ডেস্ক রিপোর্ট:
বঙ্গবন্ধুসহ পরিবারের সদস্যদের হত্যাকাণ্ডের ছয় বছর পর তার কন্যা শেখ হাসিনা দেশে ফিরলে জিয়াউর রহমান তাকে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের পৈতৃক বাড়িতে ঢুকতে দেননি।কিন্তু তাকে গাড়ি-বাড়ি দিতে চেয়েছিলেন। সেই প্রস্তাব তিনি প্রত্যাখ্যান করেছেন। আজ শুক্রবার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে গণভবনে দেশে ফেরার ঘটনাপ্রবাহের স্মৃতিচারণে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
১৯৮১ সালের ১৭ মে স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের স্মৃতিচারণ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ঝড়-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে সেদিন সাধারণ মানুষ সেখানে গিয়েছিল। মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে বক্তব্য রাখলাম, সব থেকে বড় কথা হলো, আমি যখন যাই, তখন কামাল, জামাল, রোজি, খুকি সবাই বিমানবন্দরে ছিল। আমি যখন ফিরে আসলাম, হাজার হাজার মানুষ, কিন্তু আমি পেলাম বনানীতে সারি সারি কবর।’
তিনি বলেন, ‘৩২ নম্বরে আমরা মিলাদ পড়তে চাইলাম, আমাকে ঢুকতে দেয়নি জিয়াউর রহমান। উল্টো বলেছিল বাড়ি দেবে, গাড়ি দেবে, সব দেবে। বলেছিলাম, তার কাছ থেকে কিছু নেব না। খুনির কাছ থেকে আমি কিছু নিতে পারি না।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি যখন দিল্লিতে ছিলাম, সেখানে গিয়ে জিয়াউর রহমান আমার সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিল। তার স্ত্রীও দেখা করতে চেয়েছিল, আমি দেখা করি নাই। লন্ডনে যখন, তখনও দেখা করতে চেয়েছিল, আমরা দেখা করিনি। আমি যখন আসলাম ৩২ নম্বরে ঢুকতে দেবে না, উল্টো বাড়ি-গাড়ি সাধবে, সেটা তো আমার কাছে গ্রহণযোগ্য না।’
দেশে ফিরে কোথায় উঠবেন, থাকবেন সেটা জানতেন না উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘শুধু আমার পরার কাপড়-চোপড়, দুটো স্যুটকেস ও পুতুলকে (মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল) নিয়ে আমি চলে এসেছি। তারপর এই যাত্রা শুরু। আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতাকর্মী ও দলকে গোছানোর চেষ্টা করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নেই, কিন্তু অন্তত এইটুকু বলতে পারি, তার বাংলাদেশ কিছুটা হলেও যে আকাঙ্ক্ষা নিয়ে স্বাধীন করেছিলেন এবং যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে দেশ স্বাধীন করেছিলেন, কিছুটা হলেও সেটা আমরা বাস্তবায়ন করতে পেরেছি।’
তার নির্বাসিত সময়, দেশে ফেরার পরের পরিস্থিতি এবং আওয়ামী লীগ সংগঠন গোছানোর বিষয়গুলোর উল্লেখ করে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘সেদিন ফিরে এসেছিলাম। এত বড় দল পরিচালনা করার অভিজ্ঞতা ছিল না, ছাত্রলীগ করার সময় নেতা হওয়ার চেষ্টা করি নাই। দলের প্রয়োজনে যে দায়িত্ব দিয়েছে, সেটাই পালন করেছি। কিন্তু যখন এ দায়িত্ব (আওয়ামী লীগ সভাপতি) পেলাম, এটা বড় দায়িত্ব।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সবচেয়ে শক্তিশালী বড় সংগঠন। জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য দল আওয়ামী লীগ। প্রতিবার চক্রান্ত হয়, সেটা মোকাবিলা করে আমরা বেরিয়ে আসি। আমাদের তা ধরে রাখতে হবে। বাংলাদেশের মানুষ রক্ত দিয়ে যে অধিকারগুলো আদায় করেছিল, সেটা আমরা সমুন্নত করতে পেরেছি। কিন্তু আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘কী পেলাম, না পেলাম, সেই চিন্তা করিনি। ভবিষ্যৎ কী, সেই চিন্তাও করি না। চিন্তা করি দেশের মানুষের ভবিষ্যৎটা আরও সুন্দরভাবে গড়ে তুলে দিয়ে যাব। সেটাই আমাদের লক্ষ্য।’
দলীয় নেতাদের তিনি বলেন, ‘এটাই মনে রাখবেন, একটা দল করি শুধু নেতা হওয়া না, মানুষের জন্য কতটুকু করতে পারলাম, কী দিতে পারলাম, কী দিয়ে গেলাম, এটাই রাজনৈতিক মানুষের জীবনের বড় কথা। এই কথাটা মাথায় রাখতে পারলে দেশের মানুষের জন্য অনেক কিছুই করা যেতে পারে।’
সংগঠনকে শক্তিশালী করার তাগিদ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আর যেন যুদ্ধাপরাধী, খুনিরা বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে, এই ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে, বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে হবে।’
১৯৭৫-পরবর্তী যুদ্ধাপরাধীরা মন্ত্রী-এমপি-উপদেষ্টা হয়েছিল উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ যারা করছেন তারাই অপরাধী হয়ে গেল। যারা বিরোধিতা করেছিল, গণহত্যা করেছিল, তারাই ক্ষমতায়। ওই অবস্থায় দেশে ফিরেছিলাম। আমার তো কিছুই ছিল না। একটা বিশ্বাস ছিল, দেশের জনগণ ও আওয়ামী লীগের অগণিত নেতাকর্মী। এরপর লড়াই-সংগ্রাম করে এইটুকু বলতে পারি, পঞ্চমবারের মতো আওয়ামী লীগ ক্ষমতা এসেছে।’
আজকের বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মানুষের যদি রাজনৈতিক চিন্তা-চেতনা না থাকে, দেশপ্রেম না থাকে, সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় না থাকে, তাহলে সেটা এগোতে পারে না। পঁচাত্তরে যারা ক্ষমতায় ছিল, তারা নিজেদের ক্ষমতা কুক্ষিগত করার চেষ্টা করেছিল, দেশের কোনো উন্নতি করতে পারেনি। আজকে আমরা বলতে পারি, দেশটা বদলে যাওয়া, বদলাতে পেরেছি। সামনে আরও বদলাতে হবে। কারণ আমার বাবার একটাই স্বপ্ন ছিল, দেশটাকে গড়ার। আমাদের পরিকল্পনা সেটাই আছে।’
আওয়ামী লীগের সংগ্রামের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা, কারফিউ, প্রতি রাতে মার্শাল ল, দেশের মানুষের কোনো আশা নেই, শুধু হতাশা। এই হতাশ জাতিকে টেনে তোলা যায় না। তাদের মাঝে আশার আলো জাগাতে হয়, ভবিষ্যৎ দেখাতে হয়, উন্নত জীবনের চিত্র তুলে ধরতে হয়। তবেই মানুষকে নিয়ে কাজ করা যায়। আমরা সেটাই করার চেষ্টা করছি।’
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের আগে বিদেশে যাওয়ার ঘটনা বর্ণনা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আশা করেছিলাম আমরা খুব তাড়াতাড়ি ফিরে আসব। কিন্তু সেই ফিরে আসা আর হয়নি।’
আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি জানতাম না যে, আমাকে এত বড় একটা দায়িত্ব দেওয়া হবে। আমি কখনো এটা ভাবতে পারিনি।’
মন্তব্য করুন
আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধানে গঠিত তদন্ত কমিশনের মেয়াদ আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
১৫ মার্চ থেকে কমিশনের মেয়াদ আরও সাড়ে তিন মাস বাড়িয়ে সোমবার (১৭ মার্চ) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময়ের মধ্যে গুমের ঘটনা তদন্তের জন্য গত ২৭ আগস্ট সরকার এই কমিশন গঠন করে। পরে ১৫ সেপ্টেম্বর কমিশনের দায়িত্ব ও প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সময়সীমা সংশোধন করা হয়।
পাঁচ সদস্যের এই কমিশনের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী।
তদন্ত সম্পন্ন করে তিন মাসের মধ্যে সরকারের কাছে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা ছিল কমিশনের। তবে পরে সময়সীমা বাড়ানো হয়, যা গত ১৪ মার্চ শেষ হয়।
এই তদন্ত কমিশনের মূল দায়িত্ব হলো ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময়ের মধ্যে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা, তদন্ত সংস্থা এবং অনুরূপ কোনো বাহিনী বা সংস্থার সদস্য বা সরকারের মদদে, সহায়তায় বা সম্মতিতে কোনো ব্যক্তি বা ব্যক্তি-সমষ্টির 'আয়না ঘর' বা অন্য কোনো জ্ঞাত বা অজ্ঞাত স্থানে বলপূর্বক গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধান করা, তাদের শনাক্ত করা এবং কোন পরিস্থিতিতে গুম হয়েছিল তা নির্ধারণ করা। এছাড়াও, গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যসহ যে কোনো ব্যক্তি, সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করাও কমিশনের কাজের অন্তর্ভুক্ত।
মন্তব্য করুন
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর নিজের কাজে ফিরে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) ব্রিটিশ সাময়িকী ‘দ্য ইকোনমিস্ট’-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন।
প্রতিবছরের মতো এবারও বর্ষসেরা দেশ নির্বাচন করেছে ‘দ্য ইকোনমিস্ট’। ২০২৪ সালের বর্ষসেরা দেশ হিসেবে বাংলাদেশের নাম ঘোষণা করেছে আন্তর্জাতিক এই গণমাধ্যম। এই উপলক্ষে সাক্ষাৎকারটি নেওয়া হয়।
নির্বাচন আয়োজনের পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ভবিষ্যত পরিকল্পনা জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আসলে আমার চাকরি কেড়ে নেওয়া হয়েছে। আমাকে জোর করে এ কাজে আনা হয়েছে। আমি আমার পূর্বের কাজ উপভোগ করছিলাম, তাই প্যারিসে ছিলাম। সেখান থেকে অন্য কিছু করার জন্য আমাকে টেনে আনা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমি আমার নিয়মিত কাজে ফিরে যেতে পারলে খুশি হব। যা আমি সারা জীবন ধরে করেছি এবং তরুণরা এটিকে ভালোবাসে। সুতরাং আমি আমার সেই দলে বা কার্যক্রমে ফিরে যাব, যা আমি সারা বিশ্বে তৈরি করেছি।
নির্বাচনের পর নিজের কাজে ফিরে যাব : প্রধান উপদেষ্টা ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলন / সমবায়ী শিক্ষা প্রবর্তনের প্রস্তাব ড. ইউনূসের সাক্ষাৎকারে বর্তমান বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়েও কথা হয়। জঙ্গিবাদের ঝুঁকি সংক্রান্ত এক প্রশ্নে তিনি বলেন, বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দেবে না; এটি আমি আশ্বস্ত করছি। তরুণরা ধর্ম নিয়ে নিরপেক্ষ। তারা নতুন বাংলাদেশ গড়তে চায়। এই তরুণরা পুরো বিশ্ব পরিবর্তন করতে পারে। এটি শুধু এক দেশ বা আরেকটি দেশ পরিবর্তনের বিষয় নয়। বাংলাদেশ যা করেছে তা একটি উদাহরণ, যে তরুণরা কত শক্তিশালী। আমাদের উচিত তাদের প্রতি মনোযোগ দেওয়া, বিশেষ করে তরুণীদের ওপর। তারা বাংলাদেশের অভ্যুত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আমাদের উচিত তরুণ-তরুণীদের ওপর মনোযোগ দেওয়া, যাতে তারা নিজেদের স্বপ্ন পূরণ করতে পারে। তাদের সুযোগ এসেছে এবং সক্ষমতা রয়েছে। অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তিন তরুণ আমার ক্যাবিনেটে আছেন। তারা দুর্দান্ত কাজ করছে এবং সক্ষম। এই তরুণরা গত শতাব্দীর তরুণ নয়; তারা এই শতাব্দীর তরুণ। তারা অন্যান্যদের মতোই সক্ষম।
প্রসঙ্গত, বর্ষসেরা দেশ হিসেবে বাংলাদেশের নাম ঘোষণার কারণ হিসেবে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ‘দ্য ইকোনমিস্ট’ বলেছে, সেরা দেশ বেছে নেওয়া হয় আগের ১২ মাসে সবচেয়ে বেশি উন্নতি করেছে এমন দেশকে। তারা আরও উল্লেখ করেছে, বাংলাদেশে সবচেয়ে ধনী, সুখী বা নৈতিকভাবে শ্রেষ্ঠ দেশ হিসেবে বিবেচিত না হলেও, তা নির্বাচিত হয়েছে উল্লেখযোগ্য উন্নতির ভিত্তিতে।
এবারের সেরা দেশ বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে চূড়ান্ত তালিকায় ছিল পাঁচটি দেশ। বাংলাদেশ ছাড়াও সিরিয়া, আর্জেন্টিনা, দক্ষিণ আফ্রিকা ও পোল্যান্ড ছিল এই তালিকায়। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশকেই বেছে নেওয়া হয়।
বাংলাদেশ সম্পর্কে ‘ইকোনমিস্ট’-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই দেশের সাম্প্রতিক বিজয় দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এখানে ছাত্রদের নেতৃত্বে একটি স্বৈরশাসককে উৎখাত করা হয়েছে। আগস্টে ছাত্ররা রাজপথে আন্দোলন করে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করে, যিনি ১৫ বছর ধরে দেশটি শাসন করছিলেন। এর আগে তিনি এক সময় দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, কিন্তু পরবর্তীতে তার শাসনামলে দমনপীড়ন, নির্বাচন কারচুপি এবং বিরোধীদের বিরুদ্ধে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছিল।
প্রতিবেদনটি আরও বলেছে, বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবদলের সময় সাধারণত সহিংসতার ঘটনা ঘটে। তবে, শান্তিতে নোবেল পুরস্কার জয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে সেখানে একটি অস্থায়ী সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, যেটি ছাত্র, সেনাবাহিনী, ব্যবসায়ী ও নাগরিক সমাজের সমর্থন পেয়েছে। এই সরকার শৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছে এবং দেশের অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করেছে। ২০২৫ সালে এই সরকারকে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং নির্বাচন আয়োজনের সময়সূচি নির্ধারণ করতে হবে। এছাড়া, এটি নিশ্চিত করতে হবে যে দেশের আদালত নিরপেক্ষভাবে কাজ করছে এবং বিরোধী দলগুলোকে সংগঠিত হওয়ার সময় দেওয়া হয়েছে। এসব বিষয়ে বাস্তবায়ন কঠিন হবে, কিন্তু তা দেশের ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
মন্তব্য করুন
দুঃখে-কষ্টে, বিপদে-সংকটে যে মানুষটি স্নেহের পরশ বিছিয়ে দেন, তিনি হচ্ছেন আমাদের সবচেয়ে আপনজন, মা। প্রতিটি মানুষের পৃথিবীতে আসা এবং বেড়ে ওঠার পেছনে প্রধান ভূমিকা একমাত্র মায়ের। মায়ের তুলনা অন্য কারো সঙ্গে চলে না। মায়ের সঙ্গে সন্তানের নাড়ির সম্পর্ক, যা একটু আঘাত পেলেই প্রতিটি মানুষ ‘মা’ বলে চিৎকার দিয়ে জানান দিয়ে থাকে।
ইসলামে মায়ের মর্যাদা সবার উপরে। এ ব্যাপারে মহান আল্লাহ কোরআনে বলেন, ‘আমি মানুষকে তার মা-বাবার সঙ্গে (সদাচরণের) নির্দেশ দিয়েছি। তার মা কষ্টের পর কষ্ট ভোগ করে তাকে গর্ভে ধারণ করে। আর তার দুধ ছাড়ানো হয় দুই বছরে; সুতরাং আমার শুকরিয়া ও তোমার মা-বাবার শুকরিয়া আদায় করো।’ (সুরা লুকমান, আয়াত : ১৪)
একদিন মুয়াবিয়া ইবনে জাহিমা আসসালামি (রা.) রাসুল (সা.)-এর খেদমতে হাজির হয়ে বলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আমি জিহাদ করতে ইচ্ছুক। এ ব্যাপারে আপনার পরামর্শ কী?’ জবাবে রাসুল (সা.) বলেন, তোমার মা আছেন? তিনি বলেন, আছেন। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘মায়ের সেবায় নিয়োজিত থাকো, কেননা তাঁর পায়ের নিচেই জান্নাত।’
একবার এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে এসে জিজ্ঞাসা করল, হে আল্লাহর রাসুল! আমার কাছে কে উত্তম ব্যবহার পাওয়ার বেশি হকদার? তিনি বলেন, মা। লোকটি বলল, তারপর কে? তিনি বলেন, তোমার মা। সে বলল, তারপর কে? তিনি বলেন, তোমার মা। সে বলল, তারপর কে? তিনি বলেন, তোমার বাবা। (বুখারি ও মুসলিম ৪৫৮০)
আনাস ইবনে মালিক (রা.) বর্ণনা করেন, জনৈক ব্যক্তি রাসুল (সা.) এর নিকট এসে বললো, আমি জিহাদে-সংগ্রামে অংশ নিতে চাই, কিন্তু আমার সেই সামর্থ্য ও সক্ষমতা নেই। তখন রাসুল (সা.) তাকে জিজ্ঞেস করেন, ‘তোমার মাতা-পিতার কেউ কি জীবিত আছেন?’ লোকটি বলল, আমার মা জীবিত। তখন রাসুল (সা.) বললেন, ‘তাহলে মায়ের সেবা করে আল্লাহর নিকট যুদ্ধ-সংগ্রামে যেতে না পারার অপারগতা পেশ কর। এভাবে যদি করতে পার এবং তোমার মা সন্তুষ্ট থাকেন তবে তুমি হজ, ওমরাহ এবং যুদ্ধ-সংগ্রামের সওয়াব পেয়ে যাবে। সুতরাং আল্লাহকে ভয় করো এবং মায়ের সেবা করো।’ (মাজমাউজ জাওয়াইদ, হাদিস : ১৩৩৯৯)
মন্তব্য করুন
সরকারি কর্মচারীদের সম্পদ বিবরণী দাখিলের সময়সীমা আরও এক দফা বাড়িয়ে আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একটি বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, সরকারি কর্মচারীদের সম্পদ বিবরণীর তথ্য সিলগালাকৃত খামে কর্তৃপক্ষের নিকট দাখিল করার সময়সীমা ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
জানা গেছে, নতুন সরকার গঠনের পর সরকারি প্রায় ১৫ লাখ কর্মচারীর সম্পদের হিসাব জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়। প্রথম দফায় ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত এই হিসাব জমা দেওয়ার সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছিল। পরে তা বাড়িয়ে ৩১ ডিসেম্বর করা হয়। এবার আরও এক দফা সময় বাড়ানো হলো।
মন্তব্য করুন
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
লেবাননের রাজনৈতিক ও সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর প্রধান হিসেবে শেখ নাঈম কাসেমের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। গোষ্ঠীটির ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে ইরান সমর্থিত গোষ্ঠীটির শীর্ষ নেতা হিসেবে রয়েছেন।
আজ মঙ্গলবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, হাসান নাসরাল্লাহর স্থলাভিষিক্ত হতে যাচ্ছেন শেখ নাঈম কাসেম। হেজবুল্লাহর যে অল্প কয়েকজন নেতা এখন জীবিত আছেন, তিনি তাদের একজন।
গত ২৭ সেপ্টেম্বর লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত হন হাসান নাসরাল্লাহ। শিয়া ধর্মগুরু হাসান নাসরাল্লাহ ১৯৯২ সাল থেকে হেজবুল্লাহর নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন। পরে তার সম্ভাব্য উত্তরসূরি হাশেম সাফিএদ্দিন বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলের একটি শহরতলীতে বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন বলে জানায় ইসরায়েলি ডিফেন্স ফোর্স বা আইডিএফ।
১৯৮০-এর দশকের গোড়ার দিকে ইসরায়েলের বিরোধিতা করার জন্য এই অঞ্চলের সবচেয়ে প্রভাবশালী শিয়া শক্তি হেজবুল্লাহ প্রতিষ্ঠা করেছিল ইরান। তখন দেশটির গৃহযুদ্ধের সময় ইসরায়েলি বাহিনী দক্ষিণ লেবানন দখল করেছিল।
হেজবুল্লাহ বিশ্বের সবচেয়ে ভারী অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত অরাষ্ট্রীয় সামরিক বাহিনীর একটি, যেটিকে অর্থায়ন করেছে ইরান। হেজবুল্লাহর বিমান বিধ্বংসী ও জাহাজ বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রের পাশাপাশি ইসরায়েলের গভীরে আঘাত হানতে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে বলেও মনে করা হয়।
মন্তব্য করুন
নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, "হয়তো আমরা আর বেশি দিন নেই। এরপর নির্বাচন হবে। চোরদের আর নির্বাচিত করবেন না। দয়া করে চোরদের ভোট দেবেন না।"
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সকালে ভোলার মনপুরা উপজেলার বিচ্ছিন্ন ঢালচরে নতুন লঞ্চঘাট উদ্বোধনের সময় তিনি এসব কথা বলেন।
এ উপলক্ষে আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. সাখাওয়াত আরও বলেন, "আপনারা সব দেখেছেন, সব জানেন। একজন ভালো মানুষকে নির্বাচিত করুন। যারা নিঃস্বার্থভাবে আপনাদের জন্য কাজ করে, তাদের ভোট দিন। বিগত সরকারের সময়ে বড় বড় প্রকল্প দেওয়া হলেও প্রত্যন্ত অঞ্চলে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। শুধু শহরের উন্নয়ন নয়, গ্রামের উন্নয়ন হলেই দেশ উন্নত হয়। বর্তমান সরকার বৈষম্যবিরোধী এবং গ্রামীণ সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে তা সমাধানে কাজ করছে। নদীপথের যোগাযোগ আরও সহজ করতে নতুন নতুন লঞ্চঘাট স্থাপন করা হবে।"
তিনি আরও বলেন, "ভোলা জেলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ মনপুরা চারপাশে নদীবেষ্টিত। এখান থেকে ঢাকায় যাওয়ার একমাত্র মাধ্যম লঞ্চ। নৌ-যোগাযোগ আরও সহজ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এছাড়া মনপুরার সঙ্গে জেলা শহরের সড়ক যোগাযোগ স্থাপনের জন্য পর্যায়ক্রমে ফেরি চালুর ব্যবস্থাও করা হবে।"
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক জ্বালানি সচিব মো. নাজিম উদ্দিন চৌধুরী, নৌ-পরিবহন উপদেষ্টার একান্ত সচিব মো. জাহিদুল ইসলাম, বিআইডব্লিউটিএ'র চেয়ারম্যান আরিফ আহমেদ মোস্তফা এবং বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নির্বাহী মো. নিজাম উদ্দিন সুজন চৌধুরী।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সভাপতি ও উপজেলা বিএনপি সভাপতি আলহাজ্ব সামস উদ্দিন বাচ্চু চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মাহবুবুল আলম শাহীন, উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর মাওলানা আমিমুল ইহসান জসিম, প্রেসক্লাব সভাপতি মো. অহিদুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক সীমান্ত হেলালসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
মন্তব্য করুন
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, চলতি বছরের শেষ দিকে বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। তিনি আরও মন্তব্য করেছেন যে এই নির্বাচনে নির্বাচিত সরকার একটি অত্যন্ত নিরাপদ ও শক্তিশালী ভিত্তি পাবে।
বুধবার জাপানের ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন (এনএইচকে)-কে দেওয়া একটি বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা জানান।
ইউনূস বলেন, "যখন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, তখন নতুন নির্বাচিত সরকারের কাজ করার জন্য একটি খুবই নিরাপদ ও সঠিক ভিত্তি থাকবে।"
প্রধান উপদেষ্টা আশা প্রকাশ করেন যে দেশের তরুণরা ভবিষ্যতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। গত বছরের আন্দোলনে তরুণরা ইতিমধ্যেই তাদের প্রভাবশালী ভূমিকা প্রদর্শন করেছে।
ড. ইউনূস বলেন, "তরুণরা তাদের সৃজনশীল শক্তি প্রদর্শন করে বিশ্বকে জানাতে চায়। আমাদের মধ্যে সেই উচ্চাকাঙ্ক্ষা রয়েছে এবং দেখা যাক আমরা কীভাবে এগিয়ে যাই।"
অভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণ করা নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ড. ইউনূস নিশ্চিত করতে চান যে বাংলাদেশ তার নিজ পায়ে দাঁড়াবে এবং শক্তিশালী হয়ে উঠবে।
তিনি বলেন, "আমরা যখন দায়িত্ব নিই, তখনকার পরিস্থিতি বিবেচনা করলে আমি মনে করি আমরা অনেক দূর এগিয়েছি। কারণ তখন একটি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত সমাজ, বিধ্বস্ত অর্থনীতি, বিধ্বস্ত রাজনৈতিক ব্যবস্থা এবং বিচার ব্যবস্থা ছিল।"
জাতীয় নির্বাচন একটি গণতান্ত্রিক জাতি গঠনের জন্য অপরিহার্য অংশ। তিনি এই বছরের শেষের দিকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে এমন প্রাথমিক সময়সীমা উল্লেখ করেছেন।
তিনি বাংলাদেশের বৃহত্তম উন্নয়নশীল অংশীদার জাপানের প্রতি কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, জাপানের প্রযুক্তি ও বিনিয়োগ তরুণ বাংলাদেশিদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে।
মন্তব্য করুন
সরকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা এবং সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনার লক্ষ্যে শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) থেকে গাজীপুরসহ সারাদেশে যৌথবাহিনীর সমন্বয়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ শুরু করতে যাচ্ছে।
শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে গাজীপুরে ছাত্র-জনতার ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলোর সমন্বয়ে এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় এই অভিযান শুরুর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শনিবার থেকেই গাজীপুরসহ সারাদেশে এই বিশেষ অভিযান শুরু হবে। ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য আগামীকাল প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে জানানো হবে।
উল্লেখ্য, শুক্রবার রাতে পতিত স্বৈরাচারের সমর্থক সন্ত্রাসীদের হামলায় কয়েকজন গুরুতর আহত হন। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সরকার কঠোর অবস্থান নিয়েছে এবং সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযান শুরু করতে যাচ্ছে।
মন্তব্য করুন
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী জানিয়েছেন, সড়ক ও মহাসড়কগুলোতে ছিনতাই রোধ করতে ট্রাফিক সার্জেন্টদের ‘স্মল আর্মস’ (হালকা বা ছোট অস্ত্র) প্রদানের প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর উত্তরার আজমপুর কাঁচাবাজার (বিডিআর মার্কেট) এলাকায় ঢাকা মহানগরীতে কাউন্টার ও ই-টিকিটিং পদ্ধতিতে বাস চলাচলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘যাত্রীদের সেবার মানোন্নয়ন এবং সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে কাউন্টার সিস্টেম চালু করা হয়েছে। চালক-মালিকসহ যাত্রীদেরও সচেতন হতে হবে। প্রয়োজনে ট্রাফিক পুলিশের কাছে অভিযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হলো।’
এছাড়া, শর্তসাপেক্ষে চালকদের নিয়োগপত্র প্রদানের জন্য মালিকপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
সাজ্জাত আলী আরও বলেন, ‘বিভিন্ন এলাকায় প্রকাশ্যে ছিনতাইয়ের ঘটনা আমার নজরে এসেছে। আমাদের লোকবল সীমিত। অনেক সময় ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্যরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারেন না। এ কারণে তাদের ‘স্মল আর্মস’ বা হালকা অস্ত্র দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’
তিনি উল্লেখ করেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে ছিনতাই বেড়ে যাওয়ার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ব্যাপক ধরপাকড়ের মাধ্যমে অসংখ্য ছিনতাইকারীকে আটক করা হয়েছে। ফলে গত ১৫ দিন ধরে ছিনতাইয়ের ঘটনা আগের তুলনায় উল্লেখযোগ্য হারে কমে এসেছে। আমাদের এই কার্যক্রম কঠোরভাবে অব্যাহত থাকবে।’
ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে হামলা ও ভাঙচুরের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেছি। গভীর রাত পর্যন্ত আমি নিজে সেখানে থেকে প্রতিবেদন সংগ্রহ করেছি।’
মন্তব্য করুন
ডেস্ক রিপোর্টঃ
ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের ধলেশ্বরী টোল প্লাজায় বেপরোয়া গতির বাসের ধাক্কায় একই পরিবারের ৪ জনসহ মোট ৬ জন নিহত হয়েছে।এই ঘটনায় ঘাতক বাসটির চালক মোহাম্মদ নুরুদ্দিনকে গ্রেফতার করেছে এলিট ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) বিকেলে র্যাব সদরদপ্তরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে ধলেশ্বরী টোল প্লাজায় যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় ঘাতক বাসটির চালক মোহাম্মদ নুরুদ্দিনকে শুক্রবার রাতে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
লে. কর্নেল মুনীম ফেরদৌস আরও বলেন, দুর্ঘটনার পর বাসচালক আত্মগোপনে সিদ্ধিরগঞ্জ লুকিয়ে ছিলেন। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
গতকাল শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের ধলেশ্বরী টোল প্লাজায় দাঁড়িয়ে থাকা ৩ টি গাড়িতে ধাক্কা দেয় যাত্রীবাহী একটি বাস। এতে একই পরিবারের ৪ জনসহ দুটি গাড়ির ৬ আরোহী নিহত ও ৪ জন আহত হন। দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থলেই ৫ জন ও বিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও একজন মারা যান।
নিহতরা হলেন- মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার নন্দনকোনা গ্রামের বাসিন্দা ও দুর্ঘটনাকবলিত প্রাইভেটকারের মালিক নুর আলমের স্ত্রী আমেনা আক্তার (৪০), তার বড় মেয়ে ইসরাত জাহান (২৪), ছোট মেয়ে রিহা মনি (১১), ইসরাত জাহানের ছেলে আইয়াজ হোসেন (২), মোটরসাইকেলের চালক সুমন মিয়ার স্ত্রী রেশমা আক্তার (২৬) ও তার ছেলে মো. আবদুল্লাহ (৭)।
আহত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন প্রাইভেটকারের মালিক নুর আলম (৪২), তার বোন ফাহমিদা আক্তার (১৭), প্রাইভেটকারের চালক হাবিবুর রহমান (৩৮) ও মোটরসাইকেলের চালক সুমন মিয়া (৪২)।
শুক্রবার দুর্ঘটনার পর পুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয় আহত ব্যক্তিদের।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, দুর্ঘটনায় ১০ জনকে এ হাসপাতালে নেওয়া হয়। এর মধ্যে ৫ জন হাসপাতালে নেওয়ার আগেই মারা যান। আহত ৫ জনের মধ্যে ৩ জনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। ২ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বাকি ৩ জনের মধ্যে গুরুতর আহত রেশমাকে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) পাঠানো হয়েছিল। পরে তারা জানতে পারেন, শুক্রবার বিকেলে সেখানে রেশমার মৃত্যু হয়।
মন্তব্য করুন