে নির্বাচন কারচুপি ও বিচারবহির্ভূত হত্যার অভিযোগ করে আসছে। শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতি পরবর্তী সময়ে দেশে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করার দাবিও উঠেছে।
ড. ইউনূস বলেন, "আওয়ামী লীগ ভেঙে যেতে পারে বলে আমার ধারণা। তবে অন্তর্বর্তী সরকার তাদের ভাগ্য নির্ধারণ করবে না। তাদের রাজনৈতিক অবস্থান নির্ধারণ এবং ভবিষ্যতে তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে কিনা, সেই সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে নেওয়া হবে।"
ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কে সাম্প্রতিক অবনতির বিষয়ে তিনি বলেন, "আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ের পর আমরা ভারতের কাছে শেখ হাসিনাকে ফেরত চাইতে পারি। তবে রায় ঘোষণার আগে এই পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজন নেই।"
ড. ইউনূস বলেন, "আমাদের প্রতিবেশী সম্পর্ক থাকা প্রয়োজন। ভারত যদি বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রকল্পে সমর্থন দেয়, তবে তা উভয় দেশের জন্যই উপকারী হবে।"
মন্তব্য করুন
ঢাকার উত্তরার দিয়াবাড়ির মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের স্থায়ী ক্যাম্পাসে বিমানবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় হতাহতদের প্রকৃত সংখ্যা নিরূপণ এবং আহত, নিহত ও নিখোঁজদের নাম-ঠিকানাসহ তালিকা তৈরিতে ছয় সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ।
দুর্ঘটনার তীব্রতায় তাৎক্ষণিকভাবে সঠিক তথ্য নিশ্চিত করা না গেলেও, বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে থাকা বহু মানুষ হতাহত হয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জিয়াউল আলমকে সভাপতি করে গঠিত এই কমিটিকে তিন কর্মদিবসের মধ্যে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন—উপাধ্যক্ষ (প্রশাসন) মো. মাসুদ আলম, প্রধান শিক্ষিকা খাদিজা আক্তার, কো-অর্ডিনেটর লুৎফুন্নেসা লোপা, অভিভাবক প্রতিনিধি মনিরুজ্জামান মোল্লা (শিক্ষার্থী: যাইমা জাহান, চতুর্থ শ্রেণি) এবং দ্বাদশ শ্রেণির দুই শিক্ষার্থী—মারুফ বিন জিয়াউর রহমান ও মো. ভাসনিম ভূঁইয়া প্রতিক। কমিটিকে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে সরাসরি ঘটনাস্থল পরিদর্শন, সংশ্লিষ্ট পরিবারদের সঙ্গে যোগাযোগ এবং নিশ্চিত তথ্য যাচাই করে তালিকা প্রস্তুত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, কমিটির প্রতিবেদনটি শুধু অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনার জন্য নয়, প্রয়োজনে সরকার, উদ্ধারকারী সংস্থা ও অন্যান্য সহায়তাকারী কর্তৃপক্ষের কাছেও হস্তান্তর করা হবে। ইতোমধ্যে অধ্যক্ষের স্বাক্ষরে কমিটি গঠনের প্রজ্ঞাপন ই-মেইলের মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠানো হয়েছে এবং সেই অনুযায়ী কাজও শুরু করেছে সদস্যরা।
এছাড়া, এই কমিটি ছাড়াও দুর্ঘটনার সার্বিক দিক, উদ্ধার ও চিকিৎসা সহায়তা, অবকাঠামোগত ক্ষতি এবং নিরাপত্তা ঘাটতির বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণের জন্য আলাদাভাবে প্রশাসনিক কর্মকর্তারা কাজ করছেন বলে জানা গেছে।
গত সোমবার দুপুরে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রাথমিক শাখায় বিমানবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। এতে বহু শিক্ষার্থী হতাহত হন।মর্মান্তিক এই ঘটনার পরদিন রাষ্ট্রীয়ভাবে শোক পালন করা হয়।
মন্তব্য করুন
ডেস্ক রিপোর্টঃ
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগ চায় মন্তব্য করে দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক আব্দুল হালিম বলেছেন, জামায়াতে ইসলামী রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগ চায়। আশা করি অন্তর্বর্তী সরকার যত দ্রুত সম্ভব মৌলিক সংস্কার শেষ করে নির্বাচন দেবে।
শনিবার (২৬ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় তিনি এ তথ্য জানান।
আব্দুল হালিম বলেন, বিগত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগের আমলে জামায়াতের ১১ জন শীর্ষ নেতাকে হত্যা করা হয়েছে, ৩০ জন ক্রসফায়ারের শিকার হয়েছেন, ১ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। পতিত আওয়ামী লীগ একেক দিন একের রূপে ষড়যন্ত্র করছে। তাদের সব ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে। সম্মিলিত প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে দলটির পতন হয়েছে। এখন জাতীয় স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় নির্বাচন জরুরি বলে দাবি করে তিনি বলেন, যত দ্রুত সম্ভব মৌলিক সংস্কার শেষে অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচন দেবে বলে প্রত্যাশা জামায়াতের।
আলোচনাসভায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) প্রেসিডেন্ট ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রম, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না প্রমুখ।
মন্তব্য করুন
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দীন বলেছেন, ‘একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও সুন্দর নির্বাচন আয়োজনে কমিশন প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এবার দিনের ভোট রাতে হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’
সোমবার (০৫ মে) সকালে ভোটার তালিকা হালনাগাদ ও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন মিলনায়তনে ময়মনসিংহ অঞ্চলের নির্বাচন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
এএমএম নাসির উদ্দীন জানান, কোনো রাজনৈতিক বিতর্কে জড়াবে না নির্বাচন কমিশন। যে কোনো সিদ্ধান্ত কমিশনের সকল সদস্য মিলে নেয়া হয়। একক কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয় না।
সিইসি জানায়, ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র ইশরাক হোসেনকে শপথ করানোর দায়িত্ব স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের কিছু করার নেই।
মন্তব্য করুন
বর্তমান রাষ্ট্র কাঠামো ও অর্থনৈতিক কাঠামোর পরিবর্তন দরকার। যেটা রাতারাতি পরিবর্তন সম্ভব নয়। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় এটি সংস্কার করতে হবে। শনিবার (২৬ জুলাই) সকালে রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, গেলো ১৫ বছরে দেশের মানুষের সব স্বপ্নকে গলাটিপে হত্যা করা হয়েছে। অর্থনীতি, গণতন্ত্র ও রাজনীতির কাঠামো পুরোপুরি ধ্বংস করা হয়েছে। জবাবদিহিতার অভাবে রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটপাট করা হয়েছে।
তিনি বলেন, দেশের পুনর্গঠনে সব সমস্যাকে পাশ কাটিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। সবাই মিলে সহযোগিতা করছে বলেই সরকার চলছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিলম্ব না করে অতিদ্রুত গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ফিরে যেতে হবে। যৌক্তিক কারণে নির্বাচন চায় বিএনপি। অর্থনীতি ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে জিয়াউর রহমান বড় পরিবর্তন নিয়ে এসেছেন, যা পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ট্রাম্পের ট্যারিফ আমাদের খুব বিপদে ফেলতে যাচ্ছে। এখান থেকে উত্তরণে বিশেষ করে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা জরুরি।
মন্তব্য করুন
ডেস্ক রিপোর্টঃ
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ নিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের বক্তব্যকে ‘মিথ্যাচার’ এবং ‘শপথ ভঙ্গের শামিল’ বলে মন্তব্য করেছেন অধ্যাপক আসিফ নজরুল, যিনি আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
সোমবার (২১ অক্টোবর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আসিফ নজরুল বলেন, ‘‘রাষ্ট্রপতি যে বলেছেন, তিনি শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র পাননি, এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং শপথ ভঙ্গের শামিল। কারণ, ৫ আগস্ট রাত ১১টা ২০ মিনিটে রাষ্ট্রপতি তিন বাহিনীর প্রধানকে সঙ্গে নিয়ে জাতির উদ্দেশে ভাষণে স্পষ্টভাবে বলেছিলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী তার কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন এবং তিনি তা গ্রহণ করেছেন।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘এরপর রাষ্ট্রপতির দপ্তর থেকে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে পরামর্শ চাওয়া হয়, বর্তমান পরিস্থিতিতে কী করা উচিত। প্রধান বিচারপতিসহ বিচারপতিরা এ বিষয়ে মতামত দেন, যার প্রথম লাইন ছিল, ‘প্রধানমন্ত্রী যেহেতু পদত্যাগ করেছেন...।’ এরপর সুপ্রিম কোর্টের মতামতের ভিত্তিতে মন্ত্রণালয় একটি নোট রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠায়, যা তিনি গ্রহণ করেন এবং তার ভিত্তিতে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করেন।’’
আসিফ নজরুলের মতে, ৫ আগস্টের ভাষণ এবং এর পরবর্তী কার্যক্রম প্রমাণ করে যে শেখ হাসিনা সত্যিই পদত্যাগ করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘এখন প্রায় আড়াই মাস পর রাষ্ট্রপতি যদি বলেন, তিনি পদত্যাগপত্র পাননি, তবে এটি স্ববিরোধী বক্তব্য এবং শপথ ভঙ্গের শামিল। এতে তার রাষ্ট্রপতি পদে থাকার যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। সংবিধানে বলা আছে, যদি রাষ্ট্রপতির শারীরিক বা মানসিক সক্ষমতা না থাকে কিংবা তিনি গুরুতর অসদাচরণ করেন, তবে তার পদে থাকার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে।’’
আসিফ নজরুল আরও বলেন, ‘‘রাষ্ট্রপতির এমন স্ববিরোধী কথা বলার কোনো সুযোগ নেই। তিনি যদি তার বক্তব্যে অটল থাকেন, তবে উপদেষ্টা পরিষদে আলোচনা হবে, রাষ্ট্রপতি হিসেবে তার পদে থাকার যোগ্যতা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’
শনিবার (১৯ অক্টোবর) মানবজমিন পত্রিকার রাজনৈতিক ম্যাগাজিন ‘জনতার চোখ’-এ সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সাক্ষাৎকার প্রকাশ করেন।
‘‘উনি তো কিছুই বলে গেলেন না...’’ শিরোনামে প্রকাশিত লেখায় মতিউর রহমান উল্লেখ করেন, তিনি শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্রের বিষয়ে তিন সপ্তাহ অনুসন্ধান চালান। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে খোঁজ নিয়ে দেখেন, সেখানে কোনো পদত্যাগপত্র জমা নেই। পরে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাৎ করেন।
সাক্ষাতে রাষ্ট্রপতির কাছে জানতে চাইলে, শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র তার কাছে আছে কি না, জবাবে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘‘আমি শুনেছি তিনি পদত্যাগ করেছেন। কিন্তু আমার কাছে কোনো দালিলিক প্রমাণ নেই। অনেক চেষ্টা করেও খুঁজে পাইনি। হয়তো তিনি সময় পাননি।’’
রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, ‘‘৫ আগস্ট সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন থেকে ফোন আসে, বলা হয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গভবনে এসে সাক্ষাৎ করবেন। তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই জানানো হয়, তিনি আসবেন না।’’
তিনি বলেন, ‘‘সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান যখন বঙ্গভবনে এলেন, তখন আমি তার কাছে জানতে চাই, প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন কি না। কিন্তু তিনিও বলেন, শুনেছি তিনি পদত্যাগ করেছেন। এরপর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব পদত্যাগপত্রের কপি সংগ্রহ করতে আসেন। তখন আমি তাকে বলি, আমিও এটি খুঁজে পাইনি।’’
এ ঘটনায় রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ ঘিরে জটিলতা ও বিতর্ক এখনো অব্যাহত রয়েছে।
মন্তব্য করুন
বিস্ফোরক মামলায় জামিন পেয়ে দীর্ঘ ১৬ বছর পর মুক্তি পেয়েছেন ১৬৮ জন বিডিআর সদস্য। বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারসহ বিভিন্ন কারাগার থেকে তাদের মুক্তি দেওয়া হয়।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ৪১ জন, কাশিমপুর-১ কারাগার থেকে ২৬ জন, কাশিমপুর-২ কারাগার থেকে ৮৯ জন এবং কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগার থেকে ১২ জনকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্নেল মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল।
এর আগে গত ২১ জানুয়ারি ঢাকার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মো. ইব্রাহিম মিয়া জামিনপ্রাপ্ত ১৭৮ আসামির নাম প্রকাশ করেন। তাদের মধ্য থেকে ১৬৮ জনের তালিকা হাতে পেয়েই মুক্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করে কারাকর্তৃপক্ষ।
২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় বিডিআর সদর দপ্তরে ঘটে যায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ ঘটনা। বিদ্রোহে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। এ ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি পৃথক মামলা দায়ের হয়।
হত্যা মামলায় ৮৫০ জনের বিচার প্রক্রিয়া শেষ হয় ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর। সেই রায়ে ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ১৬০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পাশাপাশি ২৭৮ জন খালাস পান।
২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায়ে ১৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়। একই সঙ্গে ১৮৫ জনের যাবজ্জীবন সাজা এবং ২২৮ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়। এছাড়া ২৮৩ জন আসামি খালাস পান।
বিস্ফোরক আইনের মামলায় ৮৩৪ জন আসামির বিচার শুরু হয় ২০১০ সালে। কিন্তু মাঝপথে হত্যা মামলার সাক্ষ্য গ্রহণে মনোযোগ দেওয়ার কারণে বিস্ফোরক মামলার কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়।
এদিকে, হাইকোর্টের রায়ের আগে ৫৪ জন আসামির মৃত্যু ঘটে। হত্যা মামলায় দণ্ডিতদের মধ্যে ২২৬ জন আপিল করেছেন। এছাড়া রাষ্ট্রপক্ষ ৮৩ জন আসামির খালাস ও সাজা কমানোর রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছে।
বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনার পুনঃতদন্তের দাবি জানিয়ে শহিদ পরিবারের সদস্যরা গত ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যান। এর পরিপ্রেক্ষিতে, সরকার আল ম ফজলুর রহমানকে প্রধান করে একটি কমিশন গঠন করে। তাদের ৯০ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
দীর্ঘ বিচারপ্রক্রিয়ার পর ১৬৮ বিডিআর সদস্যের মুক্তি নতুন করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছে। এই ঘটনা পিলখানা বিদ্রোহের ক্ষত আবারও উন্মোচন করেছে।
মন্তব্য করুন
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ২৪-এর গণ-অভ্যুত্থান কেবল একটি দলকে সরিয়ে আরেকটি দলকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য হয়নি। বরং এটি ছিল জনগণের অধিকার রক্ষা ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) সকালে সংসদ ভবনের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে এক বৈঠকে সূচনা বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, "মৌলিক ও গঠনমূলক সংস্কার করে জনগণের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের লক্ষ্য এমন একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তোলা, যেখানে সংবিধান, প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা, বিচারব্যবস্থা ও নির্বাচনী প্রক্রিয়া সবার জন্য সমান ও স্বচ্ছ হবে।"
তিনি আরও যোগ করেন, "জুলাই সনদ জাতির সামনে স্পষ্টভাবে তুলে ধরতে হবে। এটি আমাদের অঙ্গীকার, এবং এ অঙ্গীকার রক্ষা করতে হবে। যাতে দেশে আর কখনও স্বৈরতন্ত্র বা ফ্যাসিবাদের উত্থান না ঘটে, সে জন্য সব ধরনের নিষ্ক্রিয়তা ও পথ বন্ধ করে এগিয়ে যেতে হবে। আমরা একটি প্রকৃত গণতান্ত্রিক সংবিধান চাই।"
এনসিপির পক্ষ থেকে এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দলের সদস্য সচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরউদ্দিন পাটোয়ারী, যুগ্ম আহ্বায়ক সরোয়ার তুষার, মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন প্রমুখ।
এর আগে, গত বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকারের নেতৃত্বে একটি পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদল জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করে।
মন্তব্য করুন
স্টাফ রিপোর্টার:
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে স্বজনদের প্রার্থী দাঁড় করানোর বিষয়ে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের ফের নিরুৎসাহিত করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেছেন, “আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মীর পরিবার দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করছেন। তারা আগে নির্বাচন করেছেন। কেউ ইউনিয়ন চেয়ারম্যান, কেউ উপজেলা চেয়ারম্যান। তাদের তো রাজনৈতিক জীবনী আছে। তাদেরকে মানা করি কী করে? “তবে এটা ঠিক, এক জায়গায় বউকে দিল, আরেক জায়গায় ছেলেকে দিল, এগুলো ঠিক না। কর্মীদের মূল্যায়ন করা উচিত। সেটাই নেতাকর্মীদেরকে বলতে চেয়েছি।”
দেশের মোট ৪৯৫ উপজেলার মধ্যে নির্বাচন উপযোগী ৪৮৫ উপজেলায় এবার চার ধাপে ভোট হচ্ছে এবার। পরে মেয়াদোত্তীর্ণ হলে বাকিগুলোয় ভোটের আয়োজন করবে নির্বাচন কমিশন। প্রথমধাপের ১৫০ উপজেলায় ভোট হবে ৮ মে।
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে প্রভাবমুক্ত রাখতে আওয়ামী লীগের এমপি-মন্ত্রীদের আত্মীয়-স্বজনদের প্রার্থী হতে নিষেধ করেছেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা। দলীয় কোন্দল নিরসন এবং নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক করতেই এ সিদ্ধান্ত বলে আওয়ামী লীগের ভাষ্য।
বৃহস্পতিবার থাইল্যান্ড সফরের অভিজ্ঞতা জানাতে গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে এসে আবারো সেই বিষয়টি মনে করিয়ে দিলেন আওয়ামী লগী সভানেত্রী।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “পারিবারিক ফর্মুলা কী? নিজের ছেলে মেয়ে স্ত্রী, এই তো। তারপর হিসাব করে দেখেন কয়জন ছেলেমেয়ে, কয়জন স্ত্রী দাঁড়িয়েছে। এর বাহিরে তো পরিবার ধরা হয় না। আমাদের কথা হচ্ছে নির্বাচন যেন প্রভাবমুক্ত হয়। মানুষ যেন স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারে, আমাদের লক্ষ্য।
“সবকিছু নিজেরা নিয়ে নেব, আমার নেতাকর্মীদের জন্য কিছু রাখব না, এটা হয় না। সেই কথাটা আমি বলতে চেয়েছি। সবাই দাঁড়িয়েছে, নির্বাচন করছে, সেটার লক্ষ্য হল নির্বাচনকে অর্থবহ করা।”
জাতীয় নির্বাচনের মত এবারের উপজেলা নির্বাচনও বর্জন করেছে বিএনপি ও সমমনারা। ক্ষমতাসীন দল স্থানীয় সরকারের এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার আবহ তৈরি করতে দলীয় প্রার্থী না দেওয়া এমনকি কাউকে সমর্থন না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
অন্য দলগুলোর নির্বাচন বর্জনের প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “অনেকগুলো রাজনৈতিক দল নির্বাচন বর্জন করেছে। বর্জন করে কেন? নির্বাচন করার মত সক্ষমতাই নাই। পার্লামেন্ট নির্বাচন করতে হলে জাতিকে দেখাতে হবে যে পরবর্তী নেতৃত্ব কে আসবে, প্রধানমন্ত্রী কে হবে, নেতা কে হবে? একটা নেতা দেখাতে হবে।
“আপনার কাছে উপযুক্ত নেতা না থাকলে তখন তো আপনাকে ছুতা খুঁজতে হয়। নির্বাচন করলাম না, বিরাট ব্যাপার দেখালাম। বাস্তবতা সেটাই। আমাদের দেশে সেটাই হচ্ছে। কারণ সাধারণত আসামিকে দেখালে পাবলিক তো সেটা নিবে না।”
মন্তব্য করুন
দেশ থেকে পাচার হওয়া কয়েকশ কোটি ডলার এ বছরের মধ্যেই ফিরিয়ে আনা সম্ভব বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। আজ মঙ্গলবার (১১ মার্চ) সকালে সচিবালয়ে ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে তিনি এ কথা জানান।
এক প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, "আমরা চেষ্টা করছি, বিশাল অংকের টাকা। সব টাকা আনতে সময় লাগবে। তাদের শনাক্ত করতে হবে। পাচারের সঙ্গে জড়িতরা বিভিন্ন দেশে আছেন। এখানে কতগুলো আইনের পদক্ষেপও রয়েছে, আবার সে আইনের পদক্ষেপগুলো বিদেশের সঙ্গেও জড়িত। এ জন্য একটি বিশেষ আইন করার উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার, শিগগিরই যা অধ্যাদেশ আকারে জারি হবে।"
সরকার কয়েকশ কোটি ডলার ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে। এটা কি সম্ভব? এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, "হ্যাঁ, এটা সম্ভব। অনেক সময় দেখা যায় ১১-১২ জন দিয়েছে, ২০০ কোটি টাকার ওপরে অনেকের শনাক্ত করা হয়েছে। সব মিলিয়ে হয়তো আমরা আনতে পারব।"
মন্তব্য করুন